বক্স অফিসে অভূতপূর্ব সাফল্যের ধারা বজায় রেখেছে মালয়ালম সিনেমা ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’। মাত্র ৩০ কোটি রুপির বাজেটে নির্মিত এ ফ্যান্টাসি ড্রামা মুক্তির পর থেকে আয় করেছে ২৮০ কোটির বেশি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হওয়া ছবিটি প্রশংসা কুড়িয়েছে সাধারণ দর্শক থেকে সমালোচকদের কাছেও।
নতুন রেকর্ড গড়ল লোকাহ-
মুক্তির পর মাত্র ২৪ দিনেই সিনেমাটি আয় করে ২৬৭ কোটি রুপি, যা মালয়ালম ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর মাধ্যমে পৃথ্বিরাজ সুকুমারনের ‘এল টু: এম্পুরান’–এর রেকর্ড (২৬৫.৫ কোটি রুপি) ভেঙে দিয়েছে লোকাহ। শুধু মালয়ালম নয়, দক্ষিণ ভারতের সব ভাষার চলচ্চিত্র মিলিয়েও নারীপ্রধান সিনেমার মধ্যে এটিই এখন সর্বোচ্চ আয়কারী।

মুক্তির ২৮তম দিনেও থেমে থাকেনি ছবির জয়যাত্রা। সেদিনও আয় করেছে ৪৭ লাখ রুপি, ফলে ভারতের ভেতরেই মোট আয় দাঁড়িয়েছে ১৪০ কোটিতে। বিশ্বব্যাপী আয়ের অঙ্ক ছাড়িয়েছে ২৮০ কোটি রুপি, যা চলতি বছরের অন্যতম বড় চমক।
গল্প ও অভিনয়-
দুলকার সালমান প্রযোজিত সিনেমাটির পরিচালক ডমিনিক অরুণ কাহিনি সাজিয়েছেন কেরালার লোককথার কিংবদন্তি চরিত্র কল্লিয়ানকাট্টু নীলিকে কেন্দ্র করে। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন কল্যাণী প্রিয়দর্শন। তাঁর সঙ্গে আছেন স্যান্ডি, অরুণ কুরিয়ান ও নাসলেন। বিশেষ চরিত্রে রয়েছেন দুলকার সালমান, অতিথি চরিত্রে টোভিনো থমাস।
পরিচালক জানিয়েছেন, সিরিজের দ্বিতীয় কিস্তি ঘুরবে টোভিনো থমাসকে ঘিরে, আর তৃতীয় কিস্তিতে কেন্দ্রীয় ভূমিকায় থাকবেন দুলকার নিজেই।

কল্যাণীর সাফল্যের গল্প-
‘হৃদয়ম’ দিয়ে দর্শকের নজরে আসা কল্যাণী এবার লোকাহ–এর মাধ্যমে গড়লেন নতুন রেকর্ড। সমালোচক ও দর্শকের ভালোবাসায় আপ্লুত তিনি। এক সাক্ষাৎকারে কল্যাণী বলেন,
“ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য লাগছে। কাজ শুরু করার সময় ভাবিনি এত বড় কিছু হবে। ভেবেছিলাম কেবল একটি ভালো গল্পের অংশ হব। দর্শক ছবিটিকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, তা এখনো অবাস্তব মনে হচ্ছে।”
নিজের চরিত্র নিয়ে তিনি বলেন, “চরিত্রটির শরীরী ভাষা, গাম্ভীর্য আমার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে একেবারেই মেলে না। সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। পরিচালক ও নির্মাতার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভরসা করেই চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছি।”

কঠোর প্রস্তুতির অভিজ্ঞতা-
চরিত্রের প্রয়োজনে কল্যাণীকে নিতে হয়েছে দীর্ঘ প্রস্তুতি। মাসের পর মাস ধরে করেছেন স্ট্রেংথ ট্রেনিং, রোপ ট্রেনিং, হারনেস ট্রেনিং, মুয়াই থাই ও বক্সিং অনুশীলন। অ্যাকশন কোরিওগ্রাফার ইয়ানিক বেনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ঘুষি ও নড়াচড়া স্বাভাবিক করতে হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “এটি শুধু আমার একার চেষ্টা নয়, পুরো টিমের কাজ। আমি প্রাণপণ চেষ্টা করেছি, বাকিটা কারিগরি দল নিখুঁতভাবে সামলেছে।”
কল্যাণীর বিশ্বাস, এই সিনেমা তাঁর ক্যারিয়ারকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।