ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই তীব্র উত্তেজনা। যদিও সাম্প্রতিক দুই লড়াই একপেশে হয়েছে, তবু মাঠের ভেতর ও বাইরে তৈরি হওয়া চাপ খেলোয়াড়দের মুখ থেকে এমন কিছু কথা বের করে আনে, যা সাধারণত বলা হতো না। পাকিস্তানকে হারানোর পর ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এমনই এক মন্তব্য করেছেন—তিনি দাবি করেছেন, ভারত-পাকিস্তান আর কোনো “রাইভালরি” নয়।
এই মন্তব্যে অহংকারের গন্ধ পেলেও, অনেকেই মনে করছেন বর্তমান ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আর একপেশে ফলাফল সূর্যকুমারকে এমনভাবে বলতে প্ররোচিত করেছে। আসল প্রশ্ন হলো—ভারতের জন্য সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোথায়? ২০২৪ সালের শুরু থেকে ভারত খেলেছে ৩৫টি টি-টোয়েন্টি, এর মধ্যে হেরেছে মাত্র তিনটিতে।
অসাধারণ প্রতিভা আর সঠিক মানসিকতার মিশ্রণে ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর টি-টোয়েন্টি দল। দুবাইয়ের ধীরগতির উইকেটকে তারা কাজে লাগাচ্ছে দারুণভাবে—শুধু এক জন ফাস্ট বোলার নামিয়ে তাকে প্রথম তিন ওভারে ব্যবহার করে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে।
যারা ক্রিকেটকে পণ্য হিসেবে বাজারজাত করে, তাদের জন্য এই একচেটিয়া আধিপত্য সুখকর নয়। দর্শকদের টানতে তো প্রতিদ্বন্দ্বিতা চাই। সান্ত্বনার বিষয় একটাই—এই দুই বছরে ভারতের তিন পরাজয়ের একটি এসেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
বাংলাদেশ কিন্তু বিশ্বাস করছে, তারা পারবে অঘটন ঘটাতে। প্রথম পর্বেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে মেহেদী হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের জাদুকরী বোলিংয়ে (৮ ওভারে ৪৫ রান খরচে ৫ উইকেট)। এবার যদি ভারতকে হারানো যায়, তবে ফাইনালের রাস্তা উন্মুক্ত হবে। শেষবার ২০১৯ সালে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার কি ১৬-১ হেড-টু-হেড রেকর্ডে সামান্য হলেও পরিবর্তন আনা সম্ভব?
ভারতের পরীক্ষামূলক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মিডল-অর্ডারে খেলছেন সঞ্জু স্যামসন। তবে পুরনো বলে শুরু করা তার জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় হয়নি। তাই তাকেই নিয়ে বাড়তি আগ্রহ থাকবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভরসা মুস্তাফিজুর রহমান। ধীর উইকেটে তিনি সবচেয়ে কার্যকর। লঙ্কানদের বিপক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ভারতের বিপক্ষেও যদি তিনি সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশ বড় চমক দিতে পারে।
সম্ভাব্য একাদশ
ভারত: অভিষেক শর্মা, শুভমান গিল, তিলক ভার্মা, সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), সঞ্জু স্যামসন (উইকেটরক্ষক), শিবম দুবে, হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ, বরুণ চক্রবর্তী।
বাংলাদেশ: সাইফ হাসান, তানজিদ হাসান, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক), তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকার আলি, মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান।
দুবাইয়ের উইকেট এখনো ধীর, বিশেষ করে মিডল ওভারগুলোতে রান তোলা কঠিন হয়ে পড়ছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রচণ্ড গরম। ব্যাটসম্যানদের জন্য এ চ্যালেঞ্জ, তবে স্পিনার ও ভ্যারিয়েশন বোলারদের জন্য সুযোগও বটে।