প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহ হত্যার ঘটনায় ২৯ বছর পর অবশেষে হত্যা মামলা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এই মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। রমনা থানা পুলিশ ইতিমধ্যে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছে।
দীর্ঘ প্রায় তিন দশক ধরে ছেলের হত্যার বিচার দাবিতে লড়াই করে আসা সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী এখন কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।
লন্ডন থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই ২৯ বছর ধরে কত কষ্ট পেয়েছি—মানুষ আমার ছেলেকে খারাপ বলেছে, আমাকে খারাপ বলেছে। কেউ কেউ বলেছে আমি নিজের ছেলেকে মেরেছি। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল, একদিন আইনের মাধ্যমে প্রমাণ হবে এটা খুন।”
নীলা চৌধুরী আরো বলেন, “আদালতের নির্দেশে এখন মনে হচ্ছে ন্যায়বিচারের পথে এগোচ্ছি। মামলার অগ্রগতি এত দ্রুত হবে ভাবিনি। এখন আমার শরীর-মন ফাঁকা মনে হলেও ভরসা পেয়েছি—অবশেষে ন্যায়বিচার পাব।”
তিনি জানান, দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে নানা পক্ষ থেকে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। “অনেকেই আমাকে হুমকি দিয়েছে। ডন, সামিরা, আজিজ—এরা সবাই আমার বিরুদ্ধে কথা বলেছে। কিন্তু সত্য একদিন প্রকাশ পেতেই হতো” বলেন নীলা চৌধুরী।
অভিনেতা ডনের নাম উল্লেখ করে তিনি আরো অভিযোগ করেন, “এক মাস আগেও ডন আমাকে হুমকি দিয়েছে। বলেছে প্রেসক্লাবের সামনে যেতে। ভাবুন, যে লোকটা একসময় আমার ছেলের পেছনে ঘুরত, সে আজ আমাকে হুমকি দেয়! তার এমন সাহস আসে কোথা থেকে?”
সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি, বরং পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে—এ দাবি পুনর্ব্যক্ত করে নীলা চৌধুরী বলেন, “খুনের চিহ্ন আর আত্মহত্যার চিহ্ন আলাদা। ওর শরীরে খুনের প্রমাণ ছিল। সামিরার ঘনিষ্ঠ লোকজন নিজেরাই একসময় স্বীকার করেছে কীভাবে খুনটা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে লোক এনে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। আজিজ মোহাম্মদের ভাড়া করা ফ্ল্যাটগুলোতেই ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আমি ২৯ বছর ধরে বলে আসছি, আমার ছেলে আত্মহত্যা করার মতো মানুষ না। এই মামলার রায়ে এখন আমার আশা, যারা এত বছর ধরে আমাকে হুমকি দিয়েছে এবং আমার ছেলের হত্যায় জড়িত ছিল, তাদের সবাইকে বিচার পেতে হবে।”

