দেশের সর্ব উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে টানা দুই দিন ধরে ঘন কুয়াশা পড়ছে। শুক্রবার রাতজুড়ে বৃষ্টির মতো ঝরেছে কুয়াশা, আর শনিবার ভোরে ঘন সাদা পর্দায় ঢেকে যায় পুরো জেলা। সকাল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্বও বাড়তে থাকে, যেন প্রকৃতি জানিয়ে দিচ্ছে—দুয়ারে কড়া নাড়ছে শীত।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৪ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরো জেলা তখন সাদা কুয়াশায় মোড়ানো। মাঠ-ঘাট, গ্রামাঞ্চল থেকে শুরু করে শহরের রাস্তাঘাট—সবকিছুই যেন দৃষ্টিসীমার বাইরে। কয়েক হাত দূর পর্যন্তও দেখা যাচ্ছিল না, ফলে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হয়। ঘাসের ডগা, গাছের পাতা ও ধানের শীষে ঝুলে থাকা শিশিরবিন্দু জানিয়ে দিচ্ছিল—শীতের আগমন একেবারে দ্বারপ্রান্তে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলার গলেহাহাট এলাকার বাসিন্দা মশিউর রহমান বলেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি চারপাশ ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে। কুয়াশা এমনভাবে ঝরছে, যেন বৃষ্টি হচ্ছে। কয়েক হাত দূরেও কিছু দেখা যাচ্ছিল না।”
চাকলাহাট এলাকার অটোচালক জমির উদ্দীন জানান, “ভোরে অটো নিয়ে বের হয়েছি, কিন্তু রাস্তা দেখা যাচ্ছিল না। হেডলাইট জ্বালিয়ে খুব সাবধানে গাড়ি চালাতে হয়েছে।”
টুনিরহাট এলাকার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “দুই দিন ধরে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা পড়ছে। গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত কুয়াশায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।”
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পর্যবেক্ষক) জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, শনিবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শুক্রবার একই সময় ছিল ২৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বর্তমানে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ৮ থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে।
তিনি আরো বলেন, অক্টোবরের শেষ দিকে কুয়াশা ও শীতের মাত্রা আরও বাড়তে পারে। ধীরে ধীরে উত্তর দিক থেকে শীতল বাতাস প্রবাহ শুরু হলে নভেম্বর নাগাদ শীতের আমেজ পুরোপুরি অনুভূত হবে।