জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য বেলাল হোসেন চৌধুরী আবারও আলোচনায়। দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তাধীন এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তিনি বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তবে গন্তব্য ইন্দোনেশিয়া নয়, সরাসরি অস্ট্রেলিয়া!
গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকা ছাড়েন বেলাল হোসেন। কাগজপত্রে উল্লেখ ছিল তিনি ইন্দোনেশিয়ায় “ডেটা সেন্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিপোর্টিং” শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণে যাচ্ছেন। একই আদেশে থাকা বাকি ১০ জন কর্মকর্তা সরাসরি ইন্দোনেশিয়া পৌঁছালেও, বেলাল চলে যান সিডনিতে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় সমালোচনার ঝড়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, আদালতের অনুমতি নিয়েই তিনি বিদেশে গিয়েছেন। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে— ইন্দোনেশিয়ার জিও দেখিয়ে কেন তিনি সিডনি পৌঁছালেন?
এর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের ভিত্তিতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আদালত তার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। অভিযোগ ছিল, দেশে-বিদেশে নাম-বেনামে বিপুল সম্পদ ও বিনিয়োগ করেছেন তিনি। এছাড়া অর্থপাচারের বিষয়েও রয়েছে গুরুতর অভিযোগ।
অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার খবর প্রকাশিত হলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “যে ব্যক্তি দুর্নীতির তদন্তের মুখে, তাকে বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের অপরাধ। যারা এই অনুমতি দিয়েছেন, তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে।”
বেলাল হোসেন অবশ্য দাবি করছেন, তার হাতে কিছুটা সময় ছিল বলে সিডনিতে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। পরে ইন্দোনেশিয়ায় যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এনবিআরের একটি সূত্র জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়া থেকে ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার কোনো প্রস্তুতিই তার ছিল না।
এনবিআর চেয়ারম্যানকে সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি মন্তব্য না করে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। তবে জনমনে প্রশ্ন স্পষ্ট— আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন সফর সম্ভব হলো, আর এর আড়ালে কী প্রভাবশালী শক্তি কাজ করছে?

