সরকার পুনরায় অনুমোদন দিয়েছে আগে বাতিল হওয়া ১২টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে, যা বিদ্যুৎ উৎপাদনে কম খরচ নিশ্চিত করবে। পুনরায় দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই প্রকল্পগুলো থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য আগের তুলনায় কম দামে চুক্তি করা যাবে। এতে বছরে ১ হাজার ১৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা সাশ্রয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
গত বছর বিদ্যুৎ, জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন হওয়া ৩৪টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে বাতিল হয়েছিল। এবার সেই প্রকল্পগুলোর মধ্যে ১২টি পুনঃঅনুমোদন পেয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পে বিদ্যুৎ ক্রয়ের দাম ২ থেকে ৩ সেন্ট কমানো সম্ভব হয়েছে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, “এবার অনুমোদিত ১২টি প্রকল্প থেকে ৯৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। আগে এই প্রকল্পগুলো ২০১০ সালের বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইনের অধীনে নির্ধারিত দামে অনুমোদিত ছিল, যা এখন বাতিল হওয়ায় প্রকল্পগুলোও বাতিল হয়েছিল। নতুন দরপত্র প্রক্রিয়ায় দাম কমেছে।”
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগে আইন অনুসারে গড় ট্যারিফ কিলোওয়াট ঘণ্টা ১৩.০০৫২ টাকা, যা এখন ৯ টাকার নিচে এসে গেছে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—
-
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি: ২০০ মেগাওয়াট (এসি) গ্রিড-টাইড সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট
-
পাবনা: ১৫০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট
-
নোয়াখালী, সুধারাম: ১০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
চট্টগ্রাম, হাটহাজারী: ১৮ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
মৌলভীবাজার: ২৫ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
কক্সবাজার, চকরিয়া: ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
নীলফামারী, জলঢাকা: ৫০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
কক্সবাজার, জোয়ারিয়া নালা, রামু: ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
হবিগঞ্জ, নবীগঞ্জ, বিবিয়ানা: ৫০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
মোংলা, বাগেরহাট, বুড়িরডাঙ্গা: ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
পাবনা, হেমায়েতপুর: ৭০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার প্ল্যান্ট
-
ময়মনসিংহ, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড: ২১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্র
প্রতিটি প্রকল্পের জন্য এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ২-৩টি প্রস্তাব জমা পড়ে, যার মধ্যে কেবলমাত্র ১-২টি প্রস্তাব কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়েছে।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, পুনঃঅনুমোদনের ফলে দেশীয় সৌরবিদ্যুৎ খাতের চাহিদা মেটানো ছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব হবে।

