এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে হংকংকে ৯৪ রানে উড়িয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। শুধু জয় নয়, রানরেটও বাড়িয়েছে তারা। এখন মঙ্গলবারের ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে পারলে গ্রুপ-বি’তে এককভাবে শীর্ষে উঠবে রশিদ খানের দল।
অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই বড় হারে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে বাংলাদেশ। তাই বলা যায়, দুই দলের আত্মবিশ্বাসে আকাশ-পাতাল ফারাক।
হংকংয়ের বিপক্ষে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ষষ্ঠ নম্বরে নেমে মাত্র ২১ বলে ৫৩ রান করে তিনি আফগানিস্তানের হয়ে দ্রুততম অর্ধশতকের রেকর্ড গড়েন। তার সঙ্গে ৮২ রানের জুটি গড়েন সেদিকুল্লাহ আতাল, যিনি অপরাজিত থাকেন ৭৩ রানে।
বল হাতে আগের মতোই ভয়ঙ্কর ছিল আফগান বোলিং আক্রমণ। হংকং ব্যাটারদের দাঁড়াতেই দেয়নি তারা। রশিদ খান, নূর আহমদ কিংবা তরুণ এএম গজনফর – সবাই দায়িত্ব নিয়ে খেলেছেন। প্রবীণ মোহাম্মদ নবী প্রথম ম্যাচে বল হাতে নামেননি, তবে বাংলাদেশ ম্যাচে তাকে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
বাংলাদেশের ব্যাটিং শুরুতেই ভেঙে পড়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। প্রথম দুই ওভারেই দুটি মেইডেন এবং দুটি উইকেট হারায় তারা। লিটন দাস ও তৌহিদ হৃদয় ঘুরে দাঁড়াতে ব্যর্থ হন। পরে জাকার আলি ও শামীম হোসেন কিছুটা চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট হয়নি।
ফিল্ডিংয়েও ছিল একরাশ ভুল। সহজ ক্যাচ ফেলা, বাজে বোলিং আর অধিনায়কত্বে কিছু প্রশ্ন – সব মিলিয়ে দলের আত্মবিশ্বাসে বড় ধাক্কা লেগেছে। বিশেষ করে টাসকিন আহমেদকে বসিয়ে শরিফুল ইসলামকে খেলানোয় বোলিং আক্রমণ নড়বড়ে হয়ে পড়ে।
আফগানিস্তানের আজমতউল্লাহ ওমরজাই এখন দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অলরাউন্ডার। দ্রুত রান তোলার ক্ষমতা তো আছেই, পাশাপাশি বল হাতেও তিনি কার্যকর। তবে বাংলাদেশ বিপক্ষে এখনো বড় ইনিংস খেলতে পারেননি, সেটিই এবার চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের ভরসা শামীম হোসেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৪২ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেছেন তিনি। জাকার আলির সঙ্গে তার ৮৬ রানের জুটি বাংলাদেশকে কিছুটা আশা দেখালেও জয় এনে দিতে পারেননি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আবারও সেই দায়িত্ব তার কাঁধেই।
মাঠ ও আবহাওয়া
আবুধাবির উইকেটে এখন পর্যন্ত ব্যাটাররাই বেশি সুবিধা পাচ্ছেন, তবে বোলাররাও পুরোপুরি খালি হাতে ফিরছেন না। গরম আবহাওয়ায় কন্ডিশন সামলানো কঠিন হবে উভয় দলের জন্যই।
সম্ভাব্য একাদশ
আফগানিস্তান: সেদিকুল্লাহ আতাল, রহমানুল্লাহ গুরবাজ (উইকেটরক্ষক), ইব্রাহিম জাদরান, মোহাম্মদ নবী, গুলবাদিন নাইব, আজমতউল্লাহ ওমরজাই, করিম জানাত, রশিদ খান (অধিনায়ক), নূর আহমদ, এএম গজনফর, ফজলহক ফারুকি।
বাংলাদেশ: তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন ইমন, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকার আলি, মাহেদী হাসান, তানজিম হাসান সাকিব, রিশাদ হোসেন, টাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান।
আফগানিস্তান এখন উড়ন্ত ছন্দে। বিপরীতে, বাংলাদেশ শুরুতেই ধাক্কা খেয়ে ব্যাকফুটে। এই ম্যাচ জিততে না পারলে কার্যত এশিয়া কাপে বাংলাদেশের যাত্রাই থেমে যেতে পারে। তাই বলা যায়, এটি বাংলাদেশ দলের জন্য একপ্রকার বাঁচা-মরার লড়াই।