নব্বইয়ের দশকে ঢাকাই সিনেমার আকাশে উজ্জ্বল এক নক্ষত্র ছিলেন সালমান শাহ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অল্প বয়সে তিনি চলে গেলেও আজও কোটি ভক্তের হৃদয়ে জীবিত এই হার্টথ্রব নায়ক। আজ, ১৯ সেপ্টেম্বর, তার জন্মদিন।
সিলেটের জকিগঞ্জে ১৯৭১ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন, যিনি পরবর্তীতে সালমান শাহ নামে পরিচিত হন। ১৯৯৩ সালে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে অভিষেকের মাধ্যমে তিনি ঢালিউডের পর্দায় ছড়িয়ে দেন অনবদ্য প্রতিভা।
শৈশব থেকেই সালমান ছিলেন সঙ্গীতপ্রিয়। স্কুলজীবনে বন্ধুমহলে পরিচিত ছিলেন গায়ক হিসেবে। এরপর নাটক থেকে অভিনয়ের যাত্রা শুরু এবং ধারাবাহিক ‘পাথর সময়’-এ তার অভিনয় প্রশংসিত হয়।
কিন্তু আসল খ্যাতি আসে বড় পর্দায়। ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবিতে মৌসুমীর সঙ্গে জুটি বাঁধার পর তিনি হয়ে ওঠেন রাতারাতি জনপ্রিয়। এরপর একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়ে সালমান শাহ ঢালিউডের স্টাইল আইকন ও তরুণদের প্রেরণা হয়ে ওঠেন। শাবনূরের সঙ্গে তার জুটি আজও বাংলা সিনেমার শ্রেষ্ঠ জুটির তালিকায় শীর্ষে।
জীবদ্দশায় তিনি অভিনয় করেছেন ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘মহামিলন’, ‘আশা ভালোবাসা’, ‘বিচার হবে’, ‘প্রিয়জন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘স্নেহ’সহ অসংখ্য হিট ছবিতে। মৃত্যুর পরও তার অভিনীত ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘প্রেম পিয়াসী’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভিতর আগুন’ দর্শকের হৃদয় জয় করে।
দুর্ভাগ্যবশত ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি হঠাৎ প্রয়াত হন। সেই শূন্যতা আজও পূরণ হয়নি। সালমান শাহ কেবল নায়কই ছিলেন না; তিনি হয়ে ওঠেছিলেন সময়, আবেগ ও প্রেমের প্রতীক।
তার ফ্যাশন, স্টাইল, অভিনয়—সবকিছুই ছিল নব্বইয়ের দশকের তরুণদের জন্য অনুকরণীয়। অনেকেই মনে করেন, অল্প সময়ের জন্য এসেছেন বলেই তিনি এত আলো ছড়াতে পেরেছেন। তাই প্রায় তিন দশক পরও তার জনপ্রিয়তা অম্লান।
আজকের দিনে ভক্তরা সালমান শাহকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন, জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তিনি না থাকলেও, ঢালিউডের ক্ষণজন্মা এই রাজপুত্র আজও কোটি মানুষের হৃদয়ে অমর।