প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, “চলুন, আমরা এই নির্বাচনে আইনের শাসন কাকে বলে তা প্রদর্শন করি, যা হওয়ার হবে।”
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালে চট্টগ্রাম নগরে আয়োজিত কর্মশালায় সিইসি এই মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য ছিল ‘নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে চ্যালেঞ্জ নিরূপণ ও উত্তরণ’। কর্মশালাটি নগরের আসকার দিঘি এলাকার আঞ্চলিক লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণকেন্দ্র মিলনায়তনে সিবিটিইপি প্রকল্পের (নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আইসিটি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি) আয়োজন ছিল।
সিইসি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নির্বাচনের দিন মনে রাখবেন, আপনি হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। আইনগতভাবে সর্বময় ক্ষমতা আপনাকে দেওয়া আছে। যদি গোলমাল হয়, ভোটকেন্দ্র বন্ধ করুন। প্রয়োজন হলে পুরো সংসদীয় আসন বাতিল করতে পারেন।”
তিনি আরো যোগ করে বলেন, “আমরা সহজে ছাড়ব না। আপনারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করলে নির্বাচন কমিশন আপনার পাশে থাকবে।”
তিনি বলেন, “সবাই মিলে একটি সুন্দর নির্বাচন করতে হবে। ভোট গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়িত করা হচ্ছে। ক্ষমতা থাকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি তা ব্যবহারও জরুরি। আইন ও বিধি অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করলে নির্বাচন কমিশন পূর্ণ সহায়তা প্রদান করবে।”
চ্যালেঞ্জগুলো উল্লেখ করে সিইসি বলেন, “নির্বাচনে প্রশাসনিক, নিরাপত্তা, আইনগত ও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ থাকে। এর মধ্যে নিরাপত্তা বা সিকিউরিটি চ্যালেঞ্জ সবচেয়ে বড়। এটি মোকাবিলা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”
জাতীয় নির্বাচনকে একক দায়িত্ব হিসেবে দেখার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জাতীয় নির্বাচন জাতীয়ভাবে করতে হবে। এটি শুধু নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব নয়, প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তাও প্রয়োজন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে সচিবালয় থেকে উপজেলা পর্যায়ের ইমার্জেন্সি সেল পর্যন্ত সমন্বয় থাকতে হবে।”
শিক্ষক প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের জন্য সিইসি বলেন, “অধিকাংশ শিক্ষক ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে অভিজ্ঞ নন। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পুলিশও অতীতে এই ব্যবস্থায় অভ্যস্ত ছিল না।”
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার জিয়াউদ্দীন, পুলিশ চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব, ইউএনডিপি বাংলাদেশ সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক এবং সভাপতিত্ব করেন জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ।