সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীরা স্তন ও ত্বকের ক্যানসার নির্মূলে একটি নতুন ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেছেন, যা রোগীদের জন্য নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। এই নতুন ওষুধ ‘ইমিউনোথেরাপি’ প্রচলিত কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশনের তুলনায় বেশি কার্যকর হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, কারণ এটি ক্যানসার কোষ নির্মূল করার পাশাপাশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়।
নতুন ওষুধটি, যার নাম সিডি৪০ ২১৪১-ভি১১, সরাসরি টিউমারের ওপর প্রয়োগ করা যায়। নির্দিষ্ট ডোজে প্রয়োগ করলে এটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী টিউমার কোষ ধ্বংস করতে সক্ষম।
আমেরিকার রকফেলার ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ১২ জন ক্যানসার রোগীর ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুইজনের ক্যানসার সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। সিডি৪০ ২১৪১-ভি১১ একটি মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি, যা টিউমার কোষ ধ্বংস করতে বিশেষ সক্ষম বলে গবেষকরা জানাচ্ছেন। খবরটি ‘ক্যানসার সেল’ মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষক হুয়ান ওসোরিও জানিয়েছেন, সিডি৪০ ওষুধটি বছরের আগেও গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে ছিল। তবে মানুষের শরীরে প্রাথমিক প্রয়োগে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি। এরপর ওষুধটির ফর্মুলায় পরিবর্তন আনা হয় এবং নতুনভাবে এটি তৈরি করা হয়। গবেষকরা আশাবাদী, সিডি৪০ ২১৪১-ভি১১ স্তন ক্যানসার, ত্বকের ক্যানসার বা মেলানোমা, প্রস্টেট ক্যানসার ও ব্লাডার ক্যানসার নির্মূল করতে কার্যকর হবে।
ক্যানসারের চিকিৎসা সাধারণত অত্যন্ত কষ্টদায়ক। কেমোথেরাপি ও রেডিয়োথেরাপি সুস্থ কোষকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। ইমিউনোথেরাপিতে রোগীর নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ক্যানসার কোষের বিরুদ্ধে লড়াই করানো হয়। এতে ক্যানসার কোষ ধ্বংস হওয়ার পাশাপাশি শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ শক্তিও বৃদ্ধি পায়।
বর্তমানে এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। প্রথম ফলাফলে দেখা গেছে, ৬ জন রোগীর টিউমার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ হয়েছে এবং দুইজন সম্পূর্ণ ক্যানসারমুক্ত হয়েছেন। গবেষকরা আরও কিছু মানুষের ওপর পরীক্ষা চালানোর মাধ্যমে নিশ্চিত তথ্য জানাবেন।

