হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ইয়াওমে আরাফা বা আরাফার দিন নিয়ে অনেকেই জানতে চান- এই দিনে কতটি রোজা রাখা হয় এবং তার গুরুত্ব কী? ইসলামী বিধান অনুযায়ী, আরাফার দিনে একটি রোজা রাখার কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, ৯ জিলহজ তারিখে শুধু একটি রোজাই আরাফার রোজা হিসেবে গণ্য হয়, তবে জিলহজের প্রথম দশ দিন নফল রোজারও ব্যাপক ফজিলত রয়েছে।
একটি রোজায় দুই বছরের গুনাহ মাফ-
আরাফার রোজার গুরুত্ব তুলে ধরে হাদিসে বলা হয়েছে- এই একটি রোজা রাখলে আল্লাহতায়ালা বান্দার আগের বছরের এবং পরের বছরের গুনাহ ক্ষমা করে দেন। হাদিসে এসেছে,
“আরাফাতের দিনের রোজা সম্পর্কে আমি আশা করি, এটি আগের বছরের এবং পরের বছরের পাপরাশি মাফ করে দেয়।” (মুসলিম : ১১৬২)
নবীজির (সা.) আমল-
নবীজি হজরত মুহাম্মদ (সা.) নিজেও ৯ জিলহজ তারিখে রোজা রাখতেন, যা হাদিসে তার স্ত্রীদের সূত্রে বর্ণিত। (আবু দাউদ : ২৪৩৭)
রোজার প্রচলন ১-৯ জিলহজ-
যদিও আরাফার রোজা শুধুমাত্র ৯ জিলহজের দিন, কিন্তু ইসলামী সমাজে জিলহজের প্রথম ৯ দিন নফল রোজা রাখার একটা নিয়মিত আমল রয়েছে। এ সময়ে বেশি বেশি নেক আমল ও ইবাদত করার ব্যাপারে নবীজি (সা.) উৎসাহ দিয়েছেন।
“জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনে যে নেক আমল করা হয়, তা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এমনকি আল্লাহর পথে জিহাদ করলেও সে আমলের সমতুল্য হয় না, যদি না কেউ নিজের জান ও মাল নিয়ে বেরিয়ে গিয়ে শহীদ হন।” (বোখারি : ৯৬৯)
কুরআনের কসম ‘দশ রাতের’-
সুরা ফজরের দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলেন—
ওয়ালায়ালিন আশর- অর্থাৎ, “শপথ সেই দশ রাতের”। অধিকাংশ মুফাসসিরদের মতে, এতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ রাত বোঝানো হয়েছে। এ দশ দিন এবং রাতের মধ্যে আরাফার দিন হলো শ্রেষ্ঠতম।
সারসংক্ষেপ:
- আরাফার রোজা = একটি (৯ জিলহজ তারিখে)
- ফজিলত: দুই বছরের গুনাহ মাফ হওয়ার আশাবাদ
- রেওয়ায়েত: নবীজি (সা.) নিজেও এই রোজা রাখতেন
- অন্যান্য আমল: ১-৯ জিলহজ পর্যন্ত নফল রোজা ও নেক আমলের ফজিলত রয়েছে
- চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজার দিন নির্ধারিত হয়: সৌদি আরব বা স্থানীয় চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে।
সুতরাং মুসলিম উম্মাহর জন্য ৯ জিলহজে রোজা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলতপূর্ণ। তবে এটি একদিনই- আরাফার দিনেই পালনীয়।

