‘দ্য ফোর্টি রুলস অব লাভ’ (The Forty Rules of Love- ‘ভালোবাসার চল্লিশটি নিয়ম’) এলিফ শাফাক রচিত একটি উপন্যাস। এটি ২০০৯ সালের মার্চ মাসে প্রকাশিত হয়। বইটি মাওলানা জালাল-উদ-দীন রুমি ও তার সঙ্গী শামস তাবরিজিকে নিয়ে রচিত। বইটিতে শামস কীভাবে ভালোবাসা দিয়ে একজন পণ্ডিতকে সুফিতে পরিণত করেছেন তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তুরস্ক ও ফ্রান্সে বইটির ৭৫০,০০০ এর অধিক কপি বিক্রি হয়।
মূল্যায়ন
‘দ্য ফোর্টি রুলস অব লাভ’ মেনশন স্পেশালে লিতেরাতুর এত্রঁজের লাভ করে। ২০১২ সালের আন্তর্জাতিক আইএমপিএসি ডাবলিন সাহিত্য পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়। ২০১৯ সালের ৫ই নভেম্বর বিবিসি নিউজের প্রকাশিত ১০০ “সবচেয়ে অনুপ্রেরণাদায়ী” উপন্যাসের তালিকায় দ্য ফোর্টি রুলস অব লাভ উপন্যাসটিকে তালিকাভুক্ত করে। এটি আমাদের বিশ্বকে গড়ে দেওয়া উপন্যাস-এর “লাভ, সেক্স অ্যান্ড রোম্যান্স- ফেব্রুয়ারি” বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হয়।
‘মোর ম্যাগাজিন’ মধ্যবয়স্ক এক মহিলার জীবনের একঘেয়ে গল্পকে বিস্ময়কর উপায়ে মহাকাব্যিক ইতিহাসের সাথে একই সুতোয় বুনেছেন এই জনপ্রিয় তুর্কি লেখিকা।”- পাবলিশার্স উইকলি
লেখার কলাকৌশল সংক্ষেপ-
তুরস্কের জনপ্রিয় লেখিকা এলিফ শাফাক এই বইতে লিখেছেন আপাতদৃষ্টিতে সম্পূর্ণ আলাদা দুই সময়ের কাহিনি। আকর্ষণীয় কাহিনি, পুরো বইয়ের গল্প আবর্তিত হয়েছে যুক্তিবাদী মস্তিষ্ক আর অবাধ্য, আহত হৃদয়ের দ্বন্দ্বকে ঘিরে।
একটি গল্প সমসাময়িক। অন্যদিকে আরেকটি গল্পের পটভূমি রচিত হয়েছে ত্রয়োদশ শতাব্দীতে, যখন বিখ্যাত মুসলিম দার্শনিক রুমি তার আত্মিক পথপ্রদর্শক, রহস্যময় দরবেশ শামস তাবরিজির দেখা পেলেন। লেখিকার সাবলীল লেখনীতে দুই সময়ের দুই গল্পে মিলেমিশে রচিত হয়েছে ভালোবাসার এক চিরন্তন উপাখ্যান।
এলা রুবিনস্টাইনের বয়স চল্লিশ। স্বামী সন্তান সবই আছে, কিন্তু ভালোবাসা নেই। আর তাই দাম্পত্যজীবনে সুখ নেই তার। একঘেয়েমী থেকে বাচঁতে এক লিটারেরি এজেন্টের অধীনে পাঠক হিসেবে কাজ নিল সে। প্রথম যে পাণ্ডুলিপি তার হাতে এল তার নাম মধুর অবিশ্বাস, লেখকের নাম আজিজ জাহারা। প্রথমে বেশ অনীহার সাথে বইটা পড়তে শুরু করলেও ধীরে ধীরে সে ডুবে যেতে লাগল কাহিনিতে। জানতে পারল, কিভাবে রুমির জীবন বদলে গিয়েছিল ভবঘুরে দরবেশ শামস তাবরিজির স্পর্শে। পরিচিত হলো বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকা ভালোবাসার অদৃশ্য নিয়মের সাথে। যার কাছে সব ধর্ম, সব মানুষ একই সমান। এক সময় এলা আবিষ্কার করল, রুমির এবং তার নিজের জীবনের গল্পে কোনো পার্থক্য নেই। রুমির জীবনে যেমন শামস এসেছিল; তেমনি তার জীবনে এসেছে জাহারা, তাকে মুক্তি দিতে শেষ পর্যন্ত হৃদয়ের কাছেই হার মানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাফাকের নায়িকা, এবং একবারও পেছনে না তাকিয়ে সেই পথেই এগিয়ে গেছে।

