বেক্সিমকো গ্রুপকে ঋণ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা অর্থমন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছেন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান। চিঠিতে তিনি বলেছেন, নতুনভাবে অর্থায়ন করলে যে ঋণঝুঁকি তৈরি হবে, তা বহন করার পরিস্থিতি বর্তমানে জনতা ব্যাংকের নেই।
বকেয়া বেতনের জন্য শ্রমিক–কর্মীদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ নভেম্বর ব্যাংক ঋণের জন্য আবেদন করেছিল বেক্সিমকো গ্রুপ। প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছে জনতা ব্যাংক।
যদিও এর আগে, ঋণ খেলাপি গ্রাহক বেক্সিমকো গ্রুপের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের মতামত নিয়ে জনতা ব্যাংক গ্রুপটির শ্রমিক-কর্মচারীদের আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধের জন্য ৫৫ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে, যা কোনো এলসির বিপরীতে দেওয়া হয়নি।
১৪ নভেম্বর অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারকে লেখা চিঠিতে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, বেক্সিমকো গ্রুপের ২৮টি প্রতিষ্ঠানের কাছে জনতা ব্যাংকের পাওনা ২৩,৪০৭ কোটি টাকা— যার বড় অংশই ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত এবং বাকিটা ওভারডিউ অবস্থায় রয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী কোনো খেলাপি গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার সুযোগ নেই।
ব্যাংকখাত সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের সদস্য ড. জাহিদ হোসেন এ বিষয়ে বলেন, একবার নিয়ম ভঙ্গ করে খেলাপি প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো গ্রুপকে টাকা দিয়েছে জনতা ব্যাংক। কিন্তু এভাবে বার বার টাকা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক বলে মনে করি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন টিবিএসকে বলেন, বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রতিমাসের বেতন প্রায় ৮২ কোটি টাকা। এতো বিপুল পরিমাণ টাকা মাসে মাসে ব্যাংকগুলোর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলো বিক্রি করে ধীরে ধীরে শ্রমিকদের ফেসআউট করা যেতে পারে।
জনতা ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বেক্সিমকো গ্রুপের রপ্তানির বিপরীতে দীর্ঘমেয়াদে প্রায় ১,২৮৭ কোটি টাকা রপ্তানিমূল্য অপ্রত্যাবাসিত রয়েছে যার বিপরীতে প্রদত্ত প্যাকিং ক্রেডিট ও বিবিএলসি দায় অপরিশোধিত রয়েছে। এছাড়া, জনতা ব্যাংকের নস্ট্রো হিসাব বিকলন করা হলেও ইডিএফ দায় বাবদ প্রায় ৫৬৪ কোটি টাকা বেক্সিমকো গ্রুপ পরিশোধ করেনি।