অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের পোর্টালে এখনো জুয়া ও অনিরাপদ কনটেন্টের বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন চলতে থাকলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক সভায় ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ কথাগুলো বলেন। তিনি জানান, প্রায় সব গণমাধ্যমের পোর্টালে অনিরাপদ কনটেন্ট ও জুয়ার বিজ্ঞাপন দেখা যায় এবং এখান থেকেই তারা অর্থ উপার্জন করে।
তৈয়্যব বলেন, “গতকাল পর্যন্ত আমরা যে তালিকা পেয়েছি, তাতে যুগান্তর, ভোরের কাগজ, ইনকিলাব, মানবকণ্ঠ, জাগো নিউজ, বাংলাদেশ ২৪ অনলাইন, আওয়ার নিউজ ২৪—এই ধরনের অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রকাশ করছে। আমরা যেকোনো মুহূর্তে এগুলো বন্ধ করে দেব। পাবলিকলি আর নোটিশ দেওয়া হবে না।”
সভায় তিনি অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, সরকার ওয়েব ক্রলিংয়ের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখেছে, কোনো কোনো এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্টের সঙ্গে জুয়ার সম্পর্ক আছে। মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর এবং ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক শনাক্ত করা হয়েছে। এসব বন্ধ করার জন্য একটি এসওপি তৈরি করা হচ্ছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “যখনই কোনো নম্বর ব্লক করা হয়, তখন আরও নতুন বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল, হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নামও বদলে দেয়। নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস ও ওয়েবলিংক বন্ধ করার পরও এই চক্র আবার অ্যাপ তৈরি করে।”
তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেন। বলেন, “এই গ্রুপগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধি প্লেয়ার হিসেবে যুক্ত করলে কারা এগুলো চালায়, তা ধরা যাবে এবং কার্যক্রম নজরে রাখা সম্ভব হবে। দেশে জুয়া ও পর্নোগ্রাফি বন্ধে সকল পক্ষের সক্রিয় ভূমিকা জরুরি।”
সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), এমএফএস এবং মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।