লিবিয়ায় মুক্তিপণের দাবিতে তিন বাংলাদেশি নাগরিককে অপহরণের পর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। অপহরণকারীরা নির্যাতনের ভিডিও ও অডিও পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন, যা পরিবারের মধ্যে তীব্র দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যে মুক্তিপণের কিছু অর্থ পাঠানো হয়েছে দুটি পরিবারের পক্ষ থেকে।
ওই তিন প্রবাসী হলেন— আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের গুডুম্বা গ্রামের গোলাম রব্বানী, একই ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া দক্ষিণ মণ্ডলপাড়া গ্রামের আবদুল করিম এবং সোনামুখী ইউনিয়নের রামশালা গ্রামের রুহুল আমিন। প্রায় ১৫ দিন আগে গোলাম রব্বানীকে এবং ৬–৭ দিন আগে অন্য দুজনকে অপহরণ করা হয়। রুহুল আমিন ও আবদুল করিম শ্বশুর–ভগ্নিপতি সম্পর্কিত।
গোলাম রব্বানীর স্ত্রী মোছা. জুথি আক্তার জানান, তার স্বামী ২০১৫ সালে লিবিয়ায় যান এবং ২০২৩ সালে ছুটি কাটিয়ে আবার সেখানে অবস্থান নেন। জিলথান শহরে রঙের কাজ দেখানোর কথা বলে স্থানীয় একটি বাঙালি মাফিয়া চক্র তাকে অপহরণ করে। ৩০ নভেম্বর রব্বানীর ফোন থেকে কল দিয়ে অপহরণের কথা জানানো হয় এবং ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। একটি ব্যাংক হিসাব নম্বরে টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে নির্যাতনের ভিডিও পাঠানো হয় এবং বর্তমানে অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা দাবি করছে।
জুথি আক্তার বলেন, ‘টাকা না দিলে তারা স্বামীকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে। স্বামীকে উদ্ধারে প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতা চেয়ে আমি ৮ ডিসেম্বর আবেদন করেছি।’
অপহৃত আবদুল করিমের স্ত্রী তাসলিমা বিবি বলেন, দীর্ঘ ১৩ বছর লিবিয়ায় থাকা তার স্বামী গত বছর প্রায় আট মাস দেশে ছিলেন। সাত মাস আগে আবার লিবিয়ায় ফিরে যান। ৬ ডিসেম্বর রঙের কাজ দেখানোর কথা বলে তাকে ডেকে নেওয়া হয়। পরে আটকে রেখে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা কিছু অর্থ পাঠাতে বাধ্য হয়েছেন।
অপহৃত রুহুল আমিনের স্ত্রী আছিয়া বেগম জানান, ঘটনার দিনে স্বামী ফোন করে জানিয়েছিলেন, তিনি কাজ দেখতে যাচ্ছেন। কিছুক্ষণ পর একটি গাড়ির ছবি পাঠান। পরদিন ফোন থেকে নির্যাতনের অডিও পাঠিয়ে ৩০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরিবারের সদস্যরা এক লাখ টাকা পাঠিয়েছেন।
আক্কেলপুর থানার এসআই গণেশ চন্দ্র বলেন, গোলাম রব্বানীর স্ত্রী নির্যাতনের ভিডিও ও মুক্তিপণের বিষয় নিয়ে থানায় এসেছিলেন। তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

