দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহজুড়ে সূচক ও লেনদেনের প্রবণতা ছিল স্পষ্টভাবে নিচের দিকে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক হালনাগাদ অনুযায়ী সূচকের পাশাপাশি দৈনিক গড় লেনদেনও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। বাজারের সব খাতেই এসেছে নেতিবাচক রিটার্ন।
গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২ দশমিক ৮২ শতাংশ কমেছে। আগের সপ্তাহে সূচকটি ছিল ৫ হাজার ২৮ পয়েন্ট। সপ্তাহ শেষে তা ১৪১ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৮৭ পয়েন্টে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস–৩০ কমেছে ৪২ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহের ১ হাজার ৯৩৪ পয়েন্ট থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৯২ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৩২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫৭ পয়েন্ট থেকে নেমে এসেছে ১ হাজার ২৫ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৮৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডে লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ৩২৫টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৩টির। লেনদেন হয়নি ২৯টির। সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে ইসলামী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ওয়ালটন হাই-টেক ও পদ্মা অয়েল।
ডিএসইর পাঁচ কার্যদিবসে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৪১১ কোটি ৪৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৫২৫ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ২১ দশমিক ৬৪ শতাংশ। বাজার বিশ্লেষকদের ভাষায় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আর্থিক খাত পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া ঘিরে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব সতর্ক হয়ে উঠেছে। এর প্রভাব পড়েছে লেনদেন ও সূচকে।
খাতভিত্তিক লেনদেনে গত সপ্তাহে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল বস্ত্র খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ এসেছে এই খাত থেকে। ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ লেনদেন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। ওষুধ ও রসায়ন খাত ১১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ লেনদেনে তৃতীয় অবস্থানে ছিল। খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত ছিল চতুর্থ অবস্থানে ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ লেনদেন নিয়ে। আর পঞ্চম স্থানে ছিল জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ লেনদেনে।
সব খাতেই রিটার্ন এসেছে নেতিবাচক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন দেখা গেছে সেবা ও আবাসন খাতে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে নেতিবাচক রিটার্ন ৭ শতাংশ। জীবন বীমায় ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ, কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) ছিল একই চিত্র। সিএএসপিআই সূচক ২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ কমে আগের সপ্তাহের ১৪ হাজার ৩৭ পয়েন্ট থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭৪৭ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচক ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৬৪২ পয়েন্ট থেকে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৪৭৩ পয়েন্টে। সিএসইতে গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ৫৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকার, যা আগের সপ্তাহের ১১০ কোটি ৯৩ লাখ টাকার তুলনায় প্রায় অর্ধেক। সেখানে লেনদেন হওয়া ২৮৬টির মধ্যে দর বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ২০০টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির।

