বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) “নিরাপদ খাদ্য (রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স) প্রবিধানমালা, ২০২৫” প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। খসড়া ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে এটি কার্যকর হলে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) আইনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা উঠেছে।
বিএসটিআইর দাবি, আইনি কাঠামো ছাড়া খাদ্যপণ্যের সনদ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ। তবে বিএফএসএ বলছে, যেসব খাদ্যপণ্যের নিরাপদতা দেখার দায়িত্ব বর্তমানে কারও হাতে নেই, সেগুলো তারা তদারকি করবে।
খসড়া প্রবিধানের মূল ধারা-
- প্রবিধি ৪(১): খাদ্য উৎপাদন, আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুত, সরবরাহ ও বিক্রয়ের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- প্রবিধি ৫(১): লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান খাদ্য ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না।
- প্রবিধি ৭(১): বিএসটিআইয়ের মতো খাদ্যপণ্য উৎপাদন ও আমদানির ক্ষেত্রে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক।
- প্রবিধি ৭(৪): পরীক্ষায় সন্তুষ্ট হলে কর্তৃপক্ষ নম্বরযুক্ত নবায়নযোগ্য উৎপাদন বা আমদানি লাইসেন্স দেবে।
২০১৮ সালের বিএসটিআই আইন ও ২০২২ সালের প্রবিধানমালা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি বাধ্যতামূলক মানসনদের আওতায় থাকা ১০৯টি খাদ্যপণ্যের সার্টিফিকেশন মার্কস (সিএম) লাইসেন্স দিয়ে আসছে। তবে দেশে ছয় শতাধিক খাদ্যপণ্য থাকলেও অনেক পণ্যই এখনো কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার বাইরে।
দুই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান
বিএফএসএ চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, “বিএসটিআই সিএম লাইসেন্স দিয়ে থাকে। আমরা খাদ্য নিরাপদ কি না, সেটি দেখব। আইন অনুযায়ী উৎপাদকদের শনাক্ত করতে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করছি। এখানে কোনো সাংঘর্ষিকতা হবে না।”
অন্যদিকে বিএসটিআইয়ের পরিচালক (সিএম) সাইফুল ইসলাম জানান, “২০১৮ সালের আইনের ৬ ধারা অনুযায়ী বিএসটিআই খাদ্যপণ্যের লাইসেন্স ও তদারকি করছে। কিন্তু বিএফএসএ যদি নিজেরাই লাইসেন্স দিতে চায়, তাহলে কোনো কাজই হবে না। আইনি কাঠামো ছাড়া এটি করা হলে তা আমাদের আইন ও বিধিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।”
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে ১৭টির মতো প্রবিধানমালা তৈরি করেছে, তবে সেগুলো কাগজেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, “বৃহত্তর স্বার্থে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছে।”

