রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে বৃষ্টি ও উজানের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে জেলার প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। হ্রদের পানি নিয়ন্ত্রণ করতে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট এক ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, পানি বৃদ্ধির ফলে রাঙামাটি শহর, লংগদু, বাঘাইছড়ি, বরকল এবং বিলাইছড়ির নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা দৈনন্দিন জীবনে চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটি শহরের কুমড়াটিলা, লুম্বিনী, আসামবস্তি, নোয়াপাড়া, মুসলিম পাড়া, ব্রাহ্মণটিলা ও অন্যান্য এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি ঢুকে পড়েছে আবাসিক বাড়িতে।
নোয়াপাড়ার বাসিন্দা ও রাঙামাটি সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. মহিউদ্দিন বলেন, “আমাদের এলাকায় কয়েক দিন ধরে পানি উঠেছে। সড়ক দিয়ে চলাচল করতেও মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। এলাকায় একটি শ্মশান রয়েছে, সেখানে মৃতদেহ নেয়ার সময়ও মানুষ সমস্যায় পড়ছে।”
একই এলাকার রাবেয়া আক্তার বলেন, “সড়ক ডুবে থাকার কারণে কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তি হচ্ছে। প্রতিদিন ভেজা কাপড় নিয়ে অফিসে পৌঁছাতে হচ্ছে।”
নোয়াদাম মুসলিম পাড়ার মো. ইকবাল হোসেন জানান, “আমার বাড়ি দুই মাস ধরে পানিতে ডুবে আছে। এখন খাটের ওপরেই রান্না, খাওয়া ও ঘুম সব করতে হচ্ছে। নোয়াপাড়া ও ব্রাহ্মণটিলা এলাকায় প্রায় আড়াই শত পরিবারের একই অবস্থা।”
বাঘাইছড়ি উপজেলার ৩৭ নম্বর আমতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান বলেন, “কাপ্তাই হ্রদের পানি বাড়ার কারণে আমাদের ইউনিয়নের অবস্থা খুব খারাপ। গতকাল থেকে ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড পুরো ডুবে গেছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু অংশও পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনটি ওয়ার্ডে অন্তত তিন শত পরিবারের মানুষ পানিবন্দী।”
কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, “হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গতকাল দুপুরে কাপ্তাই বাঁধের পানি ৬ ইঞ্চি করে ছাড়া হয়। পরে পানি বৃদ্ধির কারণে বাঁধ এক ফুট করে খোলা হয়েছে। প্রতি সেকেন্ডে ১৮ হাজার কিউসেক পানি কাপ্তাই লেক থেকে কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন করা হচ্ছে। আজ সকাল ৯টায় হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮.৮০ ফুট এমএসএল (মিনস সি লেভেল) ছিল।”

