টানা ৪১ ঘণ্টা ভোট গণনার পর অবশেষে ঘোষণা হলো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফলাফল। ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে জয়ী হয়েছেন আব্দুর রশিদ জিতু। তবে ফলাফল ঘোষণার আগেই তাকে ঘিরে ছিল নানা আলোচনা ও বিতর্ক।
একসময় তিনি ছিলেন ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী। কিন্তু ২০২৪ সালের ১ জুলাই তিনি যোগ দেন কোটা বিরোধী আন্দোলনে। ওই মাসের ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং সেদিন রাতেই দল থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকেই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে নেতৃত্ব দেন। দ্রুত আন্দোলনের জনপ্রিয় মুখ হয়ে ওঠেন তিনি।
পরে আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে ভিন্ন পথে হেঁটে জিতু ও কয়েকজন মিলে গঠন করেন ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’। এই সংগঠনকে ঘিরেই তিনি ক্যাম্পাসে বড় একটি অনুসারী গোষ্ঠী তৈরি করতে সক্ষম হন।
রাজনীতিতে তার যাত্রা যতটা আলোচিত, সমালোচনাও ততটাই। ছাত্রলীগের সাবেক কর্মীদের নিয়ে প্রচারণা, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের আশ্বাস দিয়ে পরে বাদ দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত এবং শিবিরের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার অভিযোগ—এসব নিয়ে তাকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়েছে। তবে তিনি এসব অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছেন।
আব্দুর রশিদ জিতুর শিকড় শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে। কোদালপুর হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং সরকারি শামসুর রহমান কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর তিনি ভর্তি হন তেজগাঁও সরকারি কলেজে। দ্বিতীয়বার চেষ্টা করে সুযোগ পান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তিনি সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। বাঁধনের আলবেরুনি হল শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি।
শুধু রাজনীতি নয়, সাম্প্রতিক সময়ে মানবিক উদ্যোগেও তিনি আলোচনায় এসেছেন। বন্যাদুর্গতদের সহায়তা, শহীদ ও আহতদের পরিবারকে সহযোগিতা এবং শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যা সমাধানে তার সক্রিয় ভূমিকা শিক্ষার্থীদের কাছে তাকে আরও গ্রহণযোগ্য করেছে।