দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে গত এক মাসে কিছুটা উন্নতি হলেও সংকট কাটেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত মাসের তুলনায় রিজার্ভ বেড়েছে ২৪ কোটি ২ লাখ ১০ হাজার ডলার। বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর, বাংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিআরএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বর্তমানে এক হাজার ৯৮০ কোটি ৭৮ লাখ ২০ হাজার ডলার। অথচ এক মাস আগে ২৫ সেপ্টেম্বর, এই রিজার্ভের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সামান্য এই বৃদ্ধি যেমন স্বস্তির তেমনি আশঙ্কারও। কারণ, অর্থনৈতিক সংকটের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটুকু বৃদ্ধি অর্থনীতির স্থিতিশীলতায় সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবেও বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। এতে সামগ্রিক রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৩০ কোটি ৩ লাখ ডলারে, যা এক মাস আগে ছিল ২ হাজার ৪৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অর্থাৎ, এক মাসে মোট রিজার্ভের পরিমাণে ৬২ কোটি ১৮ লাখ ডলারের বৃদ্ধি ঘটেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রিজার্ভের ক্ষয় রোধ করার কৌশলগত পদক্ষেপের ফলেই এই বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। তবে এর পাশাপাশি আরও একটি বাস্তবতা হলো, নিট ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ এখনও ১৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে, যা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগের কারণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সামগ্রিক রিজার্ভে সামান্য এই বৃদ্ধির পেছনে যেমন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৌশলগত প্রয়াস রয়েছে, তেমনি ভিন্ন ভিন্ন আয়ের উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহের চাপও ভূমিকা রেখেছে। তবে মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনীতির সামগ্রিক অস্থিরতা রিজার্ভের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করছেন, বৈদেশিক ঋণ ও আমদানি ব্যয়ের চাপ কমাতে না পারলে এই সামান্য উন্নতি টেকসই হবে না। বর্তমান বৈদেশিক মুদ্রা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কৌশলগত উদ্যোগ প্রয়োজন, বিশেষ করে রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিশ্চিত করা জরুরি।
পরিস্থিতির আলোকে অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সামান্য এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা স্বস্তির হলেও তা মোটেই স্থিতিশীলতার প্রতীক নয়।