সামিট অ্যালায়েন্স (এসএ) পোর্টের ব্যবসা তিন গুণ বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে মুনাফাও। চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি জুলাই–সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠানটি ১৫৪ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৫৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরে ব্যবসা বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। শুধু প্রথম প্রান্তিকেই কোম্পানিটি গত বছরের তুলনায় ৯৯ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যের বিস্তার এতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
গত বৃহস্পতিবার কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সভায় প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়। এতে দেখা যায়, চলতি বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে কোম্পানির মুনাফা হয়েছে সাড়ে ১৫ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে মুনাফা ছিল প্রায় ১২ কোটি টাকা। অর্থাৎ মুনাফা বেড়েছে সাড়ে তিন কোটি টাকা বা প্রায় ২৯ শতাংশ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্যবসা তিন গুণ বাড়লেও মুনাফা সেই হারে বাড়েনি। কারণ পরিচালন ব্যয় ব্যাপকভাবে বেড়েছে। গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে ৫৫ কোটি টাকার ব্যবসায় পরিচালন ব্যয় ছিল সাড়ে ২৪ কোটি টাকা, যা ব্যবসার প্রায় ৪৫ শতাংশ। চলতি বছর একই সময়ে পরিচালন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১১৩ কোটি টাকা, যা ১৫৪ কোটি টাকার ব্যবসার ৭৩ শতাংশ।
এ ছাড়া প্রশাসনিক ব্যয়ও বেড়েছে দ্বিগুণ। গত বছর জুলাই–সেপ্টেম্বরে প্রশাসনিক খরচ ছিল ৫ কোটি টাকা। চলতি বছর একই সময়ে তা বেড়ে হয়েছে ১০ কোটি টাকার বেশি। কোম্পানি–সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খরচ বাড়ায় মুনাফা ততটা বাড়েনি। তবে ব্যবসার পরিমাণ ও মুনাফা দুটোই গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানাচ্ছেন, দেশে আমদানি–রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কনটেইনার ব্যবস্থাপনা সেবার চাহিদা বাড়ছে। চট্টগ্রাম বন্দরকে কেন্দ্র করে এই খাতের বাজার বড় হচ্ছে। দেশে বেসরকারি খাতে ১৯টি ডিপো থাকলেও এর মধ্যে ছয়টি ডিপোই করছে সিংহভাগ ব্যবসা।
কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে এ ১৯টি ডিপো ম্যানেজ করেছে ৮ লাখ ৩০ হাজার একক কনটেইনার। গত বছরের একই সময়ে সংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৮ হাজার। অর্থাৎ এ খাতে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৭ শতাংশ। এখানে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের অবস্থান তৃতীয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রথম ৯ মাসে ৯২ হাজার ৬৭০ একক কনটেইনার পরিচালনা করেছে, যার বাজার হিস্যা ১১ শতাংশ।
সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট ২০০৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। বর্তমানে এটি ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানি। গত অক্টোবর শেষে কোম্পানির ৫৯ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে। বাকি ৪১ শতাংশের মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণির হাতে প্রায় ২৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে সাড়ে ১১ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের হাতে ছিল সাড়ে ৩ শতাংশ শেয়ার। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৪৪ টাকা ৬০ পয়সা।

