Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Fri, Dec 19, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » একজন মায়াবতী (৩য় খন্ড)- খবরের কাগজে লিখেছে শৈত্যপ্রবাহ: হুমায়ূন আহমেদ  
    সাহিত্য

    একজন মায়াবতী (৩য় খন্ড)- খবরের কাগজে লিখেছে শৈত্যপ্রবাহ: হুমায়ূন আহমেদ  

    এফ. আর. ইমরানJanuary 17, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    খবরের কাগজে লিখেছে ‘শৈত্যপ্রবাহ’

    ‘শৈত্যপ্রবাহ’ মানে যে ঠাণ্ডা কে জানত?

    মীরা ফুলহাতা সুয়েটার পরেছে। সুয়েটারের উপর গরম শাল–তবু শীত যাচ্ছে না। আজ বারান্দায় রোদও আসে নি। আকাশ শ্রাবণ মাসের মেঘলা আকাশের মতো। সবকিছু যেন ঝিম ধরে আছে।

    মীরার বড় ভাই জালালউদ্দিন বারান্দায় মোড়ার উপর বসে আছেন। তাঁর বয়স পয়তাল্লিশ। এই বয়সেই চুলটুল পাকিয়ে বুড়ো হয়ে গেছেন। বুড়োদের মতো অমাবস্যাপূৰ্ণিমাতে বাতে কষ্ট পান। এইসব দিনে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা করতে থাকে। আজ অমাবস্যা বা পূর্ণিমা কোনোটাই না, তবু তাঁর পিঠে ব্যথা উঠেছে। ব্যথার কারণে বাইরে বের হননি। ডাক্তারকে খবর দেয়া হয়েছে। দশ মিনিটের মধ্যে এসে পড়ার কথা। পচিশ মিনিট পার হয়েছে–ডাক্তার এখনো আসে নি।

    জালালউদিনের পায়ের কাছে কম্বল ভাজ করে বিছানো। তিনি প্রতি পাঁচ মিনিট পরপর কম্বলে এসে চিৎ হয়ে শুচ্ছেন। ব্যথার তাতে কোনো হেরফের হচ্ছে না। তার মেজাজ অসম্ভব খারাপ। যাকেই দেখছেন তাকেই ধমক দিচ্ছেন। মীরা এর মধ্যে দুবার ধমক খেয়েছে। তৃতীয়বার ধমক খাওয়ার জন্যেও প্রস্তুত হয়ে আছে। ভাইয়ার কাছে বকা খেতে তার তেমন খারাপ লাগে না।

    মীরা শোন তো–হট ওয়াটার ব্যাগে পানি ভরে দিতে বলেছি চল্লিশ মিনিট আগে। পানি গরম করতে চল্লিশ মিনিট লাগে?

    মীরা সহজ গলায় বলল, পানি গরম হয়ে গেছে। হট ওয়াটার ব্যাগ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ড্রাইভার গেছে আরেকটা কিনে আনতে।

    এখন একটা কিনতে গেছে? আগেরটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? এই বাড়ির সব ক’টা মানুষ ইডিয়ট নাকি?

    শুধু শুধু চিল্লাচিল্লি করছি কেন?

    দরকারের সময় একটা জিনিস খুঁজে পাওয়া যাবে না–তাহলে বাড়িতে এতগুলো মানুষ থাকার প্রয়োজন কী?

    চুপ করে শুয়ে থােক তো ভাইয়া। আমি বরং পিঠে হাত বুলিয়ে দিই।

    খবরদার–পিঠে হাত দিবি না। অসহ্য ব্যথা।

    কাত হয় শুয়ে দেখ তো আরাম হয় কিনা।

    তোর উপদেশ দেবার দরকার নেই। তুই ডাক্তার না।

    মীরাকে এই কথা বললেও তিনি কান্ত হয়ে শুলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে ব্যথা কমে গেল।

    ভাইয়া ব্যথা কমেছে?

    একটু কম লাগছে।

    তাহলে এইভাবে শুয়ে থাক।

    কাত হয়ে কতক্ষণ শুয়ে থাকিব?  তুই এমন পাগলের মতো কথা বলিস কেন?

    ব্যথা তো কমেছে। তবু এমন চোঁচামেচি করছ কেন? চা খাবে, চা দিতে বলব?

    কাত হয়ে চা খাব?

    মীরা হেসে ফেলল।

    মীরার হাসি দেখে জালালউদ্দিন নিজেও হেসে ফেললেন। যদিও খুব ভালো করে জানেন এখন হাসাটা ঠিক হচ্ছে না। রাগ ভাবটা ধরে রাখা উচিত।

    মীরাকে কিছু কঠিন কথা বলা প্রয়োজন। সমস্যা হলো পিঠের ব্যথা কমার সঙ্গে সঙ্গে রাগটাও দ্রুত কমে যাচ্ছে।

    মীরা।

    বলো কী বলবে।

    তোর ভাবি বলছিল তুই নাকি আলাদা বাসা ভাড়া করার কথা চিন্তা করছিস?

    ঠিকই বলেছে। ভাবির স্মৃতিশক্তি খুবই ভালো। সে পুরো কনভারসেসন, দাঁড়িকমাসহ রিপ্রডিউস করতে পারে। তুমি যা শুনেছ ঠিকই শুনেছ।

    এখানে অসুবিধাটা কী?

    কোনো অসুবিধা নেই। তোমার এখানে আমি মহা সুখে আছি। এক হাজার করে টাকা হাত খরচও পাচ্ছি।

    এই এক হাজার টাকা দিয়ে তুই বাসা ভাড়া করে থাকবি?

    আমার নিজের কাছে কিছু টাকা আছে। চার পাঁচ মাস ঐ টাকায় চালাব, এর মধ্যে চাকরি-বাকরি কিছু একটা জোগাড় করে নেব।

    চাকরি নিয়ে সবাই তোমার জন্যে বসে আছে?

    ভাইয়া শোন, ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ. ডিগ্রি আমার আছে। অনেকের সঙ্গে চেনাজানা আছে। আমার পক্ষে একটা চাকুরি জোগাড় করা কোনো সমস্যা হবে না। তুমি নিজেও এটা ভালো জান। তা ছাড়া একজন রূপবতী ডিভোর্সিকে সাহায্য করার জন্যে সবাই খুব উৎসাহ বোধ করে।

    জালালউদ্দিন স্তম্ভিত হয়ে গেলেন।

    মেয়েটার কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে? নিজের বড় ভাইয়ের সঙ্গে এটা কী ধরনের কথাবার্তা? পিঠের ব্যথা চলেই গিয়েছিল–উল্টাপাল্টা কথার কারণেই বোধহয় ফিরে আসছে।

    তুই নিজেকে বেশি চালাক মনে করিস?

    মীরা সহজ গলায় বলল, হ্যাঁ করি। এতে কোনো দোষ নেই। বোকারা নিজেদের চালাক মনে করলে দোষ। বুদ্ধিমানরা মনে করলে দোষ নেই।

    বুদ্ধির দোকান খুলে বসেছিস মনে হয়।

    রেগে যােচ্ছ কেন? আবার ব্যথা শুরু হয়েছে? এখন চিৎ হয়ে শুয়ে দেখা। এখন চিৎ হয়ে ঘুমালে হয়তো ব্যথা করবে না।

    জালালউদ্দিন নিজের অজান্তেই চিৎ হয়ে শুলেন। না, ব্যথা লাগছে না। তাঁর গলার স্বর থেকে রাগ ভাবটা এই কারণেই অনেকখানি কমে গেল। তবু কঠিন গলায় কথা বলার চেষ্টা করলেন, তোর কি ধারণা, ফড়ফড় করে কথা বলা বুদ্ধিমানের লক্ষণ?

    না, এটা বোকার লক্ষণ। বোকারাই ফড়িফড় করে কথা বলে। বুদ্ধিমান লোকদের লক্ষ করলে দেখবে এরা কিছুক্ষণ কথা বলার পর চুপ করে অপেক্ষা করে। আবার কথা বলে, তারপর আবার অপেক্ষা। এই অপেক্ষার সময়টায় তারা চিন্তা করে। অতি দ্রুত চিন্তা করে।

    আমার সম্পর্কে তোর কী ধারণা? আমি বোকা, না বুদ্ধিমান?

    তুমি বোকাও না, বুদ্ধিমানও না–মাঝামাঝি।

    তোর নিজের ক্ষুরধার বুদ্ধি।

    হুঁ।

    এই বুদ্ধির জন্যে তোর জীবনটা কোথায় এসে থেমেছে এটা দেখেছিস ; হাতের কাছে এতগুলো ছেলে থাকতে বিয়ে করলি একটা অগা-বগাকে।

    তা করেছি। তবে–সে অগা-বগা৷ কিন্তু না। তাকে আমার পছন্দ হয় নি। ভবিষ্যতেও যে হবে না এটা বুঝতে পেরেছি এবং খুব সম্মানজনকভাবে আলাদা হবার ব্যবস্থা করেছি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হয় না।

    তুই আমার সামনে থেকে যা।

    যাচ্ছি।

    যাবার আগে একটা টেলিফোন করে দেখ–ডাক্তারের কী হয়েছে?

    ভাইয়া, আমার মনে হয় তুমি যদি একটা হট শাওয়ার নাও তাহলে আরাম হবে।

    হট শাওয়ারের চিকিৎসা ডাক্তারের কাছে শুনে তারপর করতে চাই। তোর ডাক্তারি তুই তোর নিজের জন্যে রেখে দে।

    ডাক্তারকে টেলিফোন করার দরকার পড়ল না। গাড়ির হর্ন শোনা গেল।

    মীরা মনজুরের অফিসে টেলিফোন করল। আজ মঙ্গলবার। বুধবারের কথা মনে করিয়ে দেয়া দরকার।

    ‘হ্যালো’ বলতেই মনজুরের গলা শোনা গেল–মনজুর ভারি গলায় বলল, কে বলছেন?

    আমি, আমি মীরা।

    ও আচ্ছা মীরা। কেমন আছ?

    ভালো আছি। আমি হ্যালো বললাম তারপরেও আমাকে চিনতে পারলে না!

    চিনিব না কেন, চিনেছি।

    চিনেছ তা হলে বললে কেন–কে বলছেন?

    অভ্যাস। হ্যালো বলতেই–‘কে বলছেন’? বলি তো….

    থাক এক এক্সপ্লানেশনের দরকার নেই। তােমাকে খুব জরুরি কারণে টেলিফোন করেছি।

    মনজুর উদ্বিগ্ন গলায় বলল, জরুরি কারণটা কী?

    তুমি আন্দাজ কর তো।

    আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।

    আজ মঙ্গলবার। তোমাকে বুধবারে আসতে বলেছিলাম।

    ও আচ্ছা–মনে আছে। আমি এপয়েন্টমেন্ট বইয়ে লিখে রেখেছি।

    তোমার আবার এপয়েন্টমেন্ট বুক আছে নাকি?

    ঠিক এপয়েন্টমেন্ট বুক না- ডেস্ক ক্যালেন্ডার। কাল সকালে পাতা উল্টােব। সঙ্গে সঙ্গে চোখে পড়বে।

    দয়া করে এখনি উল্টাও। ডেস্ক ক্যালেণ্ডারের পাতা তুমি কখনো উল্টাও না।

    আচ্ছা উল্টালাম।

    কী লেখা পড়ে শোনাও তো। যা লেখা হুবহু তাই তুমি পড়বে।

    বেশি কিছু না–শুধু মীরা লিখে রেখেছি। নাম দেখলেই মনে পড়বে।

    আমি টেলিফোন করার আগে কী করছিলে?

    ডিভানে শুয়ে ছিলাম।

    শুয়ে ছিলে কেন? শরীর খারাপ নাকি?

    একটু খারাপ। কিডনি বিষয়ক জটিলতা।

    পরিষ্কার করে বল। কিডনি বিষয়ক জটিলতা মানে?

    সবে ধন নীলমণি যেটা আছে সেটা নন-কোঅপারেশন করছে।

    এটা কি তোমার নিজের ধারণা না ডাক্তাদের ধারণা?

    ডাক্তারদের।

    ভালোমতো চিকিৎসা করাও।

    করাচ্ছিা!

    আচ্ছা। তাহলে বুধবারে তোমার সঙ্গে দেখা হবে।

    আচ্ছা। তুমি ভালো তো?

    ভালো।

    মীরা টেলিফোন নামিয়ে রাখল। মনজুরের সঙ্গে কথা বলার পর তার কিছুক্ষণের জন্যে খারাপ লাগে। লজ্জা এবং অপরাধবোধের মিশ্র অনুভূতি হয়। নিজের উপর তার খানিকটা রাগও লাগে। শেষের দিকে মনজুরের সঙ্গে সে বেশ খারাপ ব্যবহার করেছে। এতটা খারাপ ব্যবহার মনজুরের প্রাপ্য ছিল না। তার চরিত্রে কিছু ইন্টারেস্টিং দিক অবশ্যই আছে: যেমন–সে ভালোমানুষ। অসাধারণ কিছু না, সাধারণ ভালো মানুষদের একজন। শতকরা পঁয়তাল্লিশ জন মানুষ এই পর্যায়ের।

    আজ বুধবার।

    জামান সাহেব এসে পড়েছেন। জালালউদিনের সঙ্গে চা খেতে খেতে মাথা দুলিয়ে গল্প করছেন। বিলেতের গল্প। বিলেতে ক্রিসমাসের সময়ে এক তরুণীকে রাস্তা পার করাতে গিয়ে কী যে বিপদে পড়েছিলেন তার গল্প।

    বুঝলেন জালাল সাহেব, পকেট থেকে সিক্সটি পাউন্ড খসে গেল। আজ থেকে পনের বছর আগের ঘটনা। পনের বছর আগের সিক্সটি পাউন্ড মানে সিক্সটি ইনটু ফিফটিন অর্থাৎ প্ৰায় নয় শ পাউন্ড।

    জালালউদ্দিন হাসতে হাসতে ভেঙে পড়ছেন। মীরার হাসি পাচ্ছে না। হাসি পাওয়ার মতো কোনো গল্প না। মাঝে মাঝে লোকজনদের অকারণেই হাসতে ইচ্ছা করে; তখন একটা উপলক্ষ ধরে হাসে। এখানেও তাই হচ্ছে।

    জামান সাহেব মীরার দিকে তাকিয়ে বললেন, আমাদের ক্লায়েন্ট তো এখনো আসছে না। মীরা বলল, এসে পড়বে।

    আমার অবশ্য কোনো তাড়া নেই। আরেক প্রস্থ চা হােক।

    জালালউদ্দিন বললেন, অন্য কোনো পানীয় খাবেন? ভালো স্কচ আছে।

    ঝামেলা চুকে যাক, তারপর দেখা যাবে। স্কচের কথায় একটা ঘটনা মনে পড়ল। আটলান্টিক সিটিতে একবার কী হয়েছিল শুনুন। একটা নাইট ক্লাবে গিয়েছি–এলাদিনস ক্যাসেল। ওখানকার খাবারটা সস্তা এবং ভালো। ভাবলাম খেতে খেতে একটা শো দেখে ফেলি। একটা ড্রিংকস নিয়ে বসেছি- অমনি প্রসটিটিউট ধরনের এক তরুণী বলল, বাইরে অসম্ভব ঠাণ্ডা, তুমি কি আমাকে একটা ড্রিংক অফার করবে? আমি বললাম, অবশ্যই। তুমি ওয়েটারকে বল কী খেতে চাও।

    মেয়েটা নিচু গলায় ওয়েটারকে কী যেন বলল, সে তৎক্ষণাৎ একটা গ্লাস এবং বোতল এনে টেবিলে রাখল। মেয়েটা অতি দ্রুত বোতল শেষ করে আমাকে থ্যাংক দিয়ে চলে গেল। বিল দিতে গিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল। দুশ চল্লিশ ডলার! মেয়েটা নাকি দুশ ডলার দামের ফরাসি শ্যাম্পেন চেয়েছিল। তাকে তাই দেয়া হয়েছে। হা-হা-হা।

    জালালউদ্দিন ঘর কাঁপিয়ে হাসতে লাগলেন। মীরা ভেবে পেল না, এর মধ্যে হাসির কী আছে। সব মানুষ এত বােকা কেন? পৃথিবীতে বুদ্ধিমান মানুষের সংখ্যা এত অল্প!

    কলিং বেলের শব্দ হচ্ছে।

    মীরা উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিল। চাদর গায়ে মনজুর দাঁড়িয়ে আছে। সঙ্গে কালো। একটা ব্যাগ। তার চাদর ভেজা-ভেজা। মীরা বলল, বৃষ্টি হচ্ছে নাকি?

    হুঁ। এইবারের শীতকালটা অদ্ভুত–দুদিন পরপর বৃষ্টি। আমি কি দেরি করে ফেললাম?

    হ্যাঁ দেরি করেছ।

    জামান সাহেব এসেছেন?

    দুঘণ্টা আগে এসেছেন।

    সরি, ডাক্তারের কাছে গিয়ে এই যন্ত্রণার মধ্যে পড়লাম। ক্লিপে লেখা এগার। নিশ্চিন্ত হয়ে বসে আছি, আসলে লেখা উনিশ।

    ডাক্তার কী বলল?

    বলে নি কিছু। টেস্ট-ফেস্ট করতে দিয়েছে।

    এস আমার সঙ্গে। তাঁরা বারান্দায় বসেছেন। তোমার ব্যাগে কী?

    কিছু না। ব্যাগটা এখানে রেখে যাই?

    সঙ্গে থাক। অসুবিধা কিছু নেই। চাদর খুলে ফেল। ভেজা চাদর গায়ে জড়িয়ে রাখার মানে কী? দাও আমার কাছে দাও।

    জামান সাহেব মনজুরের দিকে আগ্ৰহ নিয়ে তাকালেন। মনজুর বিনীত ভঙ্গিতে বলল, সরি আপনাদের দেরি করিয়ে দিয়েছি।

    জামান সাহেব কিছু বললেন না। মনজুরকে তাঁর চেনা চেনা মনে হচ্ছে–কোথায় দেখেছেন মনে করতে পারছেন না। তিনি ইতস্তত করে বললেন, আপনাকে কি আমি আগে দেখেছি? বা আপনি কি আমাকে আগে দেখেছেন?

    মনজুর খানিকক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল, মনে করতে পারছি না। আমার স্মৃতিশক্তি বিশেষ ভালো না।

    আমার যথেষ্টই ভালো; কিন্তু আমিও মনে করতে পারছি না। যদিও খুব চেনা চেনা লাগছে।

    জালালউদ্দিন চোখ বন্ধ করে বসে আছেন। তাঁর চোখে-মুখে সুস্পষ্ট বিরক্তি। তিনি বললেন, কাজের কথা শুরু করলে কেমন হয়? এমনিতেই দেরি হয়ে গেছে।

    জামান সাহেব বললেন, কাজের কথা আর কী? দুজনের পুরোপুরি সম্মতিতেই ব্যাপারটা ঘটছে। আমি সব কাগজপত্র তৈরি করে এনেছি। কয়েকটা সই হলেই হবে। মনজুর সাহেব। আপনি বরং ডকুমেন্টগুলো পড়ুন।

    মনজুর নরম গলায় বলল, পড়তে হবে না। কোথায় সই করব বলুন।

    দেখুন ক্রস দেয়া আছে। সই করবার সময় পুরো নাম লিখবেন।

    জ্বি আচ্ছা।

    একবার আপনাকে কোর্টেও আসতে হবে। পারবেন না?

    পারব। কবে?

    সোমবার ঠিক এগারটায়। আপনি আমার চেম্বারে চলে আসুন। সেখান থেকে আপনাকে নিয়ে যাব। এই কার্ডটা রাখুন। এখানে ঠিকানা দেয়া আছে।

    মনজুর হ্যাঁ-সূচক ঘাড় নাড়ল। এবং প্রায় সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়াল। মীরা এল তার পেছনে পেছনে। তবে সে কিছু বলল না। এই প্ৰথম ঘর থেকে বেরুবার সময় সে চৌকাঠে ধাক্কা খেল না।

    গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। চাদরটা ফেলে আসায় মাথা ভিজে যাচ্ছে। জ্বর-জ্বারি না হলে হয়।

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    সাহিত্য

    শুভ জন্মদিন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ

    November 13, 2025
    সাহিত্য

    ডাকটিকিটে ফুটে উঠেছে হারানো যুগের গল্প

    October 10, 2025
    ফিচার

    পবিত্র রমজানের সম্ভাব্য তারিখ জানাল জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

    October 4, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.