বিভিন্ন দেশের যেমন ভূ-সীমা রয়েছে, তেমনি মহাকাশ নিয়েও রয়েছে মানুষের সীমাহীন কৌতূহল- বিশেষ করে সৌরজগতের শেষ সীমানা নিয়ে। তবে সৌরজগতের কোনও কংক্রিট বা দৃশ্যমান প্রাচীর নেই, যার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে বলা যায় “এখানেই শেষ”। এই সীমা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় নির্ভর করে নানা স্তরে বিভক্ত। সূত্র: নাসা
প্রাথমিকভাবে, সৌরজগতের শেষ ধরা হয় নেপচুন গ্রহ পর্যন্ত, যা সূর্য থেকে প্রায় ৩০ জ্যোতির্বিদ্যা একক (AU) দূরে। এরপর শুরু হয় কুইপার বেল্ট- একটি বরফ-পাথরের বস্তুর অঞ্চল, যা ৩০ থেকে ৫৫ AU পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে অবস্থান করছে প্লুটো ও আরও কয়েকটি বামন গ্রহ। এই অঞ্চলকে সৌরজগতের প্রধান অংশের শেষ বলে মনে করেন অনেকে।
এর পরের স্তরে রয়েছে হেলিয়োপজ, যেখানে সৌরবায়ুর গতি কমে আসে এবং সূর্যের প্রভাব ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে। এটি হেলিওস্ফিয়ারের বহির্ভাগ- সূর্যের চারপাশে চার্জযুক্ত কণার প্রবাহে গঠিত এক বুদ্বুদ- যা ১২০ AU পর্যন্ত বিস্তৃত। নাসার ভয়েজার ১ ও ২ মহাকাশযান ইতিমধ্যে এই সীমা অতিক্রম করে আন্তনাক্ষত্রিক স্থানে প্রবেশ করেছে।

সবচেয়ে বাইরের স্তর হলো ওর্ট মেঘ- এক বিশাল গোলাকার অঞ্চল, যেটি সৌরজগতকে ঘিরে দুই হাজার থেকে দুই লাখ AU পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি এখনও প্রত্যক্ষভাবে পর্যবেক্ষণ করা না গেলেও, বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস অনুযায়ী এখান থেকেই বহু দীর্ঘমেয়াদি ধূমকেতুর উৎপত্তি। ওর্ট মেঘকে সৌরজগতের শেষ মহাকর্ষীয় সীমানা হিসেবে ধরা হয়।
এই বিপুল বিস্তৃতির মানে হলো, সৌরজগত কোনো একরেখায় শেষ হয় না- বরং এটি স্তরবিন্যাসে প্রসারিত এক মহাকাশীয় এলাকা, যার শেষ সীমা সময় ও প্রযুক্তির চেয়ে অনেক এগিয়ে। ভবিষ্যতের গবেষণাই জানাবে, এই সীমানার পরে কী অপেক্ষা করছে।

