দেশের নিউরো রোগীদের চিকিৎসা সুবিধা আরও বাড়ছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ৫০০ শয্যার নতুন ভবন চালুর প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। এটি চালু হলে হাসপাতালটির মোট শয্যা সংখ্যা দাঁড়াবে এক হাজারে, যা দেশের বৃহত্তম বিশেষায়িত স্নায়ুরোগ চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোর একটি হবে।
১৫ তলা নতুন ভবনটি মূল হাসপাতালের পাশেই নির্মিত। যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম জানান, নতুন ভবন উদ্বোধনের সব প্রস্তুতি শেষ। অধিকাংশ যন্ত্রপাতি স্থাপন শেষ হয়েছে, কেবল সাজসজ্জার কিছু কাজ চলছে। তিনি বলেন, “নতুন ভবন চালু হলে অনেক বেশি রোগীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। শয্যা সংকটের কারণে প্রতিদিন বহু রোগীকে ফিরিয়ে দিতে হয়।” উদ্বোধনের সঠিক তারিখ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ঠিক করবে।
নতুন ভবনের তিনটি তলা বেজমেন্ট, যেখানে পার্কিং ও সার্ভিস সেকশন থাকবে। উপরের ১২ তলায় ওয়ার্ড, অপারেশন থিয়েটার এবং ডায়াগনস্টিক ইউনিট থাকবে। নতুন ৮৫২টি পদের জন্য জনবল নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা, যার প্রক্রিয়া চলমান।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এখানে সবচেয়ে বেশি চিকিৎসা নিতে আসেন স্ট্রোকের রোগীরা। এরপর রয়েছে মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে আঘাত পাওয়া দুর্ঘটনার রোগী। পাশাপাশি পার্কিনসন্স, ডিমেনশিয়া, জিবিএস, মৃগী, হাইড্রোকেফালাসসহ নানা নিউরোলজিক্যাল রোগে আক্রান্ত শিশু থেকে বৃদ্ধরা চিকিৎসা পান এখানে।
২০১২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৩০০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই হাসপাতাল। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে পরে ২০০ শয্যা যোগ করা হয়, তবে তাতেও সংকট কাটেনি।
২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ৫০৬ কোটি টাকার প্রকল্পে নতুন ৫০০ শয্যা বাড়ানোর অনুমোদন দেয়। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিকে ট্রেডার্সকে ভবন নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে জিকে শামীম গ্রেপ্তার হলে কাজ থেমে যায়, তখন কেবল পাইলিং শেষ হয়েছিল। প্রায় ২১ মাস পর ২০২১ সালে ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন নতুন টেন্ডার পেয়ে কাজ শেষ করে।
সরকারি হাসপাতাল হলেও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস তুলনামূলকভাবে পরিচ্ছন্ন ও সেবামুখী। এখানে যন্ত্রপাতি সচল ও সেবা পেতে দেরি হয় না। তবে শয্যা সংকটের কারণে রোগীদের ভর্তি করাতে সমস্যা হতো। নতুন ভবন চালু হলে সেই চাপ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত টানা ছয় বছর “স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কার” পেয়ে দেশসেরা বিশেষায়িত হাসপাতালের মর্যাদা ধরে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।

