‘কঙ্কাবতী’ এটি ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় কর্তৃক বাংলা ভাষায় রচিত একটি হাস্যরসাত্মক উপন্যাস। এটি ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
‘কঙ্কাবতী’ পড়ে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর প্রশংসা করে বলেছেন, “এই উপন্যাসটি মোটের উপর যে আমাদের বিশেষ ভাল লাগিয়াছে, তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই। লেখক অতি সহজে সরল ভাষায় আমাদের কৌতুক এবং করুণা উদ্রেক করিয়াছেন এবং বিনা আড়ম্বরে আপনার কল্পনাশক্তির পরিচয় দিয়াছেন।
গল্পটি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে প্রকৃত ঘটনা এবং দ্বিতীয় ভাগে অসম্ভব অমূলক অদ্ভুত রসের কথা। এইরূপ অদ্ভুত রূপকথা ভাল করিয়া লেখা বিশেষ ক্ষমতার কাজ।
অসম্ভবের রাজ্যে যেখানে কোনো বাঁধা নিয়ম কোনো চিহ্নিত রাজপথ নাই, সেখানে স্বেচ্ছাবিহারিণী কল্পনাকে একটি নিগূঢ় নিয়মপথে পরিচালনা করিতে গুণপনা চাই। কারণ রচনার বিষয় বাহ্যতঃ যতই অসঙ্গত ও অদ্ভুত হউক না কেন, রসের অবতারণা করিতে হইলে তাহাকে সাহিত্যের নিয়মবন্ধনে বাঁধিতে হইবে।
রূপকথার ঠিক স্বরূপটি, তাহার বাল্য-সারল্য, তাহার অসন্দিগ্ধ বিশ্বস্ত ভাবটুকু লেখক যে রক্ষা করিতে পারিয়াছেন, ইহা তাঁহার পক্ষে অল্প প্রশংসার বিষয় নহে।
সংক্ষিপ্ত বিবরন-
‘কঙ্কাবতী’ বাংলা সাহিত্যের একটি রসাত্মক উপন্যাস। লেখক এতে কৌতুক এবং করুণা উদ্রেক করে বিনা আড়ম্বরে আপন কল্পনাশক্তির পরিচয় দিয়েছেন। ভূত-প্রেত ও কাল্পনিক জীব-জন্তু এর এমন এক জগৎ নির্মাণ করেছেন যার অভিনবত্ব পাঠককে রূপকথার জগতে নিয়ে যাবে। এ জগৎ থেকে ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় আমদানি করেন কঙ্কাবতীকে।
উপন্যাসের প্রথম ভাগে বর্ণিত হয়েছে বাস্তব জীবনের কথা। দ্বিতীয় ভাগে লেখক তাঁর লেখা নিয়ে যান রূপকথার কল্পজগতে। এ জগৎ ঘুরে এসে তিনি ফিরে যান বাস্তবলোকে। লেখক ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায় তাঁর এ উপন্যাসে বাঙালি সমাজে প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস ও অন্ধ সংস্কারকে আঘাত করেছেন।

