কয়েকটি ইসলামি দলের আপত্তির পর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুনভাবে সৃষ্ট সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষকের পদ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় গত আগস্টে জারি করা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-তে কিছু শব্দগত পরিবর্তন এনেছে।
আজ সোমবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান বলেন, রোববার সংশোধিত বিধিমালার গেজেট জারি হয়েছে। নতুন সংশোধনে আগে চার ক্যাটাগরির পদ থাকলেও এখন দুটি ক্যাটাগরি রাখা হয়েছে। সংগীত ও শরীরচর্চা সহকারী শিক্ষকের পদ নতুন বিধিমালায় নেই।
সমালোচনার মুখে পদ বাতিলের বিষয়ে মাসুদ আকতার কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘আপনারা এটি খতিয়ে দেখতে পারেন।’
নতুন বিধিমালায় একটি শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। মাসুদ আকতার জানান, আগের বিধিমালায় মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পদগুলোর ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ের স্নাতক ও ৮০ শতাংশ অন্যান্য বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য নির্ধারিত ছিল। তবে শব্দের কারণে মনে হয়েছিল, ৮০ শতাংশ পদে বিজ্ঞান ছাড়া অন্যান্য বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীরা নিয়োগ পাবেন। আসল অর্থ হলো কোটার বাইরে ওই ৮০ শতাংশ পদ বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে যেকোনো স্নাতক ডিগ্রিধারীর জন্য খোলা। তাই শব্দটি সংশোধন করে ‘অন্যান্য বিষয়ে’ কে ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্তত’ হিসেবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
গত ২৮ আগস্ট নতুন নিয়োগ বিধিমালা জারি হওয়ার পর সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল। এরপরই ধর্মভিত্তিক সংগঠনগুলো সংগীত বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদ নিয়ে সমালোচনা শুরু করে।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির সমালোচনা করেন। একই দিনে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নেতারা সংগীত শিক্ষক পদকে কঠোর সমালোচনা করেন।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলাম প্রাথমিক স্তরে সংগীত শিক্ষক নিয়োগকে ‘ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে বিধিমালা বাতিলের দাবি জানিয়েছিল।

