সাম্প্রতিক এক জনমত জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ মনে করছেন আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। অন্যদিকে ১৫ শতাংশের মতে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে ‘ডিআইজিডি পালস সার্ভে’-এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জরিপটি পরিচালনা করেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)।
ভোটের পছন্দ বিষয়ে প্রশ্নে ১২ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছেন, যা গত বছরের অক্টোবরে ছিল ১৬.৩ শতাংশ। জামায়াতে ইসলামী ১১.৩ শতাংশ থেকে কমে ১০.৪ শতাংশে নেমেছে। এনসিপির সমর্থন বেড়ে হয়েছে ২.৮ শতাংশ, যা আগে ছিল ২ শতাংশ। এ ছাড়া ৩৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, তারা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।
জরিপে দেখা যায়, গত বছরের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী ছিলেন ৭১ শতাংশ মানুষ। এ বছরের জুলাইয়ে তা নেমে এসেছে ৪২ শতাংশে। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও একই প্রবণতা দেখা গেছে। তবে গত বছরের অক্টোবরে তুলনায় বর্তমানে অর্থনীতি কিছুটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন অংশগ্রহণকারীরা।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত নির্দিষ্ট সময়সূচি নিয়ে প্রশ্নে ৫৫ শতাংশ বলেছেন, তারা ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন চান। ২৫ শতাংশ চান ডিসেম্বর ২০২৬ বা এর পরে নির্বাচন হোক।
নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। ৮০ শতাংশ মানুষ মব সহিংসতা নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ৫৬ শতাংশ, রাতে চলাচলের নিরাপত্তা নিয়ে ৬১ শতাংশ এবং পোশাকের কারণে হয়রানি নিয়ে ৬৭ শতাংশের উদ্বেগ রয়েছে।
বয়সভিত্তিক সমর্থনের হিসাব বলছে, ২৭ বছরের নিচের ভোটারদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী এগিয়ে রয়েছে ১২ শতাংশ সমর্থন নিয়ে। বিএনপির সমর্থন ৯ শতাংশ, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ৭ শতাংশ এবং এনসিপির ৪ শতাংশ। এই বয়সশ্রেণীর ৪৮ শতাংশ এখনও সিদ্ধান্ত নেননি।
রাজনীতিতে নতুন তরুণ নেতৃত্বের স্থায়িত্ব নিয়েও মতভেদ রয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের ৩৬ শতাংশ মনে করেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত তরুণ নেতৃত্বাধীন দলগুলো দীর্ঘস্থায়ী হবে না। বিপরীতে ৩৮ শতাংশ ভিন্নমত দিয়েছেন। ২৬ শতাংশ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই টেলিফোন জরিপে দেশের ৬৪ জেলার ৫৪৮৯ জন নারী-পুরুষ অংশ নেন। এর মধ্যে নারী ছিলেন ৪৭ শতাংশ এবং পুরুষ ৫৩ শতাংশ। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ১৮ থেকে ৫০ বছরের বেশি পর্যন্ত বিস্তৃত।

