রমজান মাস মুসলমানদের জন্য আত্মশুদ্ধির মাস। এই মাসে রোজাদাররা সারাদিন উপবাস রেখে সূর্যাস্তের পর ইফতার করেন। ইসলামে ইফতারের বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত রয়েছে। হাদিসে ইফতারের সময়কে অন্যতম কল্যাণময় মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
ইফতারের অপেক্ষার ফজিলত-
ইফতারের মুহূর্তকে অত্যন্ত বরকতময় বলা হয়েছে। হাদিসে আছে, “রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত রয়েছে: একটি ইফতারের সময় এবং অপরটি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়” (বুখারি, মুসলিম)।
বিশেষত: ইফতারের আগে দোয়া কবুল হওয়ার বিষয়ে হাদিসে উল্লেখ আছে, “তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না— রোজাদারের ইফতারের সময়, ন্যায়পরায়ণ শাসকের, এবং মজলুমের দোয়া” (তিরমিজি)। তাই ইফতারের পূর্ব মুহূর্ত দোয়া ও ইবাদতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইফতারের সময় খাবারের জন্য অপেক্ষার কিছু উপকারিতা-
ধৈর্য ও সংযমের শিক্ষা:
ইফতারের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করা আত্মনিয়ন্ত্রণের অন্যতম শিক্ষা দেয়। এটি মানুষের ধৈর্যশক্তি বাড়ায় এবং সংযমের চর্চা করতে সহায়তা করে।
কৃতজ্ঞতা বৃদ্ধি:
সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার অপেক্ষা করার ফলে ক্ষুধার্ত অবস্থায় মানুষের মনে কৃতজ্ঞতা তৈরি হয়। তারা বুঝতে পারেন, খাদ্যের গুরুত্ব কতখানি এবং দুঃস্থ মানুষের কষ্ট কেমন হতে পারে।
দোয়া কবুলের সুযোগ:
ইফতারের পূর্ব মুহূর্ত দোয়ার জন্য অত্যন্ত উপযোগী সময়। এই সময় মনোযোগ দিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
দিনভর উপবাসের পর ইফতারের জন্য অপেক্ষা করলে শরীর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ধীরগতিতে খাদ্য গ্রহণের জন্য প্রস্তুত হয়। এটি হজমক্রিয়াকে সহজ করে এবং সুস্থতার জন্য সহায়ক হয়।
পারিবারিক ও সামাজিক সংহতি:
একসঙ্গে বসে ইফতার করার মাধ্যমে পরিবার ও সমাজের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ে। ইফতারের অপেক্ষার সময়টি পরিবারের সঙ্গে কাটানো হলে আত্মিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।
ইফতারের জন্য অপেক্ষা করা শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বরং নৈতিক ও স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ধৈর্য, কৃতজ্ঞতা ও সংযমের শিক্ষা দেয়। পাশাপাশি এটি দোয়ার কবুল হওয়ার উত্তম সময়। তাই ইফতারের মুহূর্তকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো উচিত এবং এই বরকতময় সময়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য দোয়া করা উচিত।

