ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সম্পূর্ণরূপে ক্ষমা করার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের উদ্দেশে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি বলেন, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির মামলাগুলো “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অযৌক্তিক।”
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
গত পাঁচ বছর ধরে ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে তিনটি মামলায় নেতানিয়াহুর বিচার চলছে। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। ট্রাম্প চিঠিতে লেখেন, ইসরায়েলের বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতাকে তিনি “সম্পূর্ণ সম্মান” করেন, তবে তার বিশ্বাস—এই মামলাগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফল।
হারজগের দপ্তর জানায়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তারা “অত্যন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে বিবেচনা করেন”, তবে ইসরায়েলের আইন অনুযায়ী ক্ষমার জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন প্রয়োজন।
নেতানিয়াহু পরে এক্সে (টুইটার) ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনি সবসময় সোজাসাপ্টা বলেন। আমি আমাদের নিরাপত্তা ও শান্তির অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করতে আগ্রহী।”
ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দায়িত্বে থাকা অবস্থায় আদালতে দাঁড়াতে হয়েছিল নেতানিয়াহুকে। প্রথম মামলায় অভিযোগ—তিনি প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সিগার ও শ্যাম্পেন নিয়েছিলেন এবং বিনিময়ে সুবিধা দিয়েছেন।
দ্বিতীয়টিতে বলা হয়, ইতিবাচক সংবাদ কাভারেজের বিনিময়ে এক সংবাদপত্রকে প্রচারে সহায়তার প্রস্তাব দেন। তৃতীয় মামলায় অভিযোগ, এক টেলিকম কোম্পানিকে সুবিধা দিতে নিয়ন্ত্রক সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছিলেন।
নেতানিয়াহু এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিচার প্রক্রিয়াকে “রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র” বলেছেন। ট্রাম্পও আগেও তার মামলাগুলো নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন। গত মাসে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, “সিগার আর শ্যাম্পেন! এসব নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন?”
চিঠিতে ট্রাম্প লেখেন, “ইসরায়েল ও ইহুদি জাতি গত তিন বছর ধরে কঠিন সময় পার করছে। এই প্রেক্ষাপটে আমি আপনাকে আহ্বান জানাচ্ছি নেতানিয়াহুকে সম্পূর্ণ ক্ষমা করতে। তিনি একজন দৃঢ় ও সফল যুদ্ধকালীন প্রধানমন্ত্রী, যিনি ইসরায়েলকে শান্তির পথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।”
ইসরায়েলি আইনে প্রেসিডেন্ট দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে ক্ষমা বা সাজা হ্রাস করতে পারেন। তবে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে জনস্বার্থে বা বিশেষ পরিস্থিতিতে রায় ঘোষণার আগেও ক্ষমা দেওয়া যায়। এজন্য অভিযুক্ত ব্যক্তি বা তার আত্মীয়ের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে হয়। এখন পর্যন্ত এমন কোনো আবেদন জমা পড়েছে বলে জানা যায়নি।
এদিকে বিরোধী নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ায়ির লাপিদ এক্সে লিখেছেন, “স্মরণ করিয়ে দিই—ইসরায়েলি আইনে ক্ষমা পাওয়ার প্রথম শর্ত হলো অপরাধ স্বীকার ও অনুশোচনা।”

