রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন ফুটওভার ব্রিজটি এখন হকারদের দখলে। পথচারীদের নিরাপদ চলাচলের জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের নকশায় তৈরি চতুর্মুখী এই ব্রিজটি ২০২৩ সালের অক্টোবরে চালু করা হয়। তবে বর্তমানে ব্রিজটির উপর বসেছে ৭১টি দোকান, সিঁড়িগুলো দখল করেছে ভিক্ষুক ও ছিন্নমূল মানুষ, আর সিঁড়ির মুখেও হকাররা দোকান বসিয়েছেন। ফলে নিরাপদ চলাচলের পরিবর্তে পথচারীরা ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপারে বাধ্য হচ্ছেন, যা দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে।
১৩২ ফুট দীর্ঘ ও প্রায় ১৮ ফুট প্রশস্ত এই ব্রিজে রয়েছে ছয়টি পকেট এবং নগরবাসীর সুবিধার্থে যুক্ত করা হয় চলন্ত সিঁড়ি। কিন্তু সরজমিনে দেখা গেছে, একটি সিঁড়ি বন্ধ এবং দোকানে ভরা ব্রিজটি কার্যত বাজারে পরিণত হয়েছে। গার্মেন্টস, কসমেটিকস, ব্যাগ, খেলনা, খাবারসহ নানা পণ্যের দোকানের পাশাপাশি বসানো হয়েছে বক্সিং মেশিনও। একই চিত্র দেখা যাচ্ছে মহাখালী, বাড্ডা, নতুন বাজার, নর্দ্দা, বাংলামোটরসহ রাজধানীর বিভিন্ন ফুটওভার ব্রিজে।
পথচারীদের অভিযোগ, সরকারি সংস্থাগুলোর শিথিল নজরদারি ও আইন প্রয়োগে ব্যর্থতার কারণেই ফুটপাত ও ফুটওভার ব্রিজ হকারদের দখলে।
উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, “ফুটপাত ও ওভারব্রিজ সব হকারদের দখলে। স্বাভাবিক চলাচলের পথ নেই।” অন্যদিকে সাজেদুর রহমানের মতে, “যোগাযোগ খাতের বিশৃঙ্খলা ফুটওভার ব্রিজ দখলের মধ্য দিয়েও প্রতিফলিত।”

পথচারী নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ২০২১ সালে ‘পথচারী নিরাপত্তা খসড়া প্রবিধানমালা’ প্রণয়ন করলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যস্ত এলাকায় নিরাপদ চলাচলের জন্য ফুটপাত ও ফুটওভার ব্রিজ দখলমুক্ত রাখা জরুরি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ বলেন, “মানুষের চলাচলের পথে অবৈধ স্থাপনা থাকলে তা নাগরিক ভোগান্তি বাড়ায়। এগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করা উচিত।”
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, সিটি করপোরেশন নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে, তবে অভিযান শেষে জায়গাগুলো আবার দখল হয়ে যাচ্ছে।