থাইল্যান্ডের ব্যাংককে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত হয় ‘মিস ইউনিভার্স ২০২৫’-এর ফাইনাল। প্রতিযোগিতার শেষ মুহূর্তে সেরার মুকুট জিতে আলোচনায় উঠে আসেন ফাতিমা বশ। গালফ নিউজ জানিয়েছে, মেক্সিকোর এই তরুণীর যাত্রা শুধু সৌন্দর্যের প্রতিযোগিতা নয়—বিতর্ক, দৃঢ়তা ও আত্মবিশ্বাসে গড়া এক অনন্য গল্প।
ফাতিমা বশ কে?
মেক্সিকোর তাবাস্কো অঙ্গরাজ্যের সান্তিয়াগো দে তেয়াপায় জন্ম ফাতিমার। ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে পড়েছেন দেশে। এরপর কিছুদিন কাটিয়েছেন ইতালির মিলানে ও যুক্তরাষ্ট্রের ভারমন্টে। শৈশবে ডিসলেক্সিয়া ও এডিএইচডির কারণে বুলিংয়ের শিকার হলেও সেই দুর্বলতাকেই শক্তিতে পরিণত করেছেন তিনি।
২০১৮ সালে ‘ফ্লোর ডি ওরো’ খেতাব জয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার প্রতিযোগিতার যাত্রা। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ‘মিস ইউনিভার্স মেক্সিকো’ হন—তাবাস্কো থেকে প্রথম নারী হিসেবে। এরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার অনুসারীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ে; ইনস্টাগ্রামে ৯ লাখ ৯০ হাজার এবং টিকটকে ৬ লাখ ৯০ হাজারের বেশি।
কেন বিতর্ক ঘিরে রেখেছিল ফাতিমাকে
‘মিস মেক্সিকো ২০২৫’ মুকুট জয়ের পরই তৈরি হয় তীব্র বিতর্ক। অনেকে ধারণা করেছিলেন ‘মিস জালিস্কো’ ইয়োয়ানা গুতিয়েরেস জিতবেন। কিন্তু ফাতিমার নাম ঘোষণার পর মঞ্চে দুয়ো ওঠে।
আরও বিস্ময়ের বিষয়—৪ জন ছাড়া কেউ তাকে অভিনন্দন জানায়নি। তারা হলেন লোরেনা লোপেজ, ফের্নান্দা পুমা, এমিরে আরেয়ানো ও এলেনা রোলদান।
সব সমালোচনার মধ্যেও ফাতিমা নিজের মর্যাদা বজায় রাখেন। ইউএস উইকলিকে তিনি বলেন, ‘যারা আমাকে সত্যিকারের ভালোবাসেন, তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। কেউ আমাকে মুকুট উপভোগ করা থেকে বিরত রাখতে পারবে না।’
ব্যাংককে নতুন বিতর্ক
ব্যাংককে ‘মিস ইউনিভার্স ২০২৫’-এর স্যাশ অনুষ্ঠানে আবারও বিতর্কে জড়ান ফাতিমা। আয়োজকদের একজন কর্মকর্তা নাওয়াত ইতসারাগ্রিসিল অভিযোগ করেন—ফাতিমা থাইল্যান্ডকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যথেষ্ট প্রচার করেননি। তিনি ফাতিমাকে ‘ডাম্বহেড’ বলে কটূক্তি করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন প্রতিযোগী অনুষ্ঠান ছেড়ে যান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ডাকা হয় নিরাপত্তা বাহিনী।
ফাতিমা বলেন, ‘তিনি আমাকে ডাম্ব বলেছেন, কারণ তার সংস্থার সঙ্গে সমস্যা আছে। এটা অন্যায়। কেউ আমাদের চুপ করাতে পারবে না।’
ঘটনার পর ‘মিস ইউনিভার্স অর্গানাইজেশন’-এর সভাপতি রাউল রোচা নাওয়াতের আচরণকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানান।
ফাতিমা বলেন, ‘আমি সাজানো পুতুল নই। আমি এখানে এসেছি সেই নারী ও মেয়েদের কণ্ঠস্বর হতে, যারা তাদের অধিকার ও স্বপ্নের জন্য লড়াই করছে।’
দাতব্য কাজে সক্রিয়
মিস ইউনিভার্স প্ল্যাটফর্মে সমাজসেবার গুরুত্ব অনেক। ফাতিমা ৯ বছর ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন।

