ইসবগুলের ভুসি প্রাকৃতিকভাবে নানা স্বাস্থ্যসমস্যার সমাধানে কার্যকরী। বিশেষ করে কোষ্ঠকঠিন্য, আমাশয়, ইউরিনে জ্বালাপোড়া ও পেটের সমস্যা দূর করতে এটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কোষ্ঠকঠিন্য দূর করতে ইসবগুল-
যারা কোষ্ঠকঠিন্য সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য ইসবগুল অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন ৫-১০ গ্রাম ইসবগুল এক কাপ ঠাণ্ডা বা গরম পানিতে আধাঘণ্টা ভিজিয়ে তাতে ২-৩ চামচ চিনি মিশিয়ে খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এটি সকালে খালি পেটে বা রাতে শোয়ার আগে গ্রহণ করা যেতে পারে। নিয়মিত দুই মাস খেলে দীর্ঘদিনের কোষ্ঠকঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তবে পেট স্বাভাবিক হলে এটি সপ্তাহে ১-২ দিনের বেশি না খাওয়াই ভালো। কারণ অতিরিক্ত গ্রহণ করলে ডায়রিয়া হতে পারে।
পেটের সমস্যা ও অর্শ্বরোগ প্রতিরোধে সহায়ক-
ইসবগুলের ভুসি পেট পরিষ্কার রাখতে ও হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে অর্শ্বরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়। যা দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের মতো জটিল রোগেও রূপ নিতে পারে। নিয়মিত ইসবগুল গ্রহণ করলে এই সমস্যাগুলো অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। রাসায়নিক ওষুধের তুলনায় ইসবগুলের ভুসি অনেক বেশি নিরাপদ ও কার্যকর। কারণ এটি প্রাকৃতিকভাবে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
আমাশয়ের ক্ষেত্রে ইসবগুলের কার্যকারিতা-
আমাশয়ের জীবাণু ধ্বংস করতে না পারলেও ইসবগুল শরীর থেকে জীবাণুগুলো বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই আমাশয়ের রোগীরা সকালে ও রাতে এক গ্লাস ইসবগুলের শরবত খেলে উপকার পাবেন। সাধারণ ওষুধ দিয়ে আমাশয় নিরাময় করা হলে জীবাণুগুলো শরীরের ভেতরেই থেকে যেতে পারে। যা পরবর্তীতে পুনরায় সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। কিন্তু ইসবগুল নিয়মিত গ্রহণ করলে এই সমস্যাটি দূর করা সম্ভব।
ইউরিনে জ্বালাপোড়া ও শরীরের অন্যান্য সমস্যা দূর করতে ইসবগুল-
যারা প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যায় ভুগছেন। তারা সকালে ও বিকালে শরবতের সঙ্গে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে খেলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে এবং ইউরিনের স্বাভাবিক রং ফিরে আসবে।
এছাড়া, হাত-পায়ে জ্বালাপোড়া ও মাথা ঘোরানোর সমস্যায় ইসবগুলের ভুসি ও আখের গুড় একসঙ্গে মিশিয়ে সকালে ও বিকালে এক সপ্তাহ খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
প্রাকৃতিক এই উপাদানটি শরীরের নানা সমস্যার সমাধান দিতে পারে। যা কেবল সাময়িক উপশমই নয় বরং দীর্ঘমেয়াদে সুস্থতার সহায়ক। রাসায়নিক ওষুধের পরিবর্তে ইসবগুল নিয়মিত গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট অনেক সমস্যা সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে অতিরিক্ত গ্রহণের ফলে ডায়রিয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, তাই সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করাই উত্তম।

