যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ান ব্যাংক ও তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো একটি উপায় হতে পারে। তবে ইউরোপীয় দেশগুলোকেও এতে অংশ নিতে হবে।
জি৭-এর দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা গত শুক্রবার বৈঠকে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয় আলোচনা করেছেন। এছাড়া তারা এমন দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপের কথাও ভাবছেন, যারা ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে সক্রিয় সহায়তা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও মিত্রদের প্রতি রাশিয়ার তেল ক্রয়কারী দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপের আহ্বান জানিয়েছে।
কানাডার অর্থমন্ত্রী ফ্রঁসোয়া-ফিলিপ শাম্পেন বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন। কানাডা থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করতে রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানোর সম্ভাব্য নতুন পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মন্ত্রীরা ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা তহবিলের জন্য জব্দকৃত রুশ সম্পদের ব্যবহার দ্রুততর করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তারা একটি বিস্তৃত অর্থনৈতিক পদক্ষেপের সম্ভাব্য তালিকাও তৈরি করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো এবং সেই দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপ, যারা রাশিয়ার যুদ্ধকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, রাশিয়ার তেল ক্রয়কারী দেশগুলোর ওপর শুল্ক আরোপে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সবার যোগ দেওয়া উচিত। বৈঠকের পর বেসেন্ট ও মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রীয়ার পৃথক বিবৃতিতে বলেন, “শুধুমাত্র একটি ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা—যা পুতিনের যুদ্ধে অর্থ যোগান বন্ধ করবে—সেটিই যথেষ্ট অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে এবং নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে পারে।”
যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বেসেন্ট ও গ্রীয়ার বৈঠকের সময় নেওয়া পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার চাপ বাড়ানো এবং জব্দকৃত রাশিয়ান সম্পদ ব্যবহার করে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো। দিনের শুরুতে মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জি৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মিত্রদের প্রতি চীন ও ভারতের পণ্যের ওপর ‘গুরুত্বপূর্ণ শুল্ক’ আরোপের আহ্বান জানান। উদ্দেশ্য, দেশগুলোকে রাশিয়ার তেল ক্রয় বন্ধ করতে প্ররোচিত করা।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতের আমদানি পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর ফলে ভারতের পণ্যের ওপর মোট শুল্ক ৫০ শতাংশ হয়েছে। এই পদক্ষেপ দুই গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে। যদিও চীনও রাশিয়ার তেল কিনছে, ট্রাম্প চীনের আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেননি। কারণ তার প্রশাসন বেইজিংয়ের সঙ্গে সূক্ষ্ম বাণিজ্য সমঝোতা বজায় রাখতে চাচ্ছে। বেসেন্ট শুক্রবার মাদ্রিদে তার চীনা সহকর্মী ভাইস প্রধানমন্ত্রী হে লিফেং-এর সঙ্গে আরেক দফা আলোচনার জন্য যাচ্ছেন। আলোচনার বিষয় হবে বাণিজ্য সমস্যা, টিকটকের মার্কিন কার্যক্রম বিক্রি এবং মানি লন্ডারিং বিরোধী বিষয়।
শুক্রবারের শুরুতে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন। তবে তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেননি। ট্রাম্প আরও সতর্ক করেছেন, “আমাদের খুব, খুব কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।”