ফিলিপাইনের ম্যানিলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে শীর্ষ কর্মকর্তাদের দুর্নীতির প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রোববার বিক্ষোভ শুরু করেছে। স্থানীয় সময় দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর রিজাল পার্কে অন্তত ২৭ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছেন। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের পদত্যাগও দাবি করেছেন, দেশটির গণমাধ্যম র্যাপলার জানিয়েছে।
সম্প্রতি দেশটিতে দুই দফায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এতে সৃষ্ট বন্যায় সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, সরকারি কর্মকর্তারা বন্যা নিয়ন্ত্রণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করেছেন এবং এই দুর্নীতির সঙ্গে প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠরাও জড়িত।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকদিন ধরে ফিলিপাইনে নাগরিকরা দুর্নীতির প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। রোববারের বিক্ষোভ সেই ক্ষোভের সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ। তিন দিনের এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা দুর্নীতিবিরোধী বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করছেন। বিকেলে বিক্ষোভের আকার আরও বড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই ‘ইগ্লেসিয়া নি ক্রিস্তো’ চার্চের সদস্য। চার্চের মুখপাত্র ব্রাদার এডউইন জাবালা বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির নিন্দা জানাতেই তারা এই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন। এতে সারা দেশের মানুষের কণ্ঠস্বর প্রতিফলিত হচ্ছে।
এদিন ম্যানিলার উপশহর কেসন সিটিতেও আরও কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভ হওয়ার কথা রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হবে। এছাড়া সামরিক বাহিনী সরকারকে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের নামে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, যার সঙ্গে কয়েকজন ক্ষমতাধর ব্যক্তি জড়িত। তাদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়রের আত্মীয় ও সাবেক স্পিকার মার্টিন রোমুয়ালদেজও আছেন।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়, এতে কমপক্ষে ২৫৯ জন প্রাণ হারান। এরপর জনঅসন্তোষ আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রেসিডেন্ট মার্কোস প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বড়দিনের আগে কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

