দেশের পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন পর বিমা খাতের শেয়ারগুলো দাপট দেখিয়েছে। অধিকাংশ বিমা কোম্পানির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে যার ফলে বাজারে মোট লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সূচকের ক্ষেত্রে উল্টো প্রবণতা দেখা গেছে, কেননা অন্যান্য খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে।
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস, রবিবার (১৭ মার্চ) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ বিমা কোম্পানির শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও অন্যান্য খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। এতে মূল্যসূচকের সামান্য পতন হয়েছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে যা চার কার্যদিবসের টানা বৃদ্ধির পর সূচকের জন্য একটি সামান্য ব্যতিক্রম।
লেনদেনের শুরুতে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যেই বাজারের গতিপথ পরিবর্তিত হয়। ভালো মাঝারি ও দুর্বল—সব ধরনের প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগ শেয়ারের দাম কমতে থাকে। তবে বিমা খাতের শেয়ারগুলো বাজারের এই নিম্নমুখী প্রবণতার বিপরীতে অবস্থান ধরে রাখে এবং লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই ধারা অব্যাহত থাকে।
ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৮টি ‘এ’ গ্রুপভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৪টির শেয়ার দাম বেড়েছে ১০১টির কমেছে এবং ৩৩টির অপরিবর্তিত ছিল। ‘বি’ গ্রুপের ৩৩টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লেও ৪১টির কমেছে এবং ৮টির অপরিবর্তিত ছিল। মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৬টির দাম বেড়েছে ১২টির কমেছে এবং ১৮টির অপরিবর্তিত ছিল। ‘জেড’ গ্রুপের ৯৭টি কোম্পানির মধ্যে ২৬টির শেয়ার দাম বেড়েছে ৪৮টির কমেছে এবং ২৩টির অপরিবর্তিত ছিল।
সর্বমোট বাজারে ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য বেড়েছে বিপরীতে ১৯০টির দাম কমেছে এবং ৬৪টির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বিমা খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে ৪৯টির শেয়ার মূল্য বেড়েছে ৮টির কমেছে এবং ১টির অপরিবর্তিত রয়েছে। সূচকের দিক থেকে ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে ৫২২১ পয়েন্টে নেমেছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১ পয়েন্ট কমে ১১৬৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট কমে ১৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
লেনদেনের পরিমাণ বাড়লেও সূচক নিম্নমুখী ছিল। এদিন ডিএসইতে মোট ৪৪৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে যা আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৩৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি। স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস সর্বোচ্চ ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। ওরিয়ন ইনফিউশন ১১ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে দ্বিতীয় স্থানে ছিল এবং বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম ১১ কোটি ২১ লাখ টাকার লেনদেন করে তৃতীয় স্থানে ছিল।
লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ছিল শাইনপুকুর সিরামিক, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, লাভেলো আইসক্রিম, লিন্ডে বাংলাদেশ, গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো, কাট্টলী টেক্সটাইল এবং বিচ হ্যাচারি। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সামান্য উত্থান দেখিয়েছে। সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই ৭ পয়েন্ট বেড়েছে। বাজারটিতে ১৮১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে যার মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে ৬৬টির কমেছে এবং ২৮টির অপরিবর্তিত ছিল। মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা যা আগের কার্যদিবসের তুলনায় কম।
সার্বিকভাবে, বিমা খাতের ইতিবাচক ভূমিকার কারণে বাজারে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। তবে সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা সতর্কতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

