মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় গতকাল নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, মোংলা বন্দরের আধুনিকীকরণ ও বিশ্বমানের নিরাপদ সমুদ্রবন্দরে পরিণত করার লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর হিসেবে মোংলা বন্দরের ভৌগোলিক অবস্থান ও অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনায় নানাবিধ উন্নয়ন পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে।
তিনি বলেন- “ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। পাশাপাশি রেল এবং নৌপথে সারা দেশের সাথে এর সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং এটি আরও দ্রুত উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হচ্ছে।”
মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমানে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে এবং কিছু প্রকল্প ভবিষ্যতে হাতে নেয়া হবে। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে চ্যানেলের গভীরতা ৮.৫ সিডি পর্যন্ত বাড়বে এবং ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ মোংলা বন্দরে হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও বন্দরের বার্ষিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ৮ লাখ টিইউ, ৪ কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং সক্ষমতায় উন্নীত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সভায় বন্দরের কার্যক্রমকে গতিশীল করার জন্য রাজস্ব বিভাগকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বন্দরে স্ক্যানার স্থাপন করতে নির্দেশ দেন উপদেষ্টা। পাশাপাশি বন্দরের নাব্যতা রক্ষা ও বৃদ্ধি করতে ড্রেজিংয়ের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরে জানান, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য নিজস্ব ড্রেজার ক্রয়ের পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নেপাল ও ভুটানকে মোংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। যা বন্দরের কার্যক্রমে গতি সঞ্চার করবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মোংলা বন্দরের পরিচিতি ও সেবাসমূহ তুলে ধরতে প্রচারণার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। বন্দরের সুবিধা সম্পর্কে তথ্যবহুল বুকলেট তৈরি করে বিদেশী মিশনের মাধ্যমে তা প্রচারের পদক্ষেপ নেয়ার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত সকলের প্রতি দেশের নদী, স্থল ও সমুদ্রবন্দরগুলোর উন্নয়নে জাতীয় পর্যায়ের একটি পোর্ট স্ট্র্যাটেজি প্রণয়নের পরিকল্পনার কথাও জানান ড. সাখাওয়াত।
দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে মোংলা বন্দরের কার্যক্রমকে তুলে ধরতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান “ইত্যাদি” মোংলা বন্দরে ধারণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমানসহ বন্দরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ।