জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান সম্প্রতি গান, অভিনয় ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে একে একে সরে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের পর থেকেই বিনোদন অঙ্গনে জোর গুঞ্জন—তাহসান নাকি শিগগিরই কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে যাচ্ছেন এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিতে পারেন। তবে এসব গুঞ্জনকে পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন তিনি নিজেই।
সম্প্রতি ঢাকায় এক উৎসবের উদ্বোধনে উপস্থিত হয়ে তাহসান বলেন, “অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন কনসার্টে যখন গান ছাড়ার কথা বলেছিলাম, তখন খুব কম মানুষ ছিল। ভাবিনি, সেটি এভাবে সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে। অভিনয় থেকে যেমন ধীরে ধীরে সরে এসেছি, গান থেকেও তেমনই ধীরে ধীরে বিরতি নিচ্ছি। আমি একটু আবেগপ্রবণ মানুষ, কবির মতো বলে ফেলেছিলাম—আর সেটাই ভাইরাল হয়ে গেছে।”
তিনি আরো জানান, তাঁর ছবি বিকৃত করে টুপি পরিয়ে একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, যা পুরোপুরি মনগড়া। তাহসানের ভাষায়, “আমার ছবিতে টুপি এঁকে কিছু মানুষ ভাইরাল হওয়ার নেশায় এসব করছে। এটা এখন এক ধরনের খেলা হয়ে গেছে—কে কীভাবে ভাইরাল হবে, সেটাই যেন লক্ষ্য। তাই এখন কথা বলার সময়ও অনেক ভাবতে হয়।”
তাহসান বর্তমানে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চান। তিনি বলেন, “প্রত্যেক মানুষের জীবনে নানা অধ্যায় আসে। আমি এখন এমন এক পর্যায়ে আছি, যেখানে মনে হচ্ছে—জীবন ও জগৎ সম্পর্কে কিছুই জানি না। তাই পড়াশোনার মধ্য দিয়েই নতুন করে নিজেকে জানতে চাই।”
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে নিজের অনুপস্থিতি নিয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই শিল্পী। প্রায় এক কোটি অনুসারীর ফেসবুক পেজ ও ৩৫ লাখ ইনস্টাগ্রাম অনুসারী থাকা সত্ত্বেও সব প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।
তাহসানের মতে, “অবসরে যাওয়া মানুষের এসবের প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন ভীষণ টক্সিক হয়ে গেছে। ভালো কিছুর চেয়ে খারাপ বিষয়ই বেশি ছড়ায়। আমি চাই মানুষ আস্তে আস্তে আমাকে ভুলে যাক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকলে সেটা সম্ভব না।”
গান ও অভিনয় ছাড়ার ঘোষণা তাঁর ভক্তদের হতাশ করেছে। তবে তাহসান জানান, এই সিদ্ধান্ত তাঁর কাছে সহজ ছিল না। “সত্যি বলতে, কষ্ট আমারই বেশি হচ্ছে। গানকে আমি জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবেসেছি। কিন্তু জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা এতটাই তীব্র ও করুণ ছিল যে, আমার জন্য এই প্রস্থানই একমাত্র পথ। আমি এখন কেবল সাধারণ একটি জীবন ফিরে পেতে চাই” বলেন তিনি।

