ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার কোরশমুন্সি ফাজিল মাদ্রাসায় নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে। ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চারতলাবিশিষ্ট ভবনটি শেষ করার কথা ছিল দেড় বছরের মধ্যে। কিন্তু ছয় বছর কেটে গেলেও এখনো কাজ শেষ হয়নি।
নতুন ভবন ব্যবহার করতে না পারায় শিক্ষার্থীদের জন্য তীব্র স্থান সংকট দেখা দিয়েছে। শ্রেণীকক্ষে গাদাগাদি করে পড়াশোনা করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘সেঞ্চুরি কনস্ট্রাকশন’ বলছে, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই ভবনটি বুঝিয়ে দেয়া হবে।
শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ জানায়, ভবনের প্রয়োজনীয়তা নিরূপণের পর অনুমোদন নিয়ে দরপত্র আহ্বান করা হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী ১৮ মাসের মধ্যে কাজ শেষ করে হস্তান্তরের কথা ছিল।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী খোন্দকার নাজমুল ইসলাম বলেন, “সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফেনী অফিস পরিদর্শন করেছেন। তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে ডিসেম্বরের মধ্যে ভবন বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সময়মতো কাজ শেষ না হলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
সরজমিনে দেখা গেছে, ভবনের চতুর্থ তলায় ১০-১১ জন শ্রমিক ছাউনির ফিনিশিংয়ের কাজ করছেন। এখনো প্লাস্টার, দরজা লাগানো, গ্লাস-মোজাইক বসানো এবং সিঁড়ি নির্মাণের কাজ বাকি।
স্থানীয় বাসিন্দা সফিউল আলম বলেন, “২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদাররাই বেশিরভাগ কাজ পেতেন। এই ভবনের কাজও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ঠিকাদার সেলিমের হাতে দেয়া হয়। কাজের মান কেউ দেখছে না। কখনো কাজ হয়, আবার বন্ধ থাকে। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগও নীরব।”
মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আবুল হোসেন নাছির বলেন, “আমাদের ক্লাসে ১৫০ থেকে ২০০ শিক্ষার্থী থাকে। জায়গা কম, সবাই গাদাগাদি করে বসি। নতুন ভবন হলে অনেক সমস্যা দূর হতো।”
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, বর্তমান ভবনে শিক্ষার্থীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদার এখনো কাজ শেষ করতে পারেনি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. সেলিম বলেন, “প্রকল্পের ফান্ড সময়মতো ছাড় হয়নি। এ কারণেই কাজ বিলম্বিত হয়েছে। এখন ফান্ড পাওয়া গেছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই কাজ বুঝিয়ে দেব।”
এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর ফেনীর সহকারী প্রকৌশলী আবদুস সামাদ বলেন, “তহবিল নয়, কাজের ধীরগতিই দেরির কারণ। ঠিকাদারকে একাধিকবার তাগাদা দেয়া হয়েছে এবং জরিমানাও করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে ভবন হস্তান্তর না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

