হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয়বারের জন্য দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তিনি কটাক্ষ করেন যে, সংস্থাটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে এবং উল্টো অবৈধ অভিবাসনকে উৎসাহিত করছে, যার ফলে পশ্চিমা দেশগুলো “নরকে যাচ্ছে।”
এমনটাই জানিয়েছেন, বার্তা সংস্থা এএফপি।
ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বৈশ্বিক উদ্যোগকেও আক্রমণ করে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতারণা’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি অভিযোগ করেন, জাতিসংঘ কেবল শক্ত শব্দে লেখা চিঠি পাঠায়, কিন্তু ফাঁপা কথায় যুদ্ধ বন্ধ হয় না। বক্তৃতার সময় ট্রাম্প ভাঙা এসকেলেটর এবং খারাপ টেলিপ্রম্পটারকেও বিদ্রুপ করেন।
তিনি বলেন, “জাতিসংঘ থেকে আমি যা পেয়েছি তা হলো খারাপ এসকেলেটর আর খারাপ টেলিপ্রম্পটার।” ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি সাতটি যুদ্ধ শেষ করার চেষ্টা করেছেন, তবে রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন এবং হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আক্রমণের পর গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের ক্ষেত্রে তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
ট্রাম্প অভিযোগ আনেন, ওয়াশিংটনের কিছু মিত্র দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়ে হামাসকে পুরস্কৃত করছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য হামাসকে জিম্মিদের মুক্তি দিতে হবে। তিনি ইউরোপীয় মিত্র, চীন ও ভারতের ওপরও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করার অভিযোগ তোলেন।
ইউরোপীয় অভিবাসন নীতি প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ওপেন বর্ডার বা উন্মুক্ত সীমান্তের ব্যর্থ পরীক্ষা বন্ধ করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “তোমাদের দেশ নরকে যাচ্ছে।” একই সঙ্গে লন্ডনের মেয়র সাদিক খানকেও কটাক্ষ করেছেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সহযোগিতা হ্রাস করে জাতীয়তাবাদী নীতি আরো শক্তিশালী করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘ জলবায়ু চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করেছেন, উন্নয়ন সহায়তা কমিয়েছেন এবং বিদেশি বিচারকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস উদ্বোধনী বক্তৃতায় সতর্ক করেন, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন সাহায্য কমিয়ে দেয়ায় বিশ্বজুড়ে তাণ্ডব চলছে। তিনি বলেন, “আমরা কোন পৃথিবী বেছে নেব? কাঁচা শক্তির পৃথিবী নাকি আইনের পৃথিবী?”
ট্রাম্প আগামীতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগস্টে আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এটি তাদের দ্বিতীয় বৈঠক। রাশিয়া সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনে আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে এবং ন্যাটো সদস্য দেশ পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া ও রোমানিয়ার আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে।