রমজান মাস মুসলিমদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও সংযমের মাস। এই মাসে রোজা পালন করা ফরজ, তবে কিছু কারণে রোজা ভেঙে যেতে পারে। ইসলামী বিধান অনুযায়ী, অনিচ্ছাকৃত বা ইচ্ছাকৃত কিছু কার্যকলাপ রোজার শুদ্ধতার ওপর প্রভাব ফেলে। নিচে রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ তুলে ধরা হলো:
স্বাস্থ্যগত কারণে রোজা ভাঙা-
- অসুস্থতার কারণে ইনহেলার ব্যবহারের ফলে রোজা ভেঙে যায়।
- ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে বা মুখে আসা বমি গিলে ফেললে রোজা ভেঙে যাবে।
- কঠিন অসুস্থতার কারণে কেউ রোজা ভেঙে ফেললে শুধু কাজা করতে হবে, কাফফারা দিতে হবে না।
- কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভেঙে ফেলার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে কিংবা নারীদের মাসিক শুরু হলে, তাকেও শুধু কাজা করতে হবে।
খাদ্য ও পানীয় গ্রহণজনিত কারণ-
- অনিচ্ছাকৃতভাবে কুলি করার সময় পানি গলা দিয়ে চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে, তবে কাফফারা দিতে হবে না।
- রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানি পান করার পর ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করলে রোজা ভেঙে যাবে।
- দাঁত থেকে রক্ত বের হলে এবং তা থুতুর সঙ্গে মিশে গিলে ফেললে, রক্তের পরিমাণ যদি থুতুর সমান বা বেশি হয়, তবে রোজা ভেঙে যাবে।
- নাকে বা কানে তেল প্রবেশ করালে রোজা ভেঙে যাবে।
- কোনো অখাদ্য বস্তু যেমন মাটি, কাগজ, পাথরের কণা খেলে রোজা নষ্ট হবে।
ধূমপান ও অন্যান্য কারণে রোজা ভাঙা-
- বিড়ি, সিগারেট, হুঁকা ইত্যাদি পান করলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করা জরুরি।
- যদি কোনো ব্যক্তি সফরে থাকা অবস্থায় বিনা ওজরে রোজা ভেঙে ফেলে, তবে তাকে কাজা করতে হবে, তবে কাফফারা দিতে হবে না।
দাম্পত্য সম্পর্কজনিত কারণ-
- যদি স্বামী জোরপূর্বক স্ত্রীকে সহবাসে বাধ্য করে, তবে স্ত্রীর শুধু কাজা করতে হবে, কাফফারা নয়।
- কোনো নারীর লজ্জাস্থানে ওষুধ ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে।
- পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের রাস্তায় ওষুধ প্রয়োগ করলে তা যদি অণ্ডকোষ পর্যন্ত পৌঁছায়, তবে রোজা ভেঙে যাবে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ-
- রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ, তবে যারা অসুস্থ, যাত্রায় রয়েছেন বা অন্যান্য জরুরি কারণে রোজা রাখতে পারেন না, তারা পরবর্তীতে কাজা করতে পারবেন। ইসলামী বিধানের আলোকে রোজা সংরক্ষণের জন্য সচেতনতা জরুরি।

