Close Menu
Citizens VoiceCitizens Voice
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube LinkedIn WhatsApp Telegram
    Citizens VoiceCitizens Voice Sun, Dec 7, 2025
    • প্রথমপাতা
    • অর্থনীতি
    • বাণিজ্য
    • ব্যাংক
    • পুঁজিবাজার
    • বিমা
    • কর্পোরেট
    • বাংলাদেশ
    • আন্তর্জাতিক
    • আইন
    • অপরাধ
    • মতামত
    • অন্যান্য
      • খেলা
      • শিক্ষা
      • স্বাস্থ্য
      • প্রযুক্তি
      • ধর্ম
      • বিনোদন
      • সাহিত্য
      • ভিডিও
    Citizens VoiceCitizens Voice
    Home » একাত্তরের আবেগ, বর্তমানের বাস্তবতা—কোথায় দাঁড়িয়ে দুই দেশের সম্পর্ক?
    মতামত

    একাত্তরের আবেগ, বর্তমানের বাস্তবতা—কোথায় দাঁড়িয়ে দুই দেশের সম্পর্ক?

    মনিরুজ্জামানDecember 4, 2025Updated:December 4, 2025
    Facebook Twitter Email Telegram WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Telegram WhatsApp Email Copy Link

    বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য ১৯৭১ শুধু বন্ধুত্ব বা সহযোগিতার ইতিহাস নয়, এটি তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু কিন্তু কোনো সম্পর্কই চিরদিন একই রকম থাকতে পারে না। অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেছে; বাস্তবতা বদলেছে, প্রজন্ম বদলেছে, স্বার্থও বদলেছে।

    সাড়ে পাঁচ দশক পর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন এক কঠিন বাস্তবের মুখোমুখি। ২০২৪-এর গণ–অভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশ অনেকটাই বদলে গেছে; ক্ষমতার কেন্দ্রে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন শক্তি। এখন সামনে খোলা দুটি পথ—এই পরিবর্তনকে অস্বীকার করে আগের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা অথবা পরিবর্তিত বাস্তবতাকে মেনে নতুন পথের সন্ধান। কোন পথে এগোবো আমরা? একটা জিনিস স্পষ্ট। এই মুহূর্তে দুই দেশের জন্য প্রধান সংকট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; তাঁকে নিয়ে ফেঁসে গেছে উভয় দেশই। তাঁকে ফাঁসির আদেশ দিয়ে আদালত বিচারিক দায়িত্ব শেষ করলেও এই রায়ের বাস্তবায়ন এখন ইউনূস সরকারের গলার কাঁটা।

    অনেকের, বিশেষ করে গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের দাবি, অবিলম্বে হাসিনাকে দেশে এনে রায় কার্যকর করতে হবে। অথচ ভারতের সম্মতি ছাড়া সেটা অসম্ভব, সে কথা বোকাও বোঝে। তারপরও নানা রকম খোঁড়া যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, তারা হাসিনাকে দেশে এনেই ছাড়বে, দরকার হলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে; কিন্তু এই সংকট শুধু একজন ব্যক্তিকে ঘিরে নয়, এটি দুই দেশের সম্পর্কের দীর্ঘদিনের গাঠনিক ভুলের অনিবার্য পরিণতি।

    অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়ে ভারত এখন না পারছে তাঁকে গিলতে, না পারছে তাঁকে উগরাতে। তাঁকে ফেরত দেওয়া মানে ফাঁসি, একজন বিশ্বস্ত মিত্রকে এমন বিপদের মুখে সে ফেলে দেবে না। ক্ষমতাসীন বিজেপির জন্য তা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। অন্যদিকে হাসিনাকে ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না, তা স্পষ্ট। হাসিনা সরকারের পতনের ফলে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের ফলে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তার ফাঁক গলিয়ে ঢুকে পড়তে চাইছে পাকিস্তান। দরজার ওপাশে চীন। ভারতের জাতীয় স্বার্থের জন্য এর কোনোটাই অনুকূল নয়।

    গাঠনিক অসাম্য:

    অধিকাংশ ভাষ্যকারই একটা বিষয়ে একমত। হাসিনার ১৫ বছর বাংলাদেশে যে ভারতনির্ভর রাজনীতি ও কূটনীতি গড়ে ওঠে, দুই দেশের চলতি দূরত্ব তার ফল। ভারত বাংলাদেশের মানুষের বদলে নির্ভর করেছিল হাসিনার ওপর। ফলে ‘এক ঝুড়িতে সব ডিম’ রাখলে যা হয়, তা–ই হয়েছে। হাসিনার পতনের সঙ্গে সঙ্গে ভারতের ‘ডিম’ গেল, সঙ্গে ‘ডিমের ঝুড়ি’।

    ভারতীয় লেখক বিনোদ খোসলা বিষয়টাকে দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সম্পর্কের ‘গাঠনিক অসাম্য’ বা ‘স্ট্রাকচারাল অ্যাসিমেট্রি’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। সার্বভৌম প্রতিবেশী ও অংশীদার হিসেবে বিবেচনার বদলে ভারতের কাছে বাংলাদেশ ছিল একটি ক্লায়েন্ট স্টেট। সে যত নতজানু, ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের কাছে তার কদর তত বেশি।

    হাসিনা নিজেও সে কথা জানতেন। সে জন্য একাধিকবার তিনি মন্তব্য করেছেন, ‘ভারতকে আমি এত কিছু দিয়েছি যে তারা আর ভাবতেও পারে না।’ হাসিনা সরকারের এক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন কথাও বলেছিলেন, ‘ভারতকে নিজের স্বার্থেই হাসিনাকে ক্ষমতায় ধরে রাখতে হবে।’

    ভারত নিজেকে ‘বড় ভাই’ ভাবলেও সব সময় যে বড় ভাইয়ের মতো আচরণ করেনি, এ কথাও অনেক ভারতীয় স্বীকার করেছেন। নদীর পানির হিস্যা নিয়ে এই দুই দেশের দীর্ঘদিনের পুরোনো বিবাদ এর একটি উদাহরণ।

    অসাম্যভিত্তিক হলেও এই সম্পর্কের একটি অন্তর্গত লজিক (যুক্তি বা যৌক্তিকতা) ছিল। সব মাস্টার–ক্লায়েন্ট বা প্রভু-ভৃত্য সম্পর্কের কেন্দ্রীয় যৌক্তিকতা হলো, অসম হলেও তারা একে অপরের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করে। প্রয়োজনে মালিক ভৃত্যের মাথার ওপর নিজের ছাতাটি মেলে ধরবে; জবাবে ভৃত্য যখন যা নির্দেশ আসবে, তা বিনা বাক্যে পালন করবে।

    সমস্যা হলো, দীর্ঘমেয়াদি হিসাবে এই অসম সম্পর্ক কোনো না কোনো সময় দুর্বল বা ভৃত্যদেশটির ভেতর ক্ষোভের জন্ম দেয়। দেশের মানুষ ভাবতে শুরু করে, ‘প্রভু’রাষ্ট্রের ছত্রচ্ছায়ায় ক্ষমতার বিস্তর অপব্যবহার করেও তাদের দেশের শাসকেরা পার পেয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষোভ স্বৈরাচারী দেশীয় শাসকদের প্রতি যতটা, ঠিক ততটাই বিদেশি প্রভুদের প্রতি।

    এসব কথা মাথায় রেখে সুপরিচিত ভারতীয় সমরকৌশলবিদ রাজা মোহন লিখেছেন, ক্ষুদ্র কোনো প্রতিবেশী দেশ ও মানুষ—তা বাংলাদেশ বা অন্য যে–ই হোক—যখন মনে করে, তাদের সার্বভৌমত্ব বৃহৎ প্রতিবেশীর চাপে নুইয়ে আসছে, তখন তাদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া অনিবার্য হয়ে ওঠে। রাজ মোহনের ভাষায়, এটা হলো ‘ন্যাশনালিস্টিক ব্যাকলাশ’ । বাংলাদেশে তার প্রকাশ ছিল ক্ষোভ, সন্দেহ এবং ভারতের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীর অনাস্থা।

    প্রায় একই উপসংহারে পৌঁছেছেন ভারতের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন। তিনি মনে করেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় প্রতিটি ক্ষুদ্র প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক গাঠনিকভাবে অসম। এর কারণ, ভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে সম্পর্ক নির্মাণের বদলে সেই সম্পর্কের ব্যক্তিগতকরণ (পারসোনালাইজেশন) করেছে। দেশ মানে সে দেশের মানুষ ও তার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।

    প্রতিবেশী দেশের পছন্দের নেতার সঙ্গে সখ্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের মানুষের সঙ্গে সে সম্পর্কে চির ধরলে পুরো সম্পর্কের ভিতই নড়ে ওঠে। মেননের কথায়, ‘আপনি যখন সে দেশের (গণতান্ত্রিক) প্রতিষ্ঠানগুলোর বদলে প্রাধান্য দেন ব্যক্তির ওপর, তার ফল ভালো হবে না, এ কথা প্রায় নিশ্চিত।’

    একাত্তরের নস্টালজিয়া:

    ভারত-বাংলাদেশের এই অসম সম্পর্কের একটি গঠনগত ও মনঃসাংস্কৃতিক চরিত্র রয়েছে, রয়েছে একটি ঐতিহাসিক পটভূমি। নিউইয়র্কে ভারতীয় কূটনীতিক ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের ব্যাপারে তাঁরা ধরেই নেন যে এই সম্পর্কে ভারত ‘বড় ভাই’, বাংলাদেশ ‘ছোট ভাই’।

    এই মনোভাবের পেছনে একট প্রচ্ছন্ন কারণ একাত্তর নিয়ে তাঁদের নস্টালজিয়া। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়কে তাঁরা প্রায় সবাই (পাঠক অনায়াসে ‘প্রায়’ শব্দটি বাদ দিতে পারেন) একই সঙ্গে নিজেদের বিজয় ও কনিষ্ঠ ভ্রাতার জন্য উপহার বলেই ভাবেন। মনে পড়ছে, কয়েক বছর আগে মেজর জেনারেল সিপি সিং কিছুটা আত্মপ্রসাদের সঙ্গে লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা শুধু ১৪ দিনে স্বাধীন করেছি তা–ই নয়, পাকিস্তানকে দুই টুকরা করে দিয়েছি।’

    গত বছর বাংলাদেশে গণ–অভ্যুত্থানের পর ভারতের ক্ষমতাসীন মহলের অনেক কর্তাব্যক্তিও বাংলাদেশকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই দুই দেশের সম্পর্কের কেন্দ্রে রয়েছে ১৯৭১।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এ বছরের ২৬ মার্চ অধ্যাপক ইউনূসের কাছে পাঠানো এক বার্তায় স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ‘একাত্তরের চেতনা এখনো আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের আলোকবর্তিকা।’

    ‘এ জন্য বাংলাদেশিদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত’, এ কথা মোদি লেখেননি বটে, কিন্তু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নানাভাবে তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। তাদের চোখে, বঙ্গবন্ধুকন্যা হাসিনা ও তাঁর সরকার সেই একাত্তরের চেতনার ধারক ও বাহক। তারা এই ‘আত্মতুষ্টি ও কৃতজ্ঞতার চশমা’ থেকে দেখে বলেই ভারতীয়রা কিছুতেই  ভাবতে পারেন না যে তাঁদের ডিঙিয়ে ‘পুরোনো শত্রু’ পাকিস্তান ও একাত্তরের আরেক শত্রু চীন বাংলাদেশে জায়গা করে নেবে।

    বাংলাদেশের পটপরিবর্তনের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনার বদলে বিদেশি ‘ডিপ স্টেট’কে দায়ী করার প্রবণতা থেকে ভারতীয় ভাষ্যকার ও নীতিনির্ধারকেরা একটি সহজ টার্গেট খুঁজে নিয়েছেন, আর সেটি হলো অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ইউনূস।

    ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে যদি একটি বাস্তবসম্মত, সুষম ও সমমর্যাদাপূর্ণ স্তরে উন্নীত করতে হয়, তাহলে ভারতকে এই বিগত ‘মনোভাবনা’ থেকে সরে আসতে হবে। বাংলাদেশকে একটি ‘ক্লায়েন্ট স্টেট’ নয়, সার্বভৌম এক প্রতিবেশী মানতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সঙ্গে অসংখ্য বিবাদের মূল কারণ, ভারত এখনো তার প্রতিবেশীদের সমসার্বভৌম হিসেবে মেনে নিতে দ্বিধাগ্রস্ত।

    এ রকম একজন হলেন সামরিক ভাষ্যকার আশিষ সিং। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে সানডে গার্ডিয়ান পত্রিকায় ‘ভারতের আঞ্চলিক নেতৃত্ব ও বাংলাদেশের অকৃতজ্ঞতা’, শিরোনামে এক রচনায় কোনো ভনিতা ছাড়াই তিনি লিখেছেন, ‘আমরাই বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছি। সে জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের বদলে বাংলাদেশের তরুণেরা ভারতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, তাকে “হেজিমন” হিসেবে সমালোচনা করছেন।’

    আশিষ সিং আরও লিখেছেন, ‘বাংলাদেশ যে একসময় ভারতের শৌর্যের সুফল ভোগ করেছে, সে এখন সেই শৌর্যের প্রতি আপত্তি জানাচ্ছে। তারা এখন বাণিজ্যঘাটতির মতো বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’

    আরেক ভারতীয় বিশ্লেষক কর্নেল অভয় বালকৃষ্ণান পট্টবর্ধন অর্গানাইজার সাময়িকীতে আরও সরাসরি তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়ে লিখেছেন, যারা এখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে, তাদের ভারতের প্রতি বিন্দুমাত্র কৃতজ্ঞতা নেই। অথচ ভারতের বিপুল আর্থিক ও সামরিক সমর্থন ছাড়া সে স্বাধীনতা কিছুতেই অর্জিত হতো না। এমন অকৃতজ্ঞতা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত।

    অন্য কথায়, হাসিনার পতন মানে শুধু ভারতের নিকটতম বন্ধুর পতন নয়, এটি একাত্তরের চেতনারও পতন। একাত্তরের জন্য তাদের এই ‘নস্টালজিয়া’ মোটেই বিস্ময়কর নয়; এই মুক্তিযুদ্ধে তারা তিন হাজারের বেশি সেনাসদস্যকে হারিয়েছে; কিন্তু যা বিস্ময়কর তা হলো, একাত্তরের স্বাধীনতার লড়াইকে ভারতীয়রা মূলত একটি ‘ট্রানজাকশনাল’ বা দেনা-পাওনার সম্পর্ক হিসেবে বিচার করছেন। ‘তোমাদের যুদ্ধে আমরা অনেক ক্ষতি স্বীকার করেছি, এবার তোমরা তার বদলা দাও।’

    অন্য কথায়, বাংলাদেশ একাত্তর পেরিয়ে ২০২৫-এ পৌঁছালেও তার এই প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে ভারত এখনো একাত্তরেই আটকে আছে। যে নবীন প্রজন্মের নেতৃত্বে গণ–অভ্যুত্থান, তাদের কাছে হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নন; বরং তিনি মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের নারকীয় লঙ্ঘনের প্রতীক।

    ভারতীয় ‘প্লে-বুক’ অনুসারে, হাসিনা অসাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদবিরোধী—মুক্তিযুদ্ধের এই দুই প্রধান চেতনা তিনি সংহত করেছিলেন। সে কারণেই তাঁর প্রতি ভারতীয় আগ্রহ ও স্নেহ। ‘ইউনূসের হাতে বাংলাদেশ এখন মৌলবাদীদের আখড়া, সেখানে পাকিস্তানের অনুপ্রবেশ ঘটেছে এই সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে,’ এই অভিযোগ করেছেন একাধিক ভারতীয় কৌশলবিদ।

    এই মনোভাবে যুক্তির চেয়ে আবেগই বেশি এবং সেই আবেগের কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশকে একটি ‘ক্লায়েন্ট’ হিসেবে দেখার পুরোনো প্রবণতা। ভারতীয় লেখক সন্দ্বীপ রায় লিখেছেন, ‘আমরা ধরেই নিয়েছি, একাত্তরের কারণে বাংলাদেশ আমাদের ভালোবাসে, অথচ সে নস্টালজিয়া অনেক আগেই মিইয়ে গেছে।’

    ক্লায়েন্ট স্টেট নয়:

    ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে যদি একটি বাস্তবসম্মত, সুষম ও সমমর্যাদাপূর্ণ স্তরে উন্নীত করতে হয়, তাহলে ভারতকে এই বিগত ‘মনোভাবনা’ থেকে সরে আসতে হবে। বাংলাদেশকে একটি ‘ক্লায়েন্ট স্টেট’ নয়, সার্বভৌম এক প্রতিবেশী মানতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের সঙ্গে অসংখ্য বিবাদের মূল কারণ, ভারত এখনো তার প্রতিবেশীদের সমসার্বভৌম হিসেবে মেনে নিতে দ্বিধাগ্রস্ত।

    এসব কথা শুধু আমরা নই, কোনো কোনো ভারতীয় বিশেষজ্ঞও বলা শুরু করেছেন। জওরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাপিমন জ্যাকব লিখেছেন, ভারতের জন্য সমস্যা হলো, সে তার ক্ষুদ্রতর প্রতিবেশীদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়; কিন্তু এই নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছা শুধু একটি ইল্যুশন বা মায়া। ভারত নিজেকে ‘বড় ভাই’ ভাবলেও সব সময় যে বড় ভাইয়ের মতো আচরণ করেনি, এ কথাও অনেক ভারতীয় স্বীকার করেছেন। নদীর পানির হিস্যা নিয়ে এই দুই দেশের দীর্ঘদিনের পুরোনো বিবাদ এর একটি উদাহরণ।

    ভারতের সাবেক বৈদেশিক সচিব নিরুপমা রায় স্বীকার করেছেন, তিস্তা নদীর হিস্যা না পাওয়ায় বাংলাদেশ অসন্তুষ্ট। তাঁর কথায়, এটা কেবল একটা নদী নয়, এর ভেতর দিয়ে প্রতিবেশীর প্রতি ভারতের আন্তরিকতার প্রকাশও বটে।

    একই কথা অসম বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে। সুপরিচিত নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ সুশান্ত সিং কিছুটা পরিহাসের সুরে মন্তব্য করেছেন, ভারত নিজেকে বাংলাদেশের ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ বলতে অজ্ঞান, অথচ তাদের রপ্তানির ওপর সে একের পর এক অশুল্ক (নন-ট্যারিফ) বাধা তৈরি করেছে। তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘বন্ধুত্ব শুধু আবেগঘন একটা কথা নয়, এটা একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত।

    সূত্র: প্রথম আলো

    Share. Facebook Twitter LinkedIn Email Telegram WhatsApp Copy Link

    সম্পর্কিত সংবাদ

    অর্থনীতি

    ভোলায় গ্যাস ও কম খরচে কোটি টাকার শিল্পবিনিয়োগ

    December 7, 2025
    অর্থনীতি

    বাজার নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণে সুষম নীতি প্রয়োজন

    December 7, 2025
    অর্থনীতি

    মূলধন ফেরত সংকটে বেক্সিমকোর সুকুক, মেয়াদ বৃদ্ধিতে সুপারিশ

    December 7, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সর্বাধিক পঠিত

    সাউথইস্ট ব্যাংকে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত

    আইন আদালত October 7, 2025

    ক্রেতারা ভারত-চীন ছাড়ছে, বাংলাদেশ পাচ্ছে অর্ডার

    অর্থনীতি August 15, 2025

    সব ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপী নয়

    মতামত January 13, 2025

    বরিশালের উন্নয়ন বঞ্চনা: শিল্প, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও পর্যটন খাতে নেই অগ্রগতি

    মতামত April 22, 2025
    সংযুক্ত থাকুন
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • YouTube
    • Telegram

    EMAIL US

    contact@citizensvoicebd.com

    FOLLOW US

    Facebook YouTube X (Twitter) LinkedIn
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement
    • About Us
    • Contact Us
    • Terms & Conditions
    • Comment Policy
    • Advertisement

    WhatsAppp

    01339-517418

    Copyright © 2025 Citizens Voice All rights reserved

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.