অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি আবরার আহমেদ। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের ক্রিকেট দল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুলতানের ব্যাটিং স্বর্গে খেলতে নামলেও তাদের জয়লাভের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। দলের বাকি তিনটি উইকেট নিয়ে মঞ্চে নিজের জাদু প্রদর্শন করেন বাঁহাতি স্পিনার জ্যাক লিচ। ফলে, শেষ দিনের প্রথম সেশনে ইনিংস ও ৪৭ রানের ব্যবধানে হারতে হয় পাকিস্তানকে। এর ফলে তারা নাম লেখাল একটি অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডে।
টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে পাকিস্তানই প্রথম দল যারা প্রথম ইনিংসে অন্তত ৫০০ রান তুলে শেষ পর্যন্ত ইনিংস হারার তিক্ত অভিজ্ঞতা পেল। পাকিস্তানের ৫৫৬ রানের প্রথম ইনিংসের পরে ইংল্যান্ড ২৬৭ রানের লিড নিয়ে জবাব দেয়, যেখানে হ্যারি ব্রুকের ট্রিপল সেঞ্চুরি ও জো রুটের ডাবল সেঞ্চুরি দলের ইনিংসকে শক্তিশালী করে। তারা ইনিংস ঘোষণা করে ৭ উইকেটে ৮২৩ রান তুলে।
শুক্রবার পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংস ২২০ রানে থামে। আগের দিন ৬ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে খেলতে নেমে তারা ১৭.৫ ওভারেই শেষ হয়ে যায়। ম্যাচের প্রথম ঘণ্টায় কোন উইকেট না পড়লেও, চতুর্থ দিন শেষে অপরাজিত থাকা দুই ব্যাটার আগা সালমান ও আমির জামাল দৃঢ়তা দেখান। তাদের জুটি শতরান স্পর্শ করে ১২৯ বলে। কিন্তু পানি পানের বিরতির পর সালমান এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন। লাভ হবে না জানলেও তিনি রিভিউ নিয়ে থামেন ৮৪ বলে ৬৩ রানে।
৭ উইকেটের জন্য ১০৯ রানের জুটি ভাঙার পর পাকিস্তান আর বেশি দূর এগোতে পারেনি। জামাল ১০৪ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। শাহিন শাহ আফ্রিদি বিদায় নেন লিচকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। নাসিম শাহের ক্যাচ উইকেটরক্ষক জেমি স্মিথের হাতে পড়লে ইংলিশদের আনন্দে মাতার পালা আসে। এই জয় দিয়ে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ইংল্যান্ড ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল।
শান মাসুদের অধিনায়কত্বে পাকিস্তান টানা ছয়টি টেস্টে হারল। গত ডিসেম্বরে ও জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়া সফরে ৩-০ ব্যবধানে এবং আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে নিজেদের মাঠে বাংলাদেশের কাছে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয় তারা। এবার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিব্রতকর হারের অভিজ্ঞতা লাভ করে পাকিস্তান।
দেশের মাটিতে এটি টানা ১১ টেস্ট জয়হীন পাকিস্তানের জন্য একটি নতুন দুঃস্বপ্ন। তারা ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাওয়ালপিন্ডিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়লাভের পর থেকে একটিও টেস্ট জিততে পারেনি।
অতীতে, পাকিস্তান ঘরের মাঠে আর একবারই টানা ১১ টেস্ট জয়হীন ছিল। ১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সেই সময় তারা ১০ টেস্ট ড্র করে এবং একটিতে হার মানে। কিন্তু বর্তমানে তাদের অবস্থা একেবারে সঙিন; চারটি ড্র হলেও তারা সাতটি ম্যাচে হেরেছে।