দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ বিমা গ্রাহকের প্রায় ১৩ কোটি ৭১ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও পরিচালক এম এ খালেকের বিরুদ্ধে নতুন অনুসন্ধান শুরু করেছে।
দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার দুদকের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দুদক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও পরিচালক এম এ খালেক অন্যান্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় জাল ভাউচার তৈরি করে ১৬টি ক্যাশ চেকের মাধ্যমে সাধারণ বিমা গ্রাহকের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। অনুসন্ধান কর্মকর্তারা এখন নথিপত্র তলব করে যাচাই-বাছাই করছেন।
এর আগে গত ৩১ জুলাই ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম ও এমডিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে সম্পদ ক্রয়ের নামে ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি দায়ের করেন সংস্থাটির উপপরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের স্ত্রী ও মেঘনা ব্যাংকের সাবেক পরিচালক তাসলিমা ইসলাম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেমায়েত উল্লাহ, সাবেক পরিচালক হেলাল মিয়া, শাহরিয়ার খালেদ, নাজনীন হোসেন, খন্দকার মোস্তাক মাহমুদ, ডা. মনোয়ার হোসেন, কে এম খালেদ, এম এ খালেক ও তার স্ত্রী সাবিহা খালেক, তাদের মেয়ে সারওয়াৎ খালেদ সিমিন, সাবেক পরিচালক মিজানুর রহমান, মোজ্জাম্মেল হোসেন ও রাবেয়া বেগম, সাবেক বিকল্প পরিচালক প্রফেসর ড. ইফফাৎ জাহান, সাবেক ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডাইরেক্টর ডা. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, কাজী ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সেক্রেটারী সৈয়দ আব্দুল আজিজ, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার গোলাম কিবরিয়া, সাবেক শাখা ম্যানেজার এস এম মোর্শেদ, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার আমির মো. ইব্রাহিম, মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি মো. আজহার খান ও ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. সোহেল খান।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে থাকা ৩৩.৫৬ শতাংশ জমি এবং ভবন ২০৭ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকায় ক্রয়ের নামে ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। এই অর্থ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে স্থানান্তর করা হয় এবং অবৈধ উৎস লুকানো হয়। মামলায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ধারাও উল্লেখ করা হয়েছে। নজরুল ইসলামকে গত ২৩ অক্টোবর দুদক গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

