ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ২২ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপ থেকে ধোঁয়া উড়ছে। রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টার পরও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের ধ্বংসস্তূপে পানি ছিটাতে দেখা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম জানান, “আগুন পুরোপুরি নির্বাপিত হয়নি, তাই ধোঁয়া উঠছে। আগুন যেন নতুন করে জ্বলতে না পারে, সেজন্য আমাদের ২২টি ইউনিট এখনও কাজ করছে।”
শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের পাশে কার্গো ভিলেজে আগুন লাগে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট, সঙ্গে যুক্ত ছিল নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন, পুলিশ, আনসার ও বিজিবির সদস্যরা। আগুন লাগার পর বিমানবন্দরে সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।
বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় আটটি ফ্লাইট চট্টগ্রামে, তিনটি সিলেটে এবং ভারত থেকে আসা দুটি ফ্লাইট কলকাতায় অবতরণ করে। রাত ৯টার পর আকাশপথে স্বাভাবিকতা ফিরলেও প্রায় ছয় ঘণ্টা বিলম্বে ২৩টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অন্য বিমানবন্দরে ঘুরিয়ে নিতে হয়, ফলে শত শত যাত্রী ভোগান্তিতে পড়েন।
বিমানবন্দরের সূত্রে জানা গেছে, আগুন লেগেছিল আমদানির কার্গো কমপ্লেক্স ভবনে, যেখানে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য আমদানি করা কাপড়সহ দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। এতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। প্রাথমিকভাবে ভবনের সব মালামাল পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস, সিভিল অ্যাভিয়েশন ও আনসারের ৩৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৫ জন আনসার সদস্য। তাদের সিএমএইচ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সকাল থেকে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা কার্গো ভিলেজ এলাকায় ভিড় করেন। তবে নিরাপত্তার কারণে কেউকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট কর্মী রেজাউল করিম রনি বলেন, “শনিবার দিনেও রপ্তানির কাজ চলছিল। বৃহস্পতিবার টাকাও জমা দিয়েছিলাম, কিন্তু রবিবার মাল তোলার আগেই সব পুড়ে গেছে। এতে তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতেও প্রভাব পড়বে।”
তিনি বলেন, “এমন ছুটির দিনে আগুন লাগা স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। ক্ষতির পরিমাণ হাজার কোটি টাকার বেশি হতে পারে।”
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, “ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার ও নিরাপত্তা মূল্যায়নের পরই বলা যাবে, কবে থেকে কার্গো ভিলেজের কার্যক্রম পুনরায় চালু করা সম্ভব হবে।”