রমজান মাস ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতি হিজরি সনের রমজান মাসে মুসলিমরা সাহরি থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থেকে রোজা পালন করেন। এটি শুধু ধর্মীয় আদেশ নয়, বরং আত্মশুদ্ধির একটি অমূল্য অভ্যাস।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রোজার সময়ের দৈর্ঘ্য এক হতে পারে না। কারণ ভৌগোলিক অবস্থান এবং সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময়ের তারতম্যের কারণে রোজার সময়ের পার্থক্য দেখা যায়। পৃথিবীর যেসব দেশ বিষুবরেখার কাছাকাছি অবস্থিত। সেখানে সাধারণত রোজা রাখার সময় অপেক্ষাকৃত কম হয়। তবে উত্তর এবং দক্ষিণ অক্ষাংশের দেশগুলোতে ঋতুভেদে রোজার সময় অনেক দীর্ঘ হতে পারে।
এ বছর রোজা রাখা সবচেয়ে দীর্ঘ হতে পারে এমন কিছু দেশের মধ্যে রয়েছে ফিনল্যান্ড, গ্রিনল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড। উদাহরণস্বরূপ, ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি শহরে রোজার সময় হবে ১৭ ঘণ্টা ৫ মিনিট এবং গ্রিনল্যান্ডের নুউক শহরে এই সময় ১৭ ঘণ্টা। একইভাবে, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো, কানাডার অটোয়া, সুইজারল্যান্ডের জুরিখ, ইতালির রোম, স্পেনের মাদ্রিদ, যুক্তরাজ্যের লন্ডন এবং ফ্রান্সের প্যারিসের মতো শহরগুলোতে প্রায় ১৬ ঘণ্টা ৫ মিনিট পর্যন্ত রোজা রাখতে হবে।
তবে এ বছর এমন কিছু দেশও রয়েছে যেখানে রোজা তুলনামূলকভাবে কম সময়ের জন্য পালন করতে হবে। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ, চিলির পুয়ের্তো মন্ট, পাকিস্তানের করাচি, আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস, দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন, ভারতের নয়া দিল্লি, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইতে রোজার সময় ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো, যেসব দেশ গ্রিনল্যান্ড এবং আলাস্কার মতো অঞ্চলগুলিতে সূর্য কখনও অস্ত যায় না। সেসব অঞ্চলের মুসলমানদের জন্য মক্কা এবং সৌদি আরবের সময় অনুযায়ী রোজা রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন ইসলামিক স্কলাররা। কারণ মক্কা ইসলামের পবিত্রতম স্থান এবং তার সময়ানুযায়ী রোজা পালন করা এক ধরনের ঐতিহ্য।
এ বছর বিশ্বব্যাপী মুসলমানরা বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে বিভিন্ন সময় রোজা পালন করবেন এবং এটি তাদের ধর্মীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

