Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Mon, Dec 29, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » যে স্বপ্ন কেড়ে নেয় অসংখ্য তরুণের জীবন
    ফিচার

    যে স্বপ্ন কেড়ে নেয় অসংখ্য তরুণের জীবন

    Najmus SakibDecember 29, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    ইতালি—একটি নাম, একটি স্বপ্ন। বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণের কল্পনায় ইতালি মানেই ইউরোপের দরজা, স্থায়ী কাজ, সম্মানজনক আয় এবং পরিবারের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যৎ। গ্রাম থেকে শহর, হাটের চায়ের দোকান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—সবখানেই ইতালির গল্প ঘোরে।

    কেউ বলছে, সেখানে গেলে আর ফিরে তাকাতে হয় না; কেউ দেখাচ্ছে প্রবাসজীবনের ঝলমলে ছবি। এই স্বপ্নই ধীরে ধীরে দেশের হাজারো তরুণকে ঠেলে দিচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক অভিবাসন রুটের দিকে—লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের পথে। কিন্তু এই স্বপ্নের বিনিময়ে যে মূল্য দিতে হচ্ছে, তা কেবল অর্থে নয়; দিতে হচ্ছে জীবন দিয়ে, দিতে হচ্ছে পরিবার ও প্রজন্মের ভবিষ্যৎ দিয়ে।

    সাম্প্রতিক সময়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে প্রবেশের চেষ্টাকারী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষে উঠে এসেছে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসেই অন্তত ৯ হাজার ৭৩৫ জন বাংলাদেশি এই পথে ইতালিতে প্রবেশ করেছেন। গত একযুগে এই সংখ্যা প্রায় ৭০ হাজারে পৌঁছেছে। ইউরোপের সীমান্তরক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্সের পরিসংখ্যান আরও ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে—২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ‘সেন্ট্রাল মেডিটেরিয়ান রুট’ ব্যবহার করে অন্তত ৯২ হাজার ৪২৭ জন বাংলাদেশি ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। এই রুটটি ইউরোপে প্রবেশের সবচেয়ে প্রাণঘাতী পথ হিসেবে পরিচিত, যেখানে নৌকাডুবি, গুলিবর্ষণ, নিখোঁজ ও মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।

    এই পরিসংখ্যানের পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের বাস্তব সামাজিক-অর্থনৈতিক সংকট। দেশে বেকারত্ব, অপ্রতুল কর্মসংস্থান, অস্থায়ী চাকরি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা তরুণদের মধ্যে গভীর হতাশা তৈরি করছে। অনেকের কাছে বিদেশযাত্রা আর বিলাসিতা নয়, বরং বেঁচে থাকার শেষ বিকল্প। পরিবার, আত্মীয়স্বজন এবং সমাজের চাপও এখানে বড় ভূমিকা রাখে—বিদেশে না গেলে যেন জীবনটাই ব্যর্থ।
    এই অসহায়তার সুযোগ নিয়েই সক্রিয় হয়ে ওঠে মানবপাচারকারী দালালচক্র। তারা নিজেদের পরিচয় দেয় ‘এজেন্সি’, ‘ভিসা অফিস’ কিংবা ‘ইউরোপ কানেকশন’ নামে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, পরিচিতজন কিংবা স্থানীয় মধ্যস্বত্বভোগীর মাধ্যমে তারা ছড়ায় স্বপ্নের ফাঁদ—নিরাপদ রুট, বৈধ কাজ, উচ্চ বেতন, এমনকি কাজ না পেলে শরণার্থী সুবিধার আশ্বাস। এই প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস করে মানুষ বিক্রি করে জমি, বন্ধক রাখে গহনা, নেয় উচ্চ সুদের ঋণ। একটি যাত্রা শুরু হওয়ার আগেই পরিবারগুলো ঢুকে পড়ে দীর্ঘমেয়াদি দারিদ্র্য ও অনিশ্চয়তার ফাঁদে।
    ভয়াবহ এই যাত্রার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে লিবিয়া—রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়া এক দেশ, যেখানে মিলিশিয়া, সশস্ত্র গোষ্ঠী ও মানবপাচারকারীরা কার্যত রাষ্ট্রের জায়গা দখল করে নিয়েছে। ইউরোপে পাঠানোর নামে যাদের সেখানে নেওয়া হয়, তাদের বড় অংশই ভালো কাজ তো দূরের কথা, ভয়াবহ বন্দিত্বের শিকার হন। লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে অভিবাসীদের আটকে রেখে চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন—মারধর, বৈদ্যুতিক শক, অনাহার, যৌন সহিংসতা। মুক্তিপণের জন্য পরিবারকে জিম্মি করে পাঠানো হয় নির্যাতনের ভিডিও, কান্নার অডিও। অনেক পরিবার শেষ সম্বল দিয়েও টাকা পাঠায়, কিন্তু মুক্তি মেলে না। বন্দিত্বের শেষ পরিণতি হয় মৃত্যু, অথবা মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রে ঠেলে দেওয়া।

    ব্র্যাকের গবেষণা এই বাস্তবতাকে পরিসংখ্যানের ভাষায় তুলে ধরে। লিবিয়া যাওয়ার পথে ৬৩ শতাংশ বাংলাদেশি কোনো না কোনোভাবে বন্দী হয়েছেন। বন্দীদের ৯৩ শতাংশ ক্যাম্পে আটক ছিলেন, ৭৯ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের শিকার এবং ৫৪ শতাংশ নিয়মিত তিনবেলা খাবার পাননি। ২২ শতাংশ মানুষ দিনে মাত্র একবেলা খাবার পেয়েছেন। এই সংখ্যাগুলো নিছক তথ্য নয়—এগুলো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের জীবন্ত দলিল।

    এই নির্মম বাস্তবতার একটি হৃদয়বিদারক উদাহরণ মাদারীপুরের তিন তরুণ—ইমরান খান, মুন্না তালুকদার ও বায়েজিদ শেখ। দালালদের প্রতিশ্রুতি ছিল স্বপ্নের মতো—সরাসরি ইতালি, বৈধ কাজ, মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা আয়, কাজ না পেলে রিফিউজি হিসেবে সরকারি সহায়তা। এই আশ্বাসে পরিবারগুলো বিক্রি করে জমি, ভেঙে ফেলে সঞ্চয়, নেয় ঋণ। প্রায় ৮০ লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছিল দালালদের হাতে। কিন্তু ইতালির বদলে তাদের গন্তব্য হয় লিবিয়ার বন্দিশালা।
    ইমরান খান মৃত্যুর আগে শেষবার তার মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। কাঁপা কণ্ঠে শুধু বলেন, “মা, এখানে আমাকে খুব মারছে।” এরপর সেই ফোন আর কখনো বেজে ওঠেনি। ১৮ দিন পর দালাল ফোন করে জানায়—পুলিশের গুলিতে সে মারা গেছে। একই দিনে একই ধরনের খবর আসে মুন্না ও বায়েজিদের ক্ষেত্রেও। ১ নভেম্বর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় তাদের গুলি করে হত্যা করা হয় এবং মরদেহ সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। আজও কোনো লাশ উদ্ধার হয়নি, কোনো রাষ্ট্র দায় নেয়নি, কোনো বিচার হয়নি।
    এই ঘটনাগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন সহিংসতা নয়। এগুলো একটি সুসংগঠিত আন্তর্জাতিক মানবপাচার অর্থনীতির অংশ, যেখানে মানুষই সবচেয়ে সস্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ পণ্য। প্রথম ধাপে স্বপ্ন বিক্রি হয়, দ্বিতীয় ধাপে বন্দিত্ব, তৃতীয় ধাপে মুক্তিপণ আদায়, আর শেষ ধাপে—মৃত্যু অথবা অনিশ্চিত সাগরযাত্রা। ভূমধ্যসাগর পাচারকারীদের কাছে সবচেয়ে সুবিধাজনক, কারণ সাগরে মৃত্যু মানেই প্রমাণহীন অপরাধ।
    মানবপাচারের রুট ও কৌশলও প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। আগে যেখানে সাগরপথই ছিল প্রধান, এখন যুক্ত হয়েছে ভিজিট ভিসা, কনফারেন্স ইনভাইটেশন, ভুয়া ওয়ার্ক পারমিট এমনকি হজ ভিসা। ঢাকা থেকে দুবাই-মিসর হয়ে লিবিয়া, ইস্তানবুল হয়ে লিবিয়া, কাতার হয়ে লিবিয়া—বহুমুখী রুট ব্যবহৃত হচ্ছে। নতুন করে যুক্ত হয়েছে দুবাই–সার্বিয়া–স্লোভেনিয়া হয়ে ইতালি, সৌদি আরব হয়ে রাশিয়া, এমনকি নেপাল ও কম্বোডিয়ার মতো দেশও পাচারের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
    নারী পাচারের চিত্র আরও ভয়াবহ ও নীরব। দুবাই বা মালয়েশিয়ায় বিউটি পার্লার কিংবা রেস্টুরেন্টে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে নারীদের পাঠানো হচ্ছে। সেখানে পৌঁছে তাদের আটকে রেখে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে ডান্সক্লাব ও যৌন ব্যবসায়। উদ্ধার হওয়া এক তরুণীর ভাষায়, “আমি কাঁদতাম, বলতাম আমি পারব না। কেউ শুনত না।” একই সঙ্গে বাংলাদেশিরা সাইবার অপরাধের জালে পড়ছেন। থাইল্যান্ড হয়ে মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে অস্ত্রের মুখে কাজ করতে বাধ্য হওয়ার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন উদ্ধার হওয়া ভুক্তভোগীরা।
    রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মানবপাচার দমনের চিত্রও উদ্বেগজনক। মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন থাকলেও বিচার প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মানবপাচার আইনে ৪ হাজার ৩৬০টি মামলা ঝুলে আছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৩৪৬টি এখনো তদন্তাধীন এবং ৩ হাজারের বেশি মামলা বিচারাধীন। বহু ক্ষেত্রে আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছে, আর প্রভাবশালী দালালচক্র রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।

    এই বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক মানব পাচার বিরোধী দিবসের প্রতিপাদ্য—‘সংঘবদ্ধ অপরাধ মানবপাচার, বন্ধ হোক শোষণের অনাচার’—কেবল একটি স্লোগানে পরিণত হচ্ছে। এই স্লোগান বাস্তবে রূপ দিতে হলে প্রয়োজন কার্যকর তদন্ত, দ্রুত বিচার, আন্তঃদেশীয় সহযোগিতা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে, অভিবাসন বিষয়ে মানবিক ও বাস্তবসম্মত রাষ্ট্রনীতি।

    ইমরান, মুন্না, বায়েজিদ—তারা কেবল তিনটি নাম নয়। তারা হাজারো পরিবারের ভাঙা স্বপ্ন, নীরব কান্না আর দীর্ঘ অপেক্ষার প্রতীক। যদি এই মৃত্যুগুলোর বিচার না হয়, যদি লিবিয়ার ক্যাম্পগুলো বন্ধ না হয়, যদি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান শাস্তি নিশ্চিত না করা যায়, তবে ভূমধ্যসাগর আরও বহু বাংলাদেশির অচিহ্নিত কবরস্থানে পরিণত হবে।লিবিয়ার বন্দিশালা হবে ভূমধ্যসাগরে হারিয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের অদেখা মানবিক বিপর্যয়।

    এই প্রতিবেদন তাই শুধু তথ্যের সংকলন নয়। এটি একটি মানবিক দলিল, একটি সতর্ক সংকেত এবং রাষ্ট্র ও সমাজের প্রতি কঠিন প্রশ্ন—আর কত স্বপ্ন লিবিয়ার বন্দিশালায় আটকে থাকবে, আর কত জীবন ভূমধ্যসাগরের ঢেউয়ের নিচে হারিয়ে যাবে? ভূমধ্যসাগরে হারিয়ে যাওয়া বাংলাদেশিরা কেবল পরিসংখ্যান নয়; তারা স্বপ্ন, পরিবার ও ভবিষ্যতের প্রতীক। এই নীরব ট্র্যাজেডিকে দৃশ্যমান করা, দায়বদ্ধতা এবং নিরাপদ বিকল্প তৈরি ও বাস্তবায়নই এই অদেখা মানবিক বিপর্যয়কে থামাতে পারে।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অর্থনীতি

    ২০২৬ শুরুতেই ডিজিটাল ইউয়ানের বড় পরিবর্তন আনছে চীন

    December 29, 2025
    মতামত

    রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ: ২০২৬ সালে ইউরোপ কেন ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে?

    December 29, 2025
    বাংলাদেশ

    ব্যর্থ ডেভিল হান্ট: প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিস্তর ব্যবধান, স্বরাষ্ট্রের জবাবদিহি কোথায়?

    December 29, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.