অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করা। এ সময় তাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল দুর্নীতি রোধে কার্যকর রূপরেখা তৈরি করা কিন্তু তারা সেই দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং আগের সরকারের পরিকল্পিত, কিন্তু কার্যক্রমে অপ্রয়োগযোগ্য প্রকল্পগুলোকে জবাবদিহি ছাড়াই বাস্তবায়ন করছে।
বন্দর ব্যবস্থাপনায়ও দেখা যাচ্ছে একই অবস্থা। জাতীয় সক্ষমতা তৈরি না করে বিদেশি কোম্পানির ওপর নির্ভরতা বাড়ানো হচ্ছে। এতে স্বদেশী প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তি উন্নয়নের সুযোগ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রকল্পগুলোর স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার অভাব আরও বাড়াচ্ছে। অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে এ ধরনের অস্বচ্ছতা দেশকে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর না দিলে, বিদেশি নির্ভরতা স্থায়ী হয়ে যাবে এবং স্থানীয় শিল্প ও বন্দর ব্যবস্থাপনায় স্বতন্ত্রতা হারাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিম ম্যাসাচুসেটসে হুসাক পর্বতমালার মধ্যে ৪.৭ মাইল দীর্ঘ রেলওয়ে টার্মিনাল নির্মাণ শুরু হয় ১৮৫১ সালে। ২৪ বছর পর, ১৮৭৫ সালে নির্মাণকাজ শেষ হয়। শুরুতে যেমন কঠিন মনে হয়েছিল, প্রকৃত বাস্তবতা তার চেয়েও কঠিন ছিল। নির্মাণকালে ১৯৬ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। তবে সময়ের সঙ্গে এটি পুরকৌশলের একটি ল্যান্ডমার্ক প্রকল্প হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এই প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে নিউ ইয়র্কারের সাংবাদিক ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল আলবার্ট হির্শমানের একটি অর্থনৈতিক তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেছেন।
হির্শমানের মতে, সৃজনশীলতা সবসময় আমাদের জন্য বিস্ময় হিসেবে আসে। আমরা কখনোই এর ওপর নির্ভর করতে পারি না এবং এটি ঘটার আগে বিশ্বাসও স্থাপন করি না। সচেতনভাবে এমন কাজগুলোতে যুক্ত হতে চাই না, যেখানে সাফল্যের জন্য সৃজনশীলতার প্রয়োজন। তাই আমাদের সৃজনশীলতাকে ব্যবহার করার একমাত্র উপায় হলো কাজটিকে বাস্তব চাহিদার তুলনায় কম কঠিন হিসেবে মূল্যায়ন করা। হির্শমান এই নীতিকে দিয়েছেন ‘হাইডিং হ্যান্ড প্রিন্সিপাল’ নামে। এর মূল ধারণা হলো, প্রকল্পের কঠিন দিকগুলো প্রথমে পরিকল্পনাকারীর কাছ থেকে ‘অদৃশ্য হাত’ দিয়ে লুকানো থাকে, যাতে পরে সৃজনশীলতা ব্যবহার করে কাজ সম্পন্ন করা যায়। এই নীতির ভালো এবং খারাপ উভয় দিকই আছে।
তবুও ধরে নেওয়া হয়, আমরা যে সৃজনশীল হতে চাই না, সেই প্রবণতাকে অতিক্রম করতে ঝুঁকি নিতে হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। পূর্ব অভিজ্ঞতা এখানে পথ দেখায়। অনিশ্চিত পৃথিবীতে এই নীতি অনুসরণ করে অনেকেই সামনে এগিয়ে যান।
লালদিয়া চরে চট্টগ্রাম বন্দরের একটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য ১৭ নভেম্বর এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার একটি চুক্তি করেছে। চুক্তির শর্ত প্রকাশ না করে মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে ৩৩ বছরের দীর্ঘ সময়ের চুক্তি করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ‘হাইডিং হ্যান্ড’ নীতি অনুযায়ী, এই বিতর্কে উভয় পক্ষই কিছু বাস্তব সম্ভাব্য সমস্যাকে তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করছে। এপি মোলার এবং সরকার চুক্তির শর্ত আড়াল করে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো তাদের দিক থেকে তুলে ধরছে। অন্যদিকে তড়িঘড়ি চুক্তির বিরোধীরা জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির পথে বাধাগুলোকে নিজেদের মতো দেখাতে চাইছে।
উভয় পক্ষের লক্ষ্য এক অচলাবস্থা কাটানো। পার্থক্য আছে কর্তৃত্বের ব্যাবস্থায়। প্রশ্ন ওঠে, কার নিয়ন্ত্রণে এই সংকট সমাধান হবে? কার সৃজনশীলতা দিয়ে বন্দরের কর্মদক্ষতা বাড়ানো সম্ভব? আমরা কি আশা করব, বিদেশি কোম্পানির ওপর দায়িত্ব চাপিয়ে বন্দর দুর্নীতিমুক্ত করা যাবে, নাকি বাংলাদেশ নিজস্ব মালিকানা ব্যবহার করে দুর্নীতি মোকাবিলা করতে পারবে? সৃজনশীলতা ব্যবহার করার দায় কার কাছে কতটুকু? যদি বিদেশি কোম্পানি ব্যবসা করতে আসে এবং দুর্নীতি তার মুনাফা বাড়ায়, তাহলে কি তার দায় থাকবে? একইভাবে, জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরবর্তী সরকার তা না করলে কী হবে?
এখানেই গণতান্ত্রিক রূপান্তরের বিষয় উঠে আসে। পূর্বের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে, সীমাহীন দুর্নীতি থেকে লাভবান হয়ে একটি নির্বাচিত সরকার স্বৈরাচারী হয়ে উঠেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব ছিল দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতি রোধে রূপরেখা তৈরি করা। কিন্তু তারা সেই দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং আগের সরকারের পরিকল্পিত, কিন্তু বাস্তবায়নযোগ্য নয় এমন প্রকল্পগুলো জবাবদিহি ছাড়াই চালু করেছে।
বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি, অদক্ষতা ও অনিয়ম দেখার কারণে হতাশ। যাঁরা সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন, তাঁরা ভেবেছেন, সেবা খাত ব্যক্তিগত খাতের হাতে দিলে সমস্যা সমাধান হবে। ১৯৮০-এর দশক থেকে অসংখ্য রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং বেসরকারীকরণ করা হয়েছে। তখন বলা হয়েছিল, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ঠিকমতো কাজ করে না, সেখানে রয়েছে দুর্নীতি ও অদক্ষতা। তাই বেসরকারি ব্যাংক খোলা প্রয়োজন।
কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়ে গেছে। বর্তমানে ৩৫ শতাংশ খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ শীর্ষ খেলাপি ঋণের তালিকায় রয়েছে। পাঁচটি খেলাপি ব্যাংককে একীভূত করে আবার সরকারি মালিকানায় আনা হচ্ছে, তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। অথচ এই ব্যাংকগুলো প্রথমেই সরকারি মালিকানার প্রতি অনাস্থার কারণে গঠন করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম বন্দরেও একই চিত্র দেখা যায়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেককে ইজারা দেওয়া হলেও দুর্নীতি কমেনি। এরপর বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দিলে দুর্নীতি কমবে বলে ধারণা করা হয়। দুই বছর আগে পতেঙ্গা টার্মিনাল সৌদি কোম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালের কাছে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ১৫ মাস পরও কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায়নি। চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো বিনিয়োগ হয়নি এবং কর্মদক্ষতাও বাড়েনি।
এরপরও অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রামের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া, গত এপ্রিল মাসে মাতারবাড়ীতে গভীর সমুদ্রবন্দরে একটি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য জাপানি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়। তবে টার্মিনালটি পরিচালনা করবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ। এজন্য সেখানে তেমন বিতর্ক হয়নি। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার থেমে থাকেনি। লালদিয়া চরে আরেকটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার চুক্তি করেছে ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালসের সঙ্গে। এছাড়া পানগাঁও নৌ টার্মিনাল পরিচালনার চুক্তি করা হয়েছে সুইজারল্যান্ডের মেডলগের সঙ্গে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বিদ্যমান দুর্নীতি বন্ধ করা এবং দক্ষতা বাড়ানো।
প্রশ্ন উঠে, এসব চুক্তি কি সত্যিই দুর্নীতি বন্ধ করতে পারবে? এপিএম টার্মিনালসের মতো বৈশ্বিক কোম্পানি অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে কী সাফল্য দেখিয়েছে? লাইবেরিয়ার মরোভিয়া বন্দর ইজারার পরও কেন তারা কাঙ্ক্ষিত দক্ষতা বাড়াতে পারেনি? উল্টো, মাশুল বেড়ে গেছে, যার কারণে লাইবেরিয়ার আমদানি–রপ্তানি ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে। নাইজেরিয়ার আপাপা বন্দরে দুর্নীতি কেন বন্ধ হয়নি? হয়তো মূল সমস্যা হলো দুর্নীতির উৎসের দিকে নজর না দেওয়া।
দুর্নীতি কোনো একক ব্যক্তির কাজ নয়। এটি একটি চক্রের কাজ, যারা নিজেদের মধ্যে যোগসাজশ করে দুর্নীতিকে টিকিয়ে রাখে। এজন্য দুর্নীতি রোধে সব সময় উৎসের দিকে নজর দিতে হয়। কিন্তু অনেক দেশে, সমস্যার মূলকে না খুঁজে ‘ঝোপে কোপ মেরে’ লোকদেখানোই প্রধান রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই শুধু নেতৃত্ব বদলালে বা এক অপারেটর নিয়োগ দিলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।
এ ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সরকার যদি চাই, সর্বব্যাপী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্নীতির উৎস সমূলে নির্মূল করতে পারে। যদি সরকার ইচ্ছুক না হয়, তা সম্ভব নয়। তবে জনগণের চাপ অব্যাহত থাকলে সরকারকে ‘অনাবিষ্কৃত সৃজনশীল’ পদ্ধতি প্রয়োগ করতে বাধ্য করা যেতে পারে। অনেক সময় সরকারও জানে না তারা কতটা সৃজনশীল হতে পারে; কিন্তু জনগণ তাদের পথ খুঁজে দিতে পারে।
এপিএম টার্মিনালস ২০০১ সালে শত বছরের বেশি পুরনো ডেনমার্কের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি মায়েরস্কের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে তারা বিশ্বজুড়ে ৭৪টি বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনা করছে। বিভিন্ন দেশে অভিজ্ঞতা ও সৃজনশীলতা ব্যবহার করে বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে তারা আগ্রহী। তবে আফ্রিকান দেশগুলোতে কোম্পানিটির অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা এবং বন্দরের বাইরে থাকা দুর্নীতির উৎসগুলো অগ্রাহ্য করে কি সত্যিই দুর্নীতি দূর করা সম্ভব?
বাংলাদেশে পূর্বে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির অভিজ্ঞতাও সন্তোষজনক ছিল না। উদাহরণ হিসেবে আদানি ও মেট্রোরেলের চুক্তি ছিল গোপন। অভিজ্ঞতা বলছে, এসব চুক্তিতে দেশীয় স্বার্থবিরোধী শর্ত ছিল। তখন জনগণকে এই চুক্তি অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে বলাটা কি অমর্যাদাকর নয়?
দূর্নীতি বন্ধ ও কর্মদক্ষতা বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক সংগঠনগুলো করছে। শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ, যা ১৪টি শ্রমিক ইউনিয়নের একটি ফেডারেশন, সম্প্রতি বন্দর এলাকায় প্রতীকী অবরোধ করেছে। তারা জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং টার্মিনালে উন্নত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের দাবি জানিয়েছে। তবে তাদের মতে, কাস্টমসের দুর্নীতি বন্ধ না হলে বন্দরের দুর্নীতি কমানো সম্ভব নয়। তাদের প্রশ্ন, নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ইতিমধ্যেই লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চলছে, তাহলে কেন এর ব্যবস্থাপনা বিদেশি কোম্পানির হাতে দেওয়া হবে?
যারা বিদেশি কোম্পানির কাছে টার্মিনাল ইজারা দিতে চায়, তারা চুক্তির বিরোধিতাকারীদের দুর্নীতির জন্য দায়ী করছে। কিন্তু তারা দুর্নীতির উৎস বন্ধ করার কার্যকর উপায় ব্যাখ্যা করে না। প্রশ্ন থেকে যায়, শুধু ব্যবস্থাপক পরিবর্তন করলেই কি সত্যিই দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব? ডিপি ওয়ার্ল্ডের প্রধান দপ্তর দুবাইতে অবস্থিত। ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এটি শুরু হয় এবং প্রথমে একটি স্থানীয় বন্দর পরিচালনা করেছিল। নিজেদের সৃজনশীলতা ব্যবহার করে, অন্যান্য গ্লোবাল অপারেটরদের কাছ থেকে শিখে এবং এক্সপার্ট নিয়োগ দিয়ে তারা গ্লোবাল অপারেটর হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ৮০টি দেশে কার্যক্রম চালাচ্ছে কিন্তু কেউ কেউ এই রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগগুলো উদাহরণ হিসেবে দেখালে বলেন, “আমাদের পুঁজি নেই, আমাদের জাতীয় সক্ষমতা নেই।” জাতীয় সক্ষমতা অর্জনের উপায় নিয়ে কখনোই তাদের কথা শোনা যায় না। বিষয়টি বিদেশি কোম্পানির প্রতি অবিশ্বাস বা অমূলক সন্দেহ থেকে নয়, বরং জাতীয় সক্ষমতা অর্জনের তাগিদকে আড়াল করা হয়।
সক্ষমতা অর্জনের পথ অবশ্যই কঠিন। কিন্তু সরকার নিজেই দেখিয়েছে যে উদ্যোগ নিলে নিউমুরিং টার্মিনালে জাহাজের অপেক্ষার সময় কমানো সম্ভব। বহুদিন ধরে বন্দরে মূল্যবান জায়গা দখল করে রাখা কনটেইনার এবং স্ক্র্যাপ মালামাল সরানো সম্ভব। যখন সরকার এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়ে গর্ব করে, তখন জনগণও আশা দেখতে পায়।
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে বহুদিনের সমস্যা সমাধান সম্ভব—এটি সরকার নিজেই প্রমাণ করেছে। তাহলে প্রশ্ন ওঠে, আমাদের বন্দর কেন বিদেশি কোম্পানির কাছে ইজারা দিতে হবে? দায়িত্ব নেওয়ার ভয়ে, নাকি সৃজনশীলতা ব্যবহারের ভয়ে? যারা এখন দায়িত্ব নিয়ে ইজারা দিচ্ছেন, তারা হয়তো কিছুদিন পর বিদেশে চলে যাবেন। এভাবে দেশের সক্ষমতা অর্জনের দায় কেন এড়িয়ে চলা হচ্ছে?
ড. মোশাহিদা সুলতানা: সহযোগী অধ্যাপক, অ্যাকাউন্টিং বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ই–মেইল: moshahida@du.ac.bd

