দেশে ও বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ও সম্পদ উদ্ধারে সরকারের তৎপরতা জোরদার হয়েছে। এর অংশ হিসেবে এখন পর্যন্ত দেশে ও বিদেশে মোট ৬৬ হাজার ১৪৬ কোটি টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ফ্রিজ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশে পাচার করা সম্পদ ফেরাতে বিভিন্ন দেশে ২১টি মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলআর) পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সমন্বয় কমিটির ৩০তম সভা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, বিদেশে পাচার করা অর্থ ও সম্পদ উদ্ধারে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চিহ্নিত ১১টি কেইসের আওতায় এ পর্যন্ত ১০৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে ১৪টিতে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। চারটি মামলায় আদালতের রায়ও দেওয়া হয়েছে।
সরকারি হিসাবে দেখা যাচ্ছে, দেশে ৫৫ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা এবং বিদেশে ১০ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ ফ্রিজ ও সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব সম্পদের মধ্যে স্থাবর ও অস্থাবর উভয় ধরনের সম্পত্তি রয়েছে। পাশাপাশি বিদেশে পাচার করা অর্থ উদ্ধারে আইনি সহযোগিতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে ২১টি এমএলআর পাঠানো হয়েছে।
সভায় অগ্রাধিকারভিত্তিক কেইসগুলোতে দ্রুত চার্জশিট দাখিলের নির্দেশনা দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে আরও এমএলআর পাঠানো এবং মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে বলা হয়।
মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে বাংলাদেশের অবস্থান মূল্যায়নের বিষয়টিও সভায় গুরুত্ব পায়। এ লক্ষ্যে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানিলন্ডারিং (এপিজি) কর্তৃক ২০২৭–২৮ মেয়াদে অনুষ্ঠিতব্য চতুর্থ পর্বের মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশনের জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া বিদেশে পাচার করা অর্থ ও সম্পদ উদ্ধার কার্যক্রম আরও দক্ষ ও কার্যকর করতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর কয়েকটি ধারা যুগোপযোগী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য আইনটি সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করার কথা জানানো হয়েছে।
সভায় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

