Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sat, Dec 13, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিশ্বনেতাদের ক্ষমতা, পতন ও চূড়ান্ত পরিণতি
    ফিচার

    মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিশ্বনেতাদের ক্ষমতা, পতন ও চূড়ান্ত পরিণতি

    মনিরুজ্জামানNovember 29, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    গত বছর জুলাই অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সম্প্রতি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে তারই তৈরি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

    তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ, হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। অনুপস্থিতিতে বিচার ও মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর শেখ হাসিনাকে এখন ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করা যাবে কি না সেই বিতর্ক চলমান।

    প্রশ্ন উঠছে যে এখানেই কি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পরিসমাপ্তি ঘটবে? তবে কেবল শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেই নয়,যুগে যুগে এমন প্রশ্ন উঠেছে ইতিহাসের বহু নেতার বেলায়, যাদের উত্থান ছিল নাটকীয়, প্রভাব বিস্তারের সময় ছিল তুমুল আলোচিত, আর পতন ছিল আরো বেশি ঝড়ো। একনায়কতন্ত্র বা সামরিক রাজতন্ত্র — ক্ষমতা হারানোর পর বহু শাসককে তাদেরই দেশবাসীর আদালতে দাঁড়িয়ে চূড়ান্ত সাজা, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে হয়েছে। কারো সাজা ঘোষণার পর খুব দ্রুত তা কার্যকর হয়েছে, কেউ আবার মৃত্যুদণ্ড পেয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছেন বা পরে ক্ষমতায়ও ফিরেছেন।

    রাজা প্রথম চার্লসের পোর্ট্রেট
    লন্ডনে প্রকাশ্যে রাজা প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল।

    আবার এমনও উদাহরণ আছে, যেখানে মৃত্যুদণ্ড নেতার রাজনৈতিক ভাবমূর্তিকে শেষ করে দেয়নি; বরং ইতিহাসে তাদের প্রভাব আরো দীর্ঘস্থায়ী করেছে। এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো পৃথিবীর বিভিন্ন সময় ও ভূখণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতার উত্থান-পতনের ইতিহাস, এবং তাদের মৃত্যুর পর বদলে যাওয়া রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা।

    ইংল্যান্ডের প্রথম চার্লস — রাজতন্ত্র ভাঙনের উদাহরণ:

    ইউরোপে প্রথমবারের মতো কোনো রাজাকে তার নিজের প্রজারাই আদালতে দাঁড় করিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ইংরেজ গৃহযুদ্ধের অস্থিরতায় রাজা চার্লস প্রথমের নানা সিদ্ধান্ত — অনুমোদন ছাড়া কর আরোপ, বিতর্কিত ধর্মীয় সংস্কার, সংসদ ভেঙে ব্যক্তিগত শাসন — জনগণের ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটায়। সংসদের সঙ্গে সংঘাত শেষে অলিভার ক্রমওয়েলের নেতৃত্বে সংসদীয় বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়ে বন্দী হন চার্লস। রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ১৬৪৯ সালের জানুয়ারিতে লন্ডনে প্রকাশ্যে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

    প্রথম চার্লসের মৃত্যু পরোয়ানা
    প্রথম চার্লসের মৃত্যু পরোয়ানা

    চার্লসের মৃত্যুর পর রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয় এবং ইংল্যান্ডে কমনওয়েলথ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও ১৬৬০ সালে চার্লস দ্বিতীয়-এর মাধ্যমে রাজতন্ত্র ফিরেছিল, প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ড ইতিহাসে এক স্থায়ী নজির হয়ে রয়ে গেছে — রাজাও আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

    ফ্রান্সের লুই ষোড়শ — বিপ্লব বদলে দিল রাজতন্ত্রের ইতিহাস:

    ১৭৭৪ সালে সিংহাসনে বসা লুই ষোড়শকে শুরুতে সৎ কিন্তু দুর্বল শাসক বলে বিবেচনা করা হতো। আর্থিক সংকট, সামাজিক বৈষম্য আর অভিজাতদের অনমনীয়তা ফরাসি রাজতন্ত্রকে দুর্বল করে। স্ত্রী মেরি অ্যান্টোইনেটের বিলাসী ভাবমূর্তি রাজার জনপ্রিয়তাকে আরো ক্ষতিগ্রস্ত করে। ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লব শুরু হলে লুই সাংবিধানিক রাজতন্ত্র মেনে নিতে বাধ্য হন। কিন্তু ১৭৯১ সালে পরিবারের সঙ্গে পালানোর চেষ্টায় ধরা পড়লে তাকে জাতির বিশ্বাসঘাতক হিসেবে দেখা শুরু হয়। ১৭৯২ সালে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিচারের পর ১৭৯৩ সালের জানুয়ারিতে গিলোটিনে লুই ষোড়শের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

    ফ্রান্সের লুই ষোড়শের পোর্ট্রেট
    ফ্রান্সের লুই ষোড়শের পোর্ট্রেট।

    ফ্রান্স প্রবেশ করে ‘রেইন অব টেরর’-এর (সন্ত্রাসের রাজত্ব) অস্থির সময়ে, যেটি মূলত ফরাসি বিপ্লবের সময় (১৭৯৩-১৭৯৪) জ্যাকবিনদের অধীনে থাকা সময়কাল, যখন প্রতিবিপ্লবী সন্দেহে বহু মানুষকে গ্রেপ্তার ও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। প্রতিবিপ্লব দমনে হাজার হাজার মানুষকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বিপ্লবের এই অশান্ত পরিবেশ থেকেই পরবর্তী সময়ে উঠে আসেন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।

    মেরি অ্যান্টোইনেট — রাজকীয় আধিপত্য আর অপচয়ের প্রতীক:

    অস্ট্রিয়ান রাজবংশে জন্ম নেওয়া মেরি অ্যান্টোইনেট ফ্রান্সে একসময় প্রভাবশালী রানী হলেও জনগণ তাকে রাজকীয় অপচয়ের প্রতীক হিসেবে দেখত। বিপ্লবের সময় পালানোর ব্যর্থ প্রচেষ্টা এবং বিদেশী শক্তি — বিশেষ করে অস্ট্রিয়ার সাথে যোগাযোগের অভিযোগ তার ভাবমূর্তি আরও ক্ষুণ্ণ করে। ১৭৯২ সালে তাকে সন্তানদের থেকে আলাদা করে কারাবন্দী করা হয়। বিপ্লবী ট্রাইব্যুনাল তাকে রাষ্ট্রদ্রোহ, ষড়যন্ত্রসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করে। ১৭৯৩ সালের অক্টোবরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

    রানী মেরি অ্যান্টোইনেটের পোর্ট্রেট
    মেরি অ্যান্টোইনেট ছিলেন ফরাসী বিপ্লবের আগে ফ্রান্সের শেষ রানী।

    মেরি অ্যান্টোইনেটের মৃত্যু বিপ্লবীদের আরো শক্ত অবস্থানে ঠেলে দেয়। সন্ত্রাসের রাজত্ব আরো তীব্র হয় এবং ফ্রান্স দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যায়।

    মেক্সিকোর সম্রাট ম্যাক্সিমিলিয়ান — বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদের জয়:

    অস্ট্রিয়ার আর্চডিউক ম্যাক্সিমিলিয়ানকে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন তৃতীয় মেক্সিকোর সিংহাসনে বসান। রক্ষণশীলদের সমর্থন পেলেও তার উদারনৈতিক নীতি তাদের হতাশ করে। ১৮৬৬ সালে ফরাসি সেনা প্রত্যাহারের পর ম্যাক্সিমিলিয়ানের শাসন ভেঙে পড়ে। দেশ ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়ে যুদ্ধ অব্যাহত রাখলে রিপাবলিকান বাহিনীর হাতে বন্দী হন ম্যাক্সিমিলিয়ান। তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে কোর্ট-মার্শাল করে ১৮৬৭ সালে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

    অস্ট্রিয়ার আর্চডিউক ম্যাক্সিমিলিয়ানের পোর্ট্রেট
    অস্ট্রিয়ার আর্চডিউক ম্যাক্সিমিলিয়ান তার মৃত্যুদন্ডের আগ পর্যন্ত সেকেন্ড মেক্সিকান এম্পায়ারের একমাত্র সম্রাট হিসাবে শাসন করেছেন।

    মৃত্যুদণ্ডের পর বেনিটো হুয়ারেজের নেতৃত্বে রিপাবলিকান শাসন পুনর্বহাল হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শক্তিশালী সংস্কার হয়। মেক্সিকোতে বিদেশি শাসনের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদ শক্তিশালী হয় এবং প্রজাতন্ত্র ভিত্তি পায়।

    নেপোলিয়ন বোনাপার্ট — মৃত্যুদণ্ড নয়, নির্বাসনেই শেষ ক্যারিয়ার:

    ফরাসি বিপ্লবের বিশৃঙ্খলার মধ্যে সামরিক প্রতিভা হিসাবে উঠে আসা নেপোলিয়ন ইউরোপ জুড়ে ফরাসি প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্য নিয়ে একের পর এক যুদ্ধ চালান। কিন্তু রাশিয়া অভিযানের ব্যর্থতা ও ইউরোপীয় জোটের প্রতিরোধে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন। তাকে ১৮১৪ সালে এলবা দ্বীপে নির্বাসিত করা হয়। সাময়িকভাবে ১৮১৫ সালে ক্ষমতায় ফিরে এলেও ওয়াটারলুর যুদ্ধে চূড়ান্ত পরাজয়ের পর ব্রিটিশরা তাকে সেন্ট হেলেনায় নির্বাসনে পাঠায়। ১৮১৬ সালে তার অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি।

    ফ্রান্সের নরম্যান্ডিতে অশ্বারোহীর বেশে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের মূর্তি
    ওয়াটারলু যুদ্ধে পরাজয়ের পর সেন্ট হেলেনায় নির্বাসিত হন নেপোলিয়ন বোনাপার্ট।

    সেন্ট হেলেনার বন্দিত্বেই ১৮২১ সালে মারা যান তিনি। নেপোলিয়নের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ফরাসি সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার একটি যুগের সমাপ্তি ঘটে। তবে তার উত্তরাধিকার টিকে থাকে, যা ইউরোপীয় আইন, শাসন ও সামরিক কৌশলকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।

    সান ইয়াত-সেন — মৃত্যুদণ্ডের সাজা এড়িয়ে বিপ্লবের নায়ক:

    আধুনিক চীনের জনকখ্যাত সান ইয়াত-সেন পশ্চিমা শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে কিং সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিপ্লবী আন্দোলন গড়ে তোলেন। তাকে ১৮৯৫ সালের ব্যর্থ গুয়াংজু বিদ্রোহের পর নির্বাসনে যেতে হয় এবং অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। লন্ডনে ১৮৯৬ সালে অপহরণের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মুক্তি পান সান। এরপর তিনি বিশ্বব্যাপী সমর্থন আদায়ে যুক্ত থাকেন এবং ১৯১১ সালের বিপ্লবে কিং রাজবংশ পতন হলে চীন প্রজাতন্ত্রের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হন।

    সান ইয়াত-সেন

    সান ইয়াত-সেন ছিলেন চীন প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি যাকে বেইজিং ও তাইপেই বিংশ শতাব্দীর একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

    মৃত্যুদণ্ডের হুমকি তার নেতৃত্বকে থামাতে পারেনি। বরং তাকে আধুনিক চীনা জাতীয়তাবাদের স্থপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি ঘোষণার পরও বেঁচে থাকা জাতির রাজনৈতিক রূপান্তরকে অনেকটাই প্রভাবিত করেছে।

    ইয়াসির আরাফাত — মৃত্যুদণ্ডের রায় পেরিয়ে নোবেল বিজয়:

    ফিলিস্তিনি জাতীয়তাবাদের প্রতীক ইয়াসির আরাফাতকে ১৯৭০-এর দশকে জর্ডানের সঙ্গে সংঘাতের কারণে অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। তবে সাজা থাকা সত্ত্বেও আরাফাত নির্বাসন থেকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা পিএলও-এর নেতৃত্ব দেন এবং ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক কূটনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। ১৯৯০-এর দশকে অসলো চুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

    আলজিয়ার্সে ১৬তম ফিলিস্তিনি জাতীয় পরিষদের সভায় ইয়াসির আরাফাত
    আলজিয়ার্সে ১৬তম ফিলিস্তিনি জাতীয় পরিষদের সভায় ইয়াসির আরাফাত।

    মৃত্যুদণ্ডের রায় রাজনৈতিকভাবে তাকে আরো শক্তিশালী করে। তার উত্তরাধিকার রয়ে গেছে দীর্ঘ সংঘাত, সমালোচনা ও বিভক্তির জটিল আবহে। নোবেল পুরষ্কার তার কূটনৈতিক সাফল্যকে স্বীকৃতি দিলেও বিতর্ক চলেছে কয়েক দশকের সংঘাত, দুর্নীতির অভিযোগ আর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রত্ব নিয়ে চলমান বিরোধ ঘিরে।

    বেনিতো মুসোলিনি — ফ্যাসিবাদী শাসনের রক্তাক্ত পতন:

    ইতালির ফ্যাসিবাদী নেতা বেনিতো মুসোলিনিকে এমন একজন ইউরোপীয় স্বৈরশাসক হিসেবে দেখা হয় যার উচ্চাকাঙ্ক্ষা শেষ পর্যন্ত সহিংস পতনের দিকে গড়িয়েছে। বিরোধীদের দমন, সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণ এবং নাৎসি জার্মানির সঙ্গে জোট তার শাসনকে চরম প্রতাপশালী করেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইতালির বিপর্যয়ের পর পালানোর সময় বেনিতো মুসোলিনিকে ধরা হয়। সংক্ষিপ্ত বিচারের পর ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে তার মৃতদেহ মিলানে জনসমক্ষে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

    ইতালীয় ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসক বেনিটো মুসোলিনি এবং নাৎসি জার্মানির নেতা অ্যাডলফ হিটলার
    সেপ্টেম্বর ১৯৩৭: মিউনিখে ইতালীয় ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসক বেনিটো মুসোলিনি এবং নাৎসি জার্মানির নেতা অ্যাডলফ হিটলার।

    মুসোলিনির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ইতালি ফ্যাসিবাদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে। দেশটিতে ১৯৪৬ সালে গণভোটে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।

    নিকোলাই ও এলেনা চাউশেস্কু — গণঅভ্যুত্থানের চূড়ান্ত পরিণতি:

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নিকোলাই চাউশেস্কু রোমানিয়ায় প্রভাব তৈরি করেন। মস্কোর বিরোধিতা করে ১৯৬৫ সালে চেকোস্লোভাকিয়ায় ওয়ারশ চুক্তি আক্রমণের নিন্দা এবং স্বাধীন পররাষ্ট্র নীতি প্রচারের জন্য দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হন নিকোলাই চাউশেস্কু। তবে, এই প্রাথমিক জনপ্রিয়তার আড়ালে ছিল দমনমূলক শাসনব্যবস্থা। দশকের পর দশক দমনমূলক শাসন চালানো রোমানিয়ার নেতা চাউশেস্কু ও তার স্ত্রী এলেনা ১৯৮৯ সালের বিপ্লবে ক্ষমতাচ্যুত হন। সামরিক ট্রাইব্যুনাল তাদের গণহত্যা, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত করে বড়দিনে ২৫শে ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।

    চাউশেস্কু এবং তার স্ত্রী এলেনা
    চাউশেস্কু এবং তার স্ত্রী এলেনাকে একটি সামরিক ট্রাইব্যুনাল দোষী সাব্যস্ত করে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে।

    এই মৃত্যুদণ্ডে রোমানিয়ায় তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি ছিল বিশৃঙ্খলা, বিভ্রান্তি, এবং অনিশ্চয়তা। তবে দেশটি সেই বিশৃঙ্খল উত্তরণকাল পাড়ি দিয়ে ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের পথে এগোয়। যদিও পুরোনো শাসনের ভয়াবহতা জনমনে স্থায়ী দাগ রেখে যায়।

    সাদ্দাম হোসেন — একনায়কত্বের অবসান ও বিভক্ত ইরাক:

    ইরাকের বাথ পার্টি থেকে উঠে আসা সাদ্দাম হোসেন দমনপীড়ন, সামরিক অভিযান ও ভয়ভীতি ভিত্তিক শাসনের মাধ্যমে ক্ষমতা পোক্ত করেন। ইরান-ইরাক যুদ্ধ, কুয়েত আক্রমণ, জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা এবং অভ্যন্তরীণ দমন— তার শাসনকালকে আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত করে তোলে। ২০০৩ সালে মার্কিন আগ্রাসনের পর তাকে ধরা হয়। দুজাইল হত্যাকাণ্ডে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ২০০৬ সালে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

    ক্ষমতাচ্যুত ইরাকি রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন
    ২০০৬ সালের ২৮শে নভেম্বর বাগদাদে পুনরায় বিচার শুরু হওয়ার সময় ক্ষমতাচ্যুত ইরাকি রাষ্ট্রপতি সাদ্দাম হোসেন আদালতে বসে আছেন।

    সাদ্দামের পতনের পর ইরাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ে। ক্ষমতার শূন্যতার সুযোগে আল-কায়েদা ও পরবর্তীতে আইএস-এর উত্থান ঘটে। গণতান্ত্রিক কাঠামো গঠিত হলেও দেশটি দীর্ঘমেয়াদে বিচ্ছিন্নতা, সংঘাত ও অনিশ্চয়তার মধ্যেই রয়ে যায়।

    জুলফিকার আলী ভুট্টো — দক্ষিণ এশিয়ার তীব্র বিতর্কিত মৃত্যুদণ্ড:

    ক্যারিশম্যাটিক নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তানের রাজনীতিকে নতুন রূপ দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, ভুট্টো পাকিস্তানের অবশিষ্ট অংশ নেতৃত্বের দায়িত্ব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কিন্তু সামরিক শাসক জিয়াউল হকের সঙ্গে সংঘাতে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বিপর্যস্ত হয়। হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে বিতর্কিত বিচার প্রক্রিয়ায় ভুট্টোকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আন্তর্জাতিকভাবে এই বিচারের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ক্ষমার জন্য আবেদন সত্ত্বেও, ভুট্টোকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং ১৯৭৯ সালের এপ্রিলে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

     জুলফিকার আলী ভুট্টো
    নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছেন জুলফিকার আলী ভুট্টো।

    ভুট্টোর মৃত্যুদণ্ড পাকিস্তানে রাজনৈতিক মেরুকরণকে গভীর করে। তার পরিবার এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) আজও তাকে শহীদ নেতা হিসেবে তুলে ধরে; অন্যদিকে সমালোচকেরা তার বিচারকে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ বলেও দেখেন। ভুট্টো-পরবর্তী পাকিস্তান সামরিক-বেসামরিক ক্ষমতার দ্বন্দ্বে দীর্ঘ অস্থিরতার ভেতর দিয়ে এগিয়েছে। দেখে গেছে, ইতিহাসের আদালত কখনোই শেষ কথা বলে না।

    মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও কোনো কোনো শাসকের রাজনৈতিক যাত্রার ইতি টেনেছে, আবার কারো মৃত্যুর পরই তাদের প্রভাব আরো বিস্তৃত হয়েছে। রাজতন্ত্র, প্রজাতন্ত্র, বিপ্লব কিংবা একনায়কতন্ত্র— ক্ষমতার গল্পের শেষ অধ্যায়ে বহু নেতাই চরম শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু তারপর যে রাজনৈতিক ঢেউ তৈরি হয়েছে, তা অনেক ক্ষেত্রেই জাতির গতিপথ পাল্টে দিয়েছে দীর্ঘমেয়াদে।

    জুলফিকার আলী ভুট্টোর মেয়ে বেনজির ভুট্টো
    ছবির ক্যাপশান,পরবর্তীতে ভুট্টোর মেয়ে বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশটির রাজনীতিতে জুলফিকার আলী ভুট্টোর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবকে শক্তিশালী করে তোলে। সূত্র: বিবিসি
    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    ফিচার

    মহাকাশ থেকে তোলা ছবিতে জ্বলজ্বল করছে পবিত্র কাবা!

    December 6, 2025
    ফিচার

    জনবল নিচ্ছে সিটিজেনস ভয়েস

    December 3, 2025
    ফিচার

    গ্রাউন্ড-লঞ্চ মিসাইলের কৌশলগত রেঞ্জ: বাংলাদেশের জন্য কেন গুরুত্বপূর্ণ

    November 29, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.