মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে কর্মী রপ্তানির প্রক্রিয়ায় সরকার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ আদায় ও কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ৬০টি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তাসহ ১২৪ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৬০টি মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ৬০টি এজেন্সির মালিক ও কর্মকর্তারা প্রায় ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৬ শ্রমিকের কাছ থেকে ৪ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই এজেন্সিগুলো সংগঠিত সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চুক্তিভঙ্গ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। সরকারের নির্ধারিত ফি অনুযায়ী একজন শ্রমিক মালয়েশিয়া যেতে ৭৮,৯৯০ টাকা খরচ করবেন, কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী এসব এজেন্ট রাজনৈতিক প্রভাব ও সংস্থার অভ্যন্তরীণ সুবিধা ব্যবহার করে এই খরচকে বহু গুণ বাড়িয়ে নেন। শ্রমিক বাছাই, অর্থ লেনদেন এবং চুক্তি শর্তাবলি উপেক্ষা করা হয়েছে।
মামলাগুলোতে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০(বি), ১৬১, ১৬২, ১৬৩, ১৬৪, ১৬৫(ক), ৪২০ এবং ৪০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে ৪০টি ওভারসিজ কোম্পানির মালিক ও কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৪০টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। বর্তমানে সব মিলিয়ে এই প্রক্রিয়ায় দায়ের করা মামলা ১০০টি এবং আসামি ২৩২ জন। আত্মসাতের মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা।
মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে কর্মী রপ্তানি ও অর্থ লেনদেনে এই দুর্নীতি কেবল শ্রমিকদের ক্ষতি করছে না, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকেও প্রভাবিত করছে। দুদকের পদক্ষেপের মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে এই ধরনের অপব্যবহার বন্ধ করা সম্ভব হবে।

